ঢাকা ০৩:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
সংস্কার নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপির কোনো বিরোধ নেই, সংস্কারের পাশাপাশি সঠিক সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতায়ন জরুরি : তারেক রহমান

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় বীর শহীদদের স্মরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৭:১৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪২৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করছে জাতি। আজ শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এর আগে ভোরে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবস উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে জনতার ঢল নামে। বিজয় র‍্যালিতে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল বৃদ্ধি পায়। নানান শ্রেণি-পেশার সব বয়সী মানুষ স্মৃতিসৌধে ছুটে এসেছেন। স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন নানান রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ আবার বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে বিজয় দিবস উদযাপনে মেতেছেন। কারো কারো কণ্ঠে শোনা যাচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দীপ্ত নানান স্লোগান।

ভোরে বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যসহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা শ্রদ্ধা জানান। ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে চলছে শ্রদ্ধা নিবেদন।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। এ সময় দেশ আরও উন্নত হওয়ার প্রত্যাশা জানান স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়া মানুষ।

স্মৃতিসৌধের চারপাশেও রয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। লাল সবুজ পতাকা হাতে ও উত্তরীয় পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকে। শিশুদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ধারণা দিতে অনেকে সপরিবারে স্মৃতিসৌধে ফুল দিচ্ছেন।

মানিকগঞ্জ থেকে সপরিবারে স্মৃতিসৌধে এসেছেন রাসেল মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ যাদের জন্য স্বাধীন হয়েছে তাঁদের শ্রদ্ধা জানাতেই আজ সপরিবারে এখানে এসেছি। আমি চাই, দেশ আরও এগিয়ে যাক সামনের দিকে।’

এদিকে, সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্স এলাকায় নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার কঠোর ব্যবস্থা।

এর আগে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। বেদিতে প্রথমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তখন রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, সরকারের পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফের শ্রদ্ধা জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা।

এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্মৃতিসৌধ।

এ সময় স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসক্লাব, সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এবং সব বয়সী মানুষকে স্মৃতিসৌধের বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা যায়।

এ ছাড়া একে একে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, গণফোরাম, জাসদ, বাম দলসহ নানা রাজনৈতিক দল বীর শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সকালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জানানোর পর সবার জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটক উম্মুক্ত করা হয়। এরপর সৌধপ্রাঙ্গণে নামে গণমানুষের ঢল। দিনটি উপলক্ষ্যে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় বীর শহীদদের স্মরণ

আপডেট সময় : ০৭:১৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করছে জাতি। আজ শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এর আগে ভোরে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবস উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে জনতার ঢল নামে। বিজয় র‍্যালিতে উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল বৃদ্ধি পায়। নানান শ্রেণি-পেশার সব বয়সী মানুষ স্মৃতিসৌধে ছুটে এসেছেন। স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন নানান রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ আবার বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে বিজয় দিবস উদযাপনে মেতেছেন। কারো কারো কণ্ঠে শোনা যাচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দীপ্ত নানান স্লোগান।

ভোরে বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যসহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা শ্রদ্ধা জানান। ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে চলছে শ্রদ্ধা নিবেদন।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। এ সময় দেশ আরও উন্নত হওয়ার প্রত্যাশা জানান স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়া মানুষ।

স্মৃতিসৌধের চারপাশেও রয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। লাল সবুজ পতাকা হাতে ও উত্তরীয় পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকে। শিশুদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ধারণা দিতে অনেকে সপরিবারে স্মৃতিসৌধে ফুল দিচ্ছেন।

মানিকগঞ্জ থেকে সপরিবারে স্মৃতিসৌধে এসেছেন রাসেল মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ যাদের জন্য স্বাধীন হয়েছে তাঁদের শ্রদ্ধা জানাতেই আজ সপরিবারে এখানে এসেছি। আমি চাই, দেশ আরও এগিয়ে যাক সামনের দিকে।’

এদিকে, সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্স এলাকায় নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার কঠোর ব্যবস্থা।

এর আগে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। বেদিতে প্রথমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল তখন রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, সরকারের পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফের শ্রদ্ধা জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা।

এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্মৃতিসৌধ।

এ সময় স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসক্লাব, সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এবং সব বয়সী মানুষকে স্মৃতিসৌধের বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা যায়।

এ ছাড়া একে একে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, গণফোরাম, জাসদ, বাম দলসহ নানা রাজনৈতিক দল বীর শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সকালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জানানোর পর সবার জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটক উম্মুক্ত করা হয়। এরপর সৌধপ্রাঙ্গণে নামে গণমানুষের ঢল। দিনটি উপলক্ষ্যে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।