২০২৩ সালে আলোচনার কেন্দ্রে মধ্যপ্রাচ্য
- আপডেট সময় : ০৭:০৩:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪২৮ বার পড়া হয়েছে
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর সারা বিশ্ব ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল এই সংঘাত নিয়ে। বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনের ভূত ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যাপকভাবে চিন্তিত হয়ে পড়ে। এ ছাড়া বিশ্বরাজনীতির অন্য একটি মঞ্চ, যেটিকে বলা হয় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল (ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরকে ঘিরে যেসব দেশ রয়েছে), সেখানেও তাদের তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। প্রায় একই সময়ে কোরিয়া উপদ্বীপও আগের চেয়ে অনেক বেশি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। সেখানে তাইওয়ান প্রণালিকে কেন্দ্র করে আমেরিকা ও চীন মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এমন সব শ্বাসরুদ্ধকর বৈশ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে বহু বছরের পুরোনো ‘মধ্যপ্রাচ্য সংকট’ বলা যায়, অনেকটাই উপেক্ষিত ছিল।
কিন্তু গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল ও হামাসের (ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী) মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর আবারও বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে মধ্যপ্রাচ্য। বিশেষ করে, দশকের পর দশক ধরে চলা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নতুন করে প্রাণ পায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ১৭ হাজার ১৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৪৬ হাজার। অন্যদিকে ইসরায়েলের হিসাব অনুসারে, হামাসের হামলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছে। ২৪০ জনকে জিম্মি করা হয়েছে।
এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৫০ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। মারাত্মতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার বসতবাড়ি। এখন পর্যন্ত তিনটি গির্জা ও ৮৮টি মসজিদ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হওয়ার দাবি করেছে হামাস। এ ছাড়া আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৭৪টি মসজিদ।
জাতিসংঘ বলছে, এবারের সংঘাতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে শিশুরা। এখন পর্যন্ত শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ৭ হাজার ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়েছে ২০ লাখ মানুষ।
এখনো যুদ্ধ থামার নাম নেই। মাঝে সাত দিনের যুদ্ধবিরতির মধ্যে উভয় পক্ষের কিছু বন্দি বিনিময়ের পর ইসরায়েল আবার পূর্ণ উদ্যমে হামলা শুরু করে। এখন উত্তর গাজা ছাড়াও দক্ষিণ গাজা ও পশ্চিম তীরেও হামলা করতে শুরু করেছে ইসরায়েল।
এ যুদ্ধের শেষ কোথায়, তা অজানা। কিন্তু যুদ্ধটি ইতিমধ্যে সকল সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। গত ৪ নভেম্বর কিয়েভে ইউরোপিয়ান কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আক্ষেপ করে বলেছেন, ‘গাজার যুদ্ধ ইউক্রেন থেকে সারা বিশ্বের মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে।’
কথা সত্য। ইউক্রেন নিয়ে আগের মতো আর কেউ ভাবিত নয়। আমেরিকা আর ইউক্রেনকে অর্থ ও গোলাবারুদ দিয়ে সহায়তা করবে কি–না, তা নিয়ে সিনেটে তুমুল বাদানুবাদ চলছে। এটা স্পষ্ট, আমেরিকা আর ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে রাজি নয়। ইউক্রেন এখন আমেরিকার কাছে দুধভাত। তার সমস্ত চিন্তা এখন ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন নিয়ে।
ওদিকে খোদ রাশিয়াও চিন্তিত মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে। ইসরায়েল ও হামাসকে আলোচনায় বসাতে বারবার উদ্যোগ নিচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছেন। গত ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘে প্রস্তাবও উত্থাপন করেছিলেন। যদিও চারটি দেশের বিরোধিতায় সে প্রস্তাব পাস হয়নি। দেশ চারটি হচ্ছে—আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জাপান।
এতদিন যে চীন দূতিয়ালি করার চেষ্টা করেছে ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের, সেও এখন ব্যস্ত ইসরায়েল–ফিলিস্তিন নিয়ে। গত অক্টোবরে ঢাকা সফরে এসে ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এস ওয়াই রামাদানের সঙ্গে বৈঠক শেষে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে, যত দ্রুত সম্ভব আন্তর্জাতিক ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে এবং সেই লক্ষ্যে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।’
