০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন, চারজনের মরদেহ উদ্ধার

রাজধানীর তেজগাঁও রেলস্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টা ৪ মিনিটে আগুনের খবর পাওয়ার পরই ফায়ার সার্ভিস তেজগাঁও রেলস্টেশনে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।

নিহতদের মধ্যে দুজন নাদিরা আক্তার পপি ও তাঁর তিন বছরের শিশু ইয়াসিন। বাকি দুজনের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। চারটি মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। অপর দুজনের বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৪৫ বছর।

মৃত ইয়াসিনের মামা হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, তাদের বাড়ি নেত্রকোনার সদর উপজেলার বরুনা গ্রামে। ৩ ডিসেম্বর তারা বেড়ানোর জন্য গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই ঢাকায় ফেরার জন্য গত রাত ১২টার দিকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের রওনা দিয়েছিলেন। ভোরে তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। তাদের মধ্যে ছিলেন হাবিবুর, ইয়াসিন, ইয়াসিনের বড় ভাই ফাহিম (৮) এবং তাদের মা নাদিরা।

তিনি জানান, তেজগাঁও রেল স্টেশন এসে ট্রেনটি থামলে তখন কিছু যাত্রী নেমে যায়। এ সময় তাদের পেছনের সিটে থাকা দুই ব্যক্তিও নেমে যান। এরপর পেছনের সিট থেকে আগুন জ্বলে উঠে। মুহূর্তেই আগুন পুরো বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে দৌড়ে হাবিবুর ও ফাহিমসহ অন্য যাত্রীরা নামতে পারলেও ভেতরে আটকা পড়েন ইয়াসিন ও তার মা নাদিয়া আক্তার পপি। তাদেরকে আর কোনোভাবেই বের করা যায়নি।

পরে ফায়ার সার্ভিস তাদের লাশ বের করেন। তিনি আরো জানান, নিহত নাদিয়ার স্বামী নাম মিজানুর রহমান মিজান। তিনি কারওয়ান বাজারে হার্ডওয়ার দোকানে কাজ করেন। তেজগাঁও তেজতুরি বাজার এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার গণমাধ্যমকে জানান, ভোর ৫টা ৪ মিনিটে আগুনের খবর পেলে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের দল তেজগাঁও রেলস্টেশনে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ট্রেনের একটি বগির আগুন নেভানোর পর সেখান থেকে চার জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট।

মো. শাহজাহান শিকদার আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেনটি কমলাপুর রেলস্টেশনে সরিয়ে নেওয়ার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। নিহত চার জনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আজ ভোরের দিকে তেজগাঁও রেলস্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে নিহত চার জনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের মর্গে নিয়ে আসে রেলওয়ে থানা পুলিশ। এদের মধ্যে দুই জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। দগ্ধের পরিমাণ বেশি হওয়ায় বাকি দুই জনের পরিচয় জানা যায়নি। তবে প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে ।

এর আগে, গত ১৩ ডিসেম্বর গাজীপুরে রেল লাইনের ২০ ফুট কেটে ফেলায় দুর্ঘটনায় পড়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাত বগি দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে এক জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হন অর্ধশতাধিক যাত্রী।

শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা

তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন, চারজনের মরদেহ উদ্ধার

আপডেট : ০৬:২১:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩

রাজধানীর তেজগাঁও রেলস্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টা ৪ মিনিটে আগুনের খবর পাওয়ার পরই ফায়ার সার্ভিস তেজগাঁও রেলস্টেশনে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।

নিহতদের মধ্যে দুজন নাদিরা আক্তার পপি ও তাঁর তিন বছরের শিশু ইয়াসিন। বাকি দুজনের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। চারটি মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। অপর দুজনের বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৪৫ বছর।

মৃত ইয়াসিনের মামা হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, তাদের বাড়ি নেত্রকোনার সদর উপজেলার বরুনা গ্রামে। ৩ ডিসেম্বর তারা বেড়ানোর জন্য গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই ঢাকায় ফেরার জন্য গত রাত ১২টার দিকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের রওনা দিয়েছিলেন। ভোরে তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। তাