ঢাকা ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের বন্দর আব্বাসের গ্যাস স্থাপনা, ইস্পাহানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং তেহরানের অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে: ইসরায়েলি মিডিয়া :::: ইরানের রাজধানী তেহরান, হরমোজগান, কেরমানশাহ, পশ্চিম আজারবাইজান, লোরেস্তান ও খুজেস্তানসহ ইরানের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে নতুন করে তীব্র হামলা চালিয়েছে ইসরাইল :::: ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে চীনের শীর্ষ কূটনীতিক বলেছেন, কূটনৈতিক উপায় 'এখনো শেষ হয়ে যায়নি' :::: ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে আলোচনা করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারা :::: ইসরাইলি হামলায় ইরানের এসফাহান পরমাণু স্থাপনার চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে: আইএইএ :::: ইরানে ইসরায়েলি হামলাকে 'অসহনীয়' বলল জাপান :::: ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সঙ্গে কথা বললেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ :::: ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন কাতারের শেখ তামিম :::: ইরানের সামরিক বাহিনী বলছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলের ১০টি বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে :::: ইরানের গ্যাসক্ষেত্রে বেসামরিক অবকাঠামোতে ইসরাইলি হামলা ::: তেহরানে অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক হামলায় নিহত ৪০

ইরানের ‘অত্যাচারী শাসনের’ নিন্দা করলেন কারাবন্দি নার্গিস

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:১৯:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৫২৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইরানের কারাবন্দি মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদীর পক্ষে তাঁর দুই যমজ সন্তান কিয়ানা ও আলি নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। গতকাল রোববার নরওয়ের অসলোতে অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কারাবন্দি মায়ের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তাঁরা।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, লিখিত বক্তব্যে নার্গিস মোহাম্মদী ইরানের অত্যাচারী ও নারীবিদ্বেষী সরকারের কঠোর নিন্দা করেছেন।

ইরানের নিপীড়িত নারীদের মানবাধিকার ও স্বাধীনতার জন্য কয়েক দশক ধরে লড়াই–সংগ্রাম করছেন ৫১ বছর বয়সী নার্গিস মোহাম্মদী। তাঁর এ সংগ্রামের স্বীকৃতি দিয়ে গত ৬ অক্টোবর এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়। তখন তিনি কারাগারে ছিলেন। ২০২১ সাল থেকে তেহরানের এভিন কারাগারে বন্দী রয়েছেন তিনি।

২০১৫ সাল থেকেই ফ্রান্সে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন নার্গিসের দুই জমজ ছেলে–মেয়ে ১৭ বছর বয়সী আলি ও কিয়ানা। ইরানের কারাগার থেকেই দুই মেয়ের কাছে লিখিত বক্তব্য পাঠান নার্গিস। মায়ের সেই বক্তব্য তাঁরা নোবেল পুরস্কারের মঞ্চে পাঠ করে শোনান।

লিখিত বক্তব্যে নার্গিস বলেছেন, ‘আমি একজন মধ্যপ্রাচ্যের নারী এবং এমন একটি অঞ্চল থেকে এসেছি যেটির সমৃদ্ধ সভ্যতা থাকা সত্ত্বেও এখন যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থার আগুনের মধ্যে আটকে আছে। তবে ইরানী জনগণ তাদের ঐকান্তিকতার মাধ্যমে সকল প্রতিবন্ধকতা ও স্বৈরাচারকে দূর করবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

নার্গিস মোহাম্মদী আরও বলেন, ইরান সরকার জোর করে বাধ্যতামূলক হিজাব আইন চাপিয়ে দিয়েছে। এটি কোনো ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা বা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নয়; বরং এটি সমাজে কর্তৃত্ব বজায় রাখার এবং বশ্যতা বজায় রাখার একটি মাধ্যম।

সরকারের সমালোচনা করে নার্গিস বলেন, ইরানে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা নেই। সরকার দমনপীড়ন, অপপ্রচার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেকে জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর নারী অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে নার্গিস বহুবার গ্রেপ্তার হয়েছেন। অনেকবার তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাবন্দি হয়েছেন। অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে এখনও তিনি কারাবন্দি রয়েছেন। তাঁর যমজ সন্তান প্রায় নয় বছর ধরে তাদের মাকে দেখেনি।

গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে কিয়ানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সম্ভবত আমার মাকে আর দেখতে পাব না। কিংবা আগামী ৩০–৪০ বছরের মধ্যে দেখা হতে পারে। আমি ঠিক জানি না। আমি এ ব্যাপারে খুবই হতাশ।’