ফ্রান্স-জার্মানি কিছুদিন আগেও কথায় কথায় ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা বলত, যুদ্ধাস্ত্র পাঠাত ইউক্রেনকে, তাদেরকে এখন আর খুব একটা বিবৃতি দিতে দেখা যাচ্ছে না। অবস্থা এমন নয় যে, সেখানে যুদ্ধের ভয়াবহতা স্তিমিত হয়ে এসেছে। গত ৩ ডিসেম্বরও ইউক্রেনের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে রাতভর হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১২টি ড্রোন এবং একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে রুশ বাহিনী।
তারপরও ইউক্রেন এখন পশ্চিমাদের কাছে হালে পানি পাচ্ছে না। কারণ, ইসরায়েল-ফিলিস্তিনকে ঘিরে নিজ দেশেই শুরু হয়েছে অশান্তি। ডেনমার্কের ব্রাব্র্যান্ড, জার্মানির বার্লিনসহ ইউরোপের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। সংঘাতের আশঙ্কায় জার্মানি এবং ফ্রান্স ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে। বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ বলেছে, তারা সিনাগগ ও ইহুদি স্কুলগুলোতে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে।
খোদ মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে, ভূমধ্যসাগর থেকে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগর হয়ে আরব সাগর এবং ওমান উপসাগর ও পারস্য উপসাগরজুড়ে বিশাল বিস্তীর্ণ মরুময় অঞ্চল বহু বছর ধরেই ‘জ্বলন্ত উনুন’ হয়ে আছে। যেমন—৯ বছর ধরে চলছে ইয়েমেন-সৌদি গৃহযুদ্ধ, এক যুগ ধরে চলছে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ, ২০১৭ সাল থেকে চলছে ইরাক ও লিবিয়ার গৃহযুদ্ধ। ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইসরায়েল রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতা ঘোষণার পরদিনই দেশটিতে আক্রমণ করে মিশর, জর্ডান, ইরাক, সিরিয়া ও লেবাননের বাহিনী। তারপর অন্যান্য দেশের সঙ্গে বৈরিতা কিছুটা স্তিমিত হয়ে এলেও লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের শত্রুতার সম্পর্ক চিরস্থায়ী রূপ নিয়েছে। দশকের পর দশক ধরে চলছে লেবানন এবং ইসরায়েলের মধ্যে শত্রুতা।
কিন্তু ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর সকল আলো গিয়ে পড়েছে সাম্প্রতিক এই সংঘাতের ওপর। সংঘাতের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে গাজা। যেন মধ্যপ্রাচ্যে অপরাপর সকল সংঘাত থেমে গেছে। আসলেই কী তাই? মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতগুলোর দিকে তাহলে একটু সবিস্তারে নজর দেওয়া যাক।
‘আরব বসন্তের’ প্রভাবে ইয়েমেনের দীর্ঘ সময়ের প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লাহ সালেহর পতন হয় ২০১১ সালে। কিন্তু তাতেও ইয়েমেনবাসীর ভাগ্যে সুফল মেলেনি।
২০১৪ সালে এডেন উপসাগরের তীরবর্তী এ দেশে গণঅভ্যুত্থানের ‘ছাইভস্ম’ থেকে জন্ম নেয় হুতি বিদ্রোহীরা। তাদের সব রকমের সাহায্য দিয়ে পেলেপুষে বড় করে ইরান। এতে ইরান-সৌদি সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে ওঠে। হুতি ও ইরান যেহেতু শিয়া মতাবলম্বী, সৌদি তাই প্রতিবেশী আরব সুন্নি দেশগুলোকে নিয়ে হুতিবিরোধী সামরিক জোট গড়ে তোলে।
এরপর থেকে ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট প্রায়ই হামলা চালাতে শুরু করে। প্রতিশোধ নিতে হুতিরাও পাল্টা আক্রমণ চালায় সৌদিতে। জাতিংঘের মধ্যস্থতায় শান্তি প্রস্তাব গৃহীত হলেও তা নড়বড়ে। নতুন করে যেকোনো সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর তাতে ইন্ধন দিতে পারে শান্তির খোলসের নিচে চলমান ছোট ছোট হামলা–পাল্টা হামলা।
দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকার। ‘আরব বসন্তের’ প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে ২০১১ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে পদত্যাগের দাবি জানায় গণতন্ত্রপন্থীরা। সুন্নিপ্রধান সিরিয়ায় শিয়া মতাবলম্বী প্রেসিডেন্টকে সরাতে গিয়ে আন্দোলনকারীরা ধর্মীয় ও গোষ্ঠীগত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আরব লিগ থেকে সিরিয়াকে বহিষ্কার করা হয়। এ বছর অবশ্য আরব লিগের সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে সিরিয়াকে। কিন্তু কোনো কিছুতেই সংঘাত থামছে না। দেশটিতে গৃহযুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে এবং মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
প্রায় ১ যুগ ধরে চলা এই সংঘাতেরও কোনো রাজনৈতিক সমাধান মেলেনি আজও। ইরান এখনো সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে বাশার আল আসাদ সরকারকে।
গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে লেবাননে গৃহযুদ্ধ চলার সময়ে দেশটিতে শিয়াদের সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘হিজবুল্লাহর’ উত্থান হয়। আমেরিকাভিত্তিক স্বাধীন গবেষণা সংস্থা কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সে প্রকাশিত এক নিবন্ধে ক্যালি রবিনসন নামের এক গবেষক লিখেছেন, ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লব হওয়ার পর দেশটির রেভ্যুলশনারি গার্ডের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠে হিজবুল্লাহ। তারাই পরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে।
এর এক দশক পর ১৯৮৯ সালে গৃহযুদ্ধের অবসান এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে সৌদি, মিশর, সিরিয়া, ইরান, ফ্রান্স ও আমেরিকা মিলে সৌদির তায়েফ শহরে ‘তায়েফ চুক্তি’ সই করে। এই চুক্তির পর গৃহযুদ্ধরত সব গোষ্ঠী অস্ত্র ফেরত দিলেও হিজবুল্লাহ তাদের অস্ত্র জমা দেয়নি।
পরবর্তীতে হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা প্রায়ই ইসরায়েলের সেনাদের ওপর হামলা চালাতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে ২০০০ সালে দখলকৃত উত্তর লেবানন থেকে পুরোপুরি সরে যেতে বাধ্য হয় ইসরায়েল।
এরপর ২০০৬ সালে ‘পয়েন্ট ১০৫’ নামের সীমান্ত থেকে দুই ইসরায়েলি সেনাকে বন্দি করে হিজবুল্লাহ। ফলে হিজবুল্লাহকে উৎখাতের উদ্দেশ্যে পুনরায় লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে অভিযান চালায় ইসরায়েল।
কিন্তু খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি ইসরায়েল। হিজবুল্লাহর বিপুল প্রতিরোধের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় তারা। পরে এই যুদ্ধ নিয়ে তদন্ত কমিশন গঠন করে ইসরায়েল। তদন্ত শেষে ইসরায়েল সরকারের গঠিত উইনোগ্রাড কমিশন জানায়, ২০০৬ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল ‘ব্যর্থ’ হয়েছে।
তারপরও সংঘাত থেমে নেই। বিশেষত হামাস–ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর থেকেই হিজবুল্লাহ সম্পর্কিত আলোচনা সামনে আসতে শুরু করে। গত ৩ ডিসেম্বরও হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে। এতে তিনজন লেবানিজ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে লেবাননের এক সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন।
২০০৩ সালে ইরাকে অভিযান চালিয়ে সাদ্দাম সরকারকে উৎখাত করে আমেরিকা। তখন থেকেই সেখানে সামরিক ঘাঁটি করে রয়েছে মার্কিন সেনারা। সেসব সেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে প্রায়ই হামলা চালায় ইরান সমর্থিত ইরাকের কাতায়েব হিজবুল্লাহ মিলিশিয়া ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী। গত দেড় মাসে অন্তত ১২বার হামলার শিকার হয়েছে ইরাক। গত ১ ডিসেম্বর ইরাকের পূর্ব দিয়ালা প্রদেশে রাস্তার ধারে বোমা বিস্ফোরণ ও বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছে।
ইরাকে এখন আড়াই হাজার মার্কিন সেনা রয়েছে। শিগগিরই আরও ৯০০ সেনা মোতায়েন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন।
এ ছাড়া ইরাকের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতিও কয়েক বছর ধরে অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গত মধ্য নভেম্বরে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তানের রাজধানী ইরবিলের কাছে এক ইরানি কুর্দি রাজনৈতিক দলের সদরদপ্তরে হামলা চালিয়েছে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী। এ হামলায় ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
গত বছরের আগস্টে ইরাকের শক্তিশালী শিয়া নেতা মোকতাদা আল-সদর সোমবার রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরপরই রাজধানী বাগদাদে ছড়িয়ে পড়ে সংঘাত। মোকতাদা আল-সদরের অনুসারীররা বাগদাদের গ্রিন জোনের সরকারি বাড়িগুলোতে ঢুকে পড়ে। অনেকে রাস্তায় নেমে আসে। এরপরই মোকতাদা আল-সদর ও অন্যন্য শিয়া রাজনৈতিক দলের কর্মীদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। বাগদাদে গুলিতে দুজন নিহত হয়। এরপর ইরাকে নতুন সরকার গঠিত হলেও এসব অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা এখনো কাটেনি।
সুতরাং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কোনো না কোনোভাবে সংঘাত লেগেই আছে। সংঘাত জারি আছে এশিয়া–ইউরোপের কয়েকটি দেশেও। কিন্তু সেসব সংঘাত ছাপিয়ে সকল আলোচনার ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে ইসরায়েল–হামাস যুদ্ধ। এখন সবার মুখে একটাই প্রশ্ন—এর সমাধান কোথায়?
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স, বিবিসি, মিডল ইস্ট মনিটর, ফারস নিউজ এজেন্সি, আল আরাবিয়া ও আরব নিউজ