তাপমাত্রা আরও কমতে পারে, বাড়তে পারে কুয়াশা
- আপডেট সময় : ০৬:৩৮:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪২৫ বার পড়া হয়েছে
রাতের তাপমাত্রা আজ সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সামান্য কমতে পারে। আর কুয়াশা পড়বে মধ্যরাত থেকে। এছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সেই সঙ্গে দেশের অন্যান্য এলাকায়ও এ সময়ে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। চলতি সপ্তাহের শেষ দিক থেকে সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। পাশাপাশি বাড়তে পারে ঘন কুয়াশা। তবে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে, উত্তরের জেলা দিনাজপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারীতেও বেড়েছে শীতের তীব্রতা ও কুয়াশা। শীতের কারণে ব্যাহত স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কনকনে ঠান্ডায় মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। অনেকে ছুটছেন গরম কাপড়ের দোকানে। দেখা দিয়েছে ঠান্ডাজনিত নানা রোগবালাই।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় দিনাজপুরে তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ৯৯ শতাংশ। জেলায় চলতি শীত মৌসুমে সর্বনিম্ন ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া এ মাসে জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
দিনাজপুর-পার্বতীপুর সড়কে মাইক্রোবাস চালক লাল মিয়া বলেন, সন্ধ্যা থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে সড়ক-মহাসড়ক। ১০ থেকে ১৫ ফিট দূরত্বের মধ্যে বোঝা যায় না সামনে থেকে গাড়ি আসছে কি না। এজন্য হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরে ধীরে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। না হলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। সেই সঙ্গে দুদিন ধরে বয়ে যাওয়া হিমেল হাওয়ায় শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন উত্তরের এ জেলার মানুষ। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) তাপমাত্রার পারদ নেমেছে ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রোববার (১০ ডিসেম্বর) যা ছিল ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ঘন কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। সড়কে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে। তবে শীত উপেক্ষা করে সকালে চা শ্রমিক, পাথর শ্রমিকসহ বিভিন্ন নিম্ন আয়ের মানুষদের জীবিকার তাগিদে কাজে যেতে দেখা গেছে।
কুড়িগ্রামে শীত ও ঘন কুয়াশার দাপটে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা থেকে পরেরদিন সকাল পর্যন্ত বৃষ্টির মতো পড়ছে ঘন কুয়াশা। যার ফলে দুর্ভোগে পড়েছে এখানকার শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষগুলো। এদিকে ঘনকুয়াশা উপেক্ষা করে দিনের বেলাতেও হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলতে দেখা গেছে। এদিকে ব্যাহত হচ্ছে নৌপথে চলাচল।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে কুড়িগ্রামের কৃষি আবহাওয়া অফিস জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত দুই দিন থেকে উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় জবুথুবু হয়ে পড়েছে গোটা জনপদ। কনকনে ঠান্ডায় শীতবস্ত্রের অভাবে শীত কষ্টে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের মানুষগুলো।
আজ সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ১২ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত সেখানকার জনজীবন।
আবহাওয়াবিদদের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে শীত অনুভূত হয়। গতকাল তেঁতুলিয়া ছাড়াও দেশের বেশকিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা কম ছিল। এর মধ্যে ১৪ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মাঝে তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুর, নওগাঁর বদলগাছী, নীলফামারীর, সৈয়দপুর ও বগুড়ায়। দেশের আরও কিছু অঞ্চলের তাপমাত্রা ১৬ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল। আর গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে এসেছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
অন্যদিকে, গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফে, ৩০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ সোমবারের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সময়ে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদী অববাহিকায় মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্য এলাকায় হালকা থেকে মাঝারী ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এই সময়ে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। অর্থাৎ শীত বেশি অনুভূত হতে পারে।
এদিকে বর্ধিত পাঁচ দিনের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই সময়ে রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। অর্থাৎ এই সপ্তাহের শেষ দিক থেকে রাতে বেশি শীত অনুভূত হতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ৩০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হার বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষেরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়েছে।