গত দুই দশকের বেশিরভাগ সময়ই কারাবন্দি জীবন কাটিয়েছেন নার্গিস মোহাম্মদী। ইরান সরকার তাঁকে ১৩বার গ্রেপ্তার করেছে, পাঁচবার তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। সব মিলিয়ে ৩১ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন তিনি। শরিয়া আইনে ১৫৪টি বেত্রাঘাতের মতো শাস্তিও পেতে হয়েছে তাঁকে। এখনো বন্দি অবস্থা থেকে তাঁর মুক্তি মেলেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইরানের ‘অত্যাচারী শাসনের’ নিন্দা করলেন কারাবন্দি নার্গিস

আপডেট সময় : ০৬:১৯:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

ইরানের কারাবন্দি মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদীর পক্ষে তাঁর দুই যমজ সন্তান কিয়ানা ও আলি নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। গতকাল রোববার নরওয়ের অসলোতে অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কারাবন্দি মায়ের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তাঁরা।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, লিখিত বক্তব্যে নার্গিস মোহাম্মদী ইরানের অত্যাচারী ও নারীবিদ্বেষী সরকারের কঠোর নিন্দা করেছেন।

ইরানের নিপীড়িত নারীদের মানবাধিকার ও স্বাধীনতার জন্য কয়েক দশক ধরে লড়াই–সংগ্রাম করছেন ৫১ বছর বয়সী নার্গিস মোহাম্মদী। তাঁর এ সংগ্রামের স্বীকৃতি দিয়ে গত ৬ অক্টোবর এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়। তখন তিনি কারাগারে ছিলেন। ২০২১ সাল থেকে তেহরানের এভিন কারাগারে বন্দী রয়েছেন তিনি।

২০১৫ সাল থেকেই ফ্রান্সে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন নার্গিসের দুই জমজ ছেলে–মেয়ে ১৭ বছর বয়সী আলি ও কিয়ানা। ইরানের কারাগার থেকেই দুই মেয়ের কাছে লিখিত বক্তব্য পাঠান নার্গিস। মায়ের সেই বক্তব্য তাঁরা নোবেল পুরস্কারের মঞ্চে পাঠ করে শোনান।

লিখিত বক্তব্যে নার্গিস বলেছেন, ‘আমি একজন মধ্যপ্রাচ্যের নারী এবং এমন একটি অঞ্চল থেকে এসেছি যেটির সমৃদ্ধ সভ্যতা থাকা সত্ত্বেও এখন যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থার আগুনের মধ্যে আটকে আছে। তবে ইরানী জনগণ তাদের ঐকান্তিকতার মাধ্যমে সকল প্রতিবন্ধকতা ও স্বৈরাচারকে দূর করবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

নার্গিস মোহাম্মদী আরও বলেন, ইরান সরকার জোর করে বাধ্যতামূলক হিজাব আইন চাপিয়ে দিয়েছে। এটি কোনো ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা বা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নয়; বরং এটি সমাজে কর্তৃত্ব বজায় রাখার এবং বশ্যতা বজায় রাখার একটি মাধ্যম।

সরকারের সমালোচনা করে নার্গিস বলেন, ইরানে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা নেই। সরকার দমনপীড়ন, অপপ্রচার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করা ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেকে জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আর নারী অধিকারের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে নার্গিস বহুবার গ্রেপ্তার হয়েছেন। অনেকবার তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাবন্দি হয়েছেন। অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে এখনও তিনি কারাবন্দি রয়েছেন। তাঁর যমজ সন্তান প্রায় নয় বছর ধরে তাদের মাকে দেখেনি।

গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে কিয়ানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সম্ভবত আমার মাকে আর দেখতে পাব না। কিংবা আগামী ৩০–৪০ বছরের মধ্যে দেখা হতে পারে। আমি ঠিক জানি না। আমি এ ব্যাপারে খুবই হতাশ।’

গত দুই দশকের বেশিরভাগ সময়ই কারাবন্দি জীবন কাটিয়েছেন নার্গিস মোহাম্মদী। ইরান সরকার তাঁকে ১৩বার গ্রেপ্তার করেছে, পাঁচবার তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। সব মিলিয়ে ৩১ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন তিনি। শরিয়া আইনে ১৫৪টি বেত্রাঘাতের মতো শাস্তিও পেতে হয়েছে তাঁকে। এখনো বন্দি অবস্থা থেকে তাঁর মুক্তি মেলেনি।