প্রতীক বরাদ্দের পর আচরণবিধি মানার নির্দেশ
- আপডেট সময় : ০৫:১৫:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪২৬ বার পড়া হয়েছে
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৯৬ জন। আর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন ৩৪৭ জন। প্রতীক নেওয়ার পর থেকেই ভোটের মাঠে পুরোদমে প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা। মিছিল করতে পারবেন, শ্লোগান দিতে পারবেন। তবে সব প্রার্থীকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনী আচরণবিধি মানার নির্দেশনা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
আজ সোমবার প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিন থেকেই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা। আগামী ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত ভোটের প্রচার চালাতে পারবেন তারা। সেই হিসাবে প্রচার-প্রচারণার জন্য এবার ১৮ দিন সময় পাবেন এমপি প্রার্থীরা।
বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করবে। দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদিন সিলেটের হযরত শাহজালাল (র.)-এর মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে প্রচারণার উদ্বোধন করবেন।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ঘোষণাকৃত তফসিল অনুযায়ী গতকাল ১৭ ডিসেম্বর ছিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। দেশের ৬৪ জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগর আসনগুলোর রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী―মনোনয়ন দাখিলের সংখ্যা ছিল মোট ২ হাজার ৭১৬টি, যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল হয়েছিল ৭৩১ জন, আপিল দায়ের হয়েছিল ৫৬০টি এবং সেখান থেকে মঞ্জুর হয়েছিল ২৮৬টি ও নামঞ্জুর হয়েছিল ২৭৪টি। এছাড়া এদিন সারাদেশে মনোনয়ন প্রত্যাহার হয়েছে ৩৪৭টি এবং স্থগিত হয়েছে ৫টি। আর প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে এখন মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৯৬ জন।
মো. জাহাংগীর আলম বলেন, আসন্ন এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে মোট ২৭টি রাজনৈতিক দল। মোট ২৮টি রাজনৈতিক দল থেকে একটি দল, অর্থাৎ গণতন্ত্রী পার্টি বাদ গেছে।
এ ছাড়া নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে জাকের পার্টি। ২১৮ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছে দলটি। গতকাল রোববার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর জাকের পার্টির স্থায়ী কমিটির সদস্য হুমায়ন কবির এ তথ্য জানান।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ (নৌকা) ২৯৮টি আসনে মোট ৩০৩টি, বিরোধীদল জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) ২৮৬টি আসনে ৩০৪টি, জাকের পার্টি (গোলাপ ফুল) ২১৮টি, তৃণমূল বিএনপি (সোনালী আঁশ) ১৫১টি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি (আম) ১৪২টি, বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) ১১৬টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (মশাল) ৯১টি, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (একতারা) ৮২টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি) ৭৪টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফোরাম-বিএনএফ (টেলিভিশন) ৫৫টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম ৪৯টি (নোঙর), বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন-বিটিএফ (ফুলের মালা) ৪৭টি, ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার) ৪৫টি, ইসলামি ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার) ৩৯টি, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট (মোমবাতি) ৩৭টি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) ৩৪টি এবং ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) ৩৩টি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।
এছাড়া গণফ্রন্ট (মাছ) ২৫টি, জাতীয় পার্টি-জেপি (বাইসাইকেল) ২০টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি) ১৮টি, বিকল্পধারা ১৪টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ) ১৪টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল) ১৩টি, গণতন্ত্রী পার্টি (কবুতর) ১২টি, গণফোরাম (উদীয়মান সূর্য) ৯টি, সাম্যবাদী দল (চাকা) ছয়টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ (কুঁড়েঘর) ৬টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল (হাত পাঞ্জা) পাঁচটি ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (হারিকেন) দুটি করে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। আর দলীয় মতবিরোধের কারণে গণতন্ত্রী পার্টির সব প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করে ইসি। এছাড়া জাকের পার্টি নির্বাচন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
এদিকে, বিএনপিসহ (ধানের শীষ) নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি (ছাতা), ইসলামী আন্দোলন (হাতপাখা), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি (কাস্তে), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি (তারা), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মই), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি (গরুর গাড়ি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (খেজুরগাছ), বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ (গাভী), বাংলদেশ খেলাফত মজলিস (রিক্সা), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (কোদাল), খিলাফত মজলিস (দেওয়াল ঘড়ি), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম (সিংহ), ইনসানীয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ (আপেল) ও বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (মোটরগাড়ি) নির্বাচনের অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনি কার্যক্রম থেকে দূরে রয়েছে।
প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে মানতে হবে নিয়ম কানুন
সংসদ নির্বাচনে কী করা যাবে, কী করা যাবে না তা নিয়ে আগেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ইসি। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে সংসদ নির্বাচন আইনের ১০ নং ক্রমিকে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচনী বিধিনিষেধ সম্পর্কে বলা হয়েছে।
সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রত্যেক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য ব্যক্তিকে বিধি ৬ হইতে বিধি ১৪ এর বিধানাবলি অনুসরণ করিতে হইবে। এই বিধিগুলোতে যেসব বিষয়ে বলা হয়েছে তার কয়েকটি নিচে তুলে ধরা হলো—
সভা-সমিতি সংক্রান্ত বিধিনিষেধ
(ক) নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি প্রচারণার ক্ষেত্রে সমান অধিকার পাইবে। তবে প্রতিপক্ষের সভা, শোভাযাত্রা এবং অন্যান্য প্রচারাভিযান পণ্ড বা উহাতে বাধা প্রদান করিতে পারিবে না;
(খ) সভার দিন, সময় ও স্থান সম্পর্কে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে লিখিত অনুমতি গ্রহণ করিবে। তবে এইরূপ অনুমতি লিখিত আবেদন প্রাপ্তির সময়ের ক্রমানুসারে প্রদান করিতে হইবে।
(গ) সভা করিতে চাহিলে প্রস্তাবিত সভার কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা পূর্বে তাহার স্থান এবং সময় সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিতে হইবে, যাহাতে ঐ স্থানে চলাচল ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারে;
(ঘ) জনগণের চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি করিতে পারে এমন কোনো সড়কে জনসভা কিংবা পথ সভা করিতে পারিবে না এবং তাহাদের পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তিও অনুরূপভাবে জনসভা বা পথসভা ইত্যাদি করিতে পারিবে না;
(ঙ) কোনো সভা অনুষ্ঠানে বাধাদানকারী বা অন্য কোনোভাবে গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সভার আয়োজকরা পুলিশের শরণাপন্ন হইবেন এবং এই ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তাহারা নিজেরা ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন না।
পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ব্যবহার সংক্রান্ত বিধিনিষেধ
কোন প্রার্থী কিংবা তাহার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি নিম্নে উল্লিখিত স্থান বা যানবাহনে কোনো প্রকার পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগাইতে পারিবেন না,
যথা⎯ সিটি কর্পোরেশন এবং পৌর এলাকায় অবস্থিত দালান, দেওয়াল, গাছ, বেড়া, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি বা অন্য কোন দণ্ডায়মান বস্তুতে; সমগ্র দেশে অবস্থিত সরকারি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের স্থাপনাসমূহে; এবং বাস, ট্রাক, ট্রেন, স্টিমার, লঞ্চ, রিকশা কিংবা অন্য কোন প্রকার যানবাহনে : তবে শর্ত থাকে যে, দেশের যে কোন স্থানে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ঝুলাইতে বা টাঙ্গাতে পারিবে।
এ ছাড়া কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ইত্যাদির উপর অন্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ইত্যাদি লাগানো যাইবে না এবং উক্ত পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ইত্যাদির কোন প্রকার ক্ষতিসাধন তথা বিকৃতি বা বিনষ্ট করা যাইবে না।
কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃতব্য পোস্টার সাদা-কালো রঙের হইতে হইবে এবং উহার আয়তন ২৩″ / ১৮″ এর অধিক হইতে পারিবে না এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পোস্টারে তাহার প্রতীক ও নিজের ছবি ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির ছবি বা প্রতীক ছাপাইতে পারিবে না। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনীত হইলে সেক্ষেত্রে তিনি কেবল তাহার বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি পোস্টারে ছাপাইতে পারিবে।
যেমন- উল্লিখিত ছবি সাধারণ ছবি হইতে হইবে এবং কোনো অনুষ্ঠান, মিছিলে নেতৃত্বদান, প্রার্থনারত অবস্থা ইত্যাদি ভঙ্গিমায় ছবি কোনো অবস্থাতেই ছাপানো যাইবে না। নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃতব্য সাধারণ ছবির আয়তন ২৩″ / ১৮″ এর অধিক হইতে পারিবে না। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রতীকের সাইজ, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ বা উচ্চতা তিন মিটারের অধিক হইতে পারিবে না।
যানবাহন ব্যবহার সংক্রান্ত বিধিনিষেধ
(ক) কোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি কোন ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌযান, ট্রেন কিংবা অন্য কোন যান্ত্রিক যানবাহন সহকারে মিছিল কিংবা মশাল মিছিল বাহির করিতে পারিবে না কিংবা কোনরূপ শোডাউন করিতে পারিবে না;
(গ) নির্বাচনী প্রচারকার্যে হেলিকপ্টার বা অন্য কোনো আকাশযান ব্যবহার করা যাইবে না। তবে দলীয় প্রধানের যাতায়াতের জন্য উহা ব্যবহার করিতে পারিবে কিন্তু যাতায়াতের সময় হেলিকপ্টার হইতে লিফলেট, ব্যানার বা অন্য কোন প্রচার সামগ্রী প্রদর্শন বা বিতরণ করিতে পারিবে না;
দেওয়াল লিখন সংক্রান্ত বিধিনিষেধ
(ক) কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি দেওয়ালে লিখিয়া কোন প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা চালাইতে পারিবেন না; এবং
(খ) কালি বা রং দ্বারা বা অন্য কোনোভাবে দেওয়াল ছাড়াও কোনো দালান, থাম, বাড়ি বা ঘরের ছাদ, সেতু, সড়ক দ্বীপ, রোড ডিভাইডার, যানবাহন বা অন্য কোন স্থাপনায় প্রচারণামূলক কোন লিখন বা অঙ্কন করিতে পারিবেন না।
গেইট বা তোরণ নির্মাণ, প্যান্ডেল বা ক্যাম্প স্থাপন ও আলোকসজ্জাকরণ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ
(ক) কোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি নির্বাচনী প্রচারণায় কোন গেইট বা তোরণ নির্মাণ করিতে পারিবেন না কিংবা চলাচলের পথে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিতে পারিবেন না;
(খ) নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ৪০০ (চারশত) বর্গফুট এর অধিক স্থান লইয়া কোন প্যান্ডেল তৈরি করিতে পারিবেন না;
(গ) নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসাবে বিদ্যুতের সাহায্যে কোন প্রকার আলোকসজ্জা করিতে পারিবেন না;
(ঘ) কোন সড়ক কিংবা জনগণের চলাচল ও সাধারণ ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত স্থানে নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন করিতে পারিবেন না; একজন প্রার্থী দলীয় ও সহযোগী সংগঠনের কার্যালয় নির্বিশেষে প্রতিটি ইউনিয়নে সর্বোচ্চ একটি এবং প্রতিটি পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন এলাকার প্রতি ওয়ার্ডে একটির অধিক নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন করিতে পারিবেন না;
(ঙ) নির্বাচনী প্রচারণার জন্য প্রার্থীর ছবি বা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণামূলক কোন বক্তব্য বা কোন শার্ট, জ্যাকেট, ফতুয়া ইত্যাদি ব্যবহার করিতে পারিবেন না; এবং
(চ) নির্বাচনী ক্যাম্পে ভোটারগণকে কোনরূপ কোমল পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন বা কোনরূপ উপঢৌকন প্রদান করিতে পারিবেন না।
উসকানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ এবং বিস্ফোরক বহন সংক্রান্ত বিধিনিষেধ
(ক) কোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি নির্বাচনী প্রচারণাকালে ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করিয়া বক্তব্য প্রদান বা কোন ধরনের তিক্ত বা উসকানিমূলক কিংবা লিঙ্গ, সাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কোন বক্তব্য প্রদান করিতে পারিবেন না;
(খ) মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য কোন ধর্মীয় উপাসনালয়ে কোন প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা চালাইতে পারিবেন না;
(গ) নির্বাচন উপলক্ষ্যে কোন নাগরিকের জমি, ভবন বা অন্য কোন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির কোনরূপ ক্ষতিসাধন করা যাইবে না এবং অনভিপ্রেত গোলযোগ ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ দ্বারা কাহারও শান্তি ভঙ্গ করিতে পারিবেন না;
মাইক ব্যবহার সংক্রান্ত বিধিনিষেধ
কোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি কোন নির্বাচনী এলাকায় মাইক বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্যবিধ যন্ত্রের ব্যবহার দুপুর ২ (দুই) ঘটিকা হইতে রাত ৮ (আট) ঘটিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখিবেন।
সরকারি সুবিধা নিয়ে প্রচারণা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী এলাকায়, সংশ্লিষ্ট জেলায় বা অন্য কোথাও কোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল কিংবা উহার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাহাদের পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি নির্বাচনী কাজে সরকারি প্রচার যন্ত্রের ব্যবহার, সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণকে ব্যবহার বা সরকারি যানবাহন ব্যবহার করিতে পারিবেন না এবং রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ বা ব্যবহার করিতে পারিবেন না।
এ ছাড়া আরেক বিজ্ঞপ্তিতে ইসি জানিয়েছে, অর্থ, অস্ত্র, পেশিশক্তি , স্থানীয় প্রভাব বা সরকারি ক্ষমতার দ্বারা নির্বাচন প্রভাবিত করা যাবে না। নির্বাচনী জনসভা বা মিছিলের দিন, সময় ও স্থান সম্পর্কে পূর্বেই স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে কোনো সড়কে পুলিশ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে জনসভা করা যাবে না। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিলের উপর অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ইত্যাদি লাগানো যাবে না। সরকারি ডাকবাংলো, রেস্ট হাউস, সার্কিট হাউস বা কোনো সরকারি কার্যালয়কে কোনো প্রকার প্রচারের স্থান হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
এছাড়া, যে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃতব্য পোস্টার সাদা-কালো রঙের হতে হবে এবং এর আয়তন অনধিক ৬০ (ষাট) সেন্টিমিটার X ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) সেন্টিমিটার এবং ব্যানার সাদা-কালো রঙের ও আয়তন অনধিক ৩ (তিন) মিটার X ১ (এক) মিটার হতে হবে। নির্বাচনী এলাকায় মাইক বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্যবিধ যন্ত্রের ব্যবহার দুপুর দুইটা থেকে রাত ৮টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
কোনো প্রার্থীর পক্ষে ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল কিংবা অন্য কোনো যানবাহন সহকারে মিছিল কিংবা মশাল মিছিল বের করা যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণাকালে কোনো ধরনের তিক্ত, উসকানিমূলক এবং ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কোন বক্তব্য প্রদান করা যাবে না। কোনো নাগরিকের জমি, ভবন বা অন্য কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির কোনরূপ ক্ষতিসাধন করা যাবে না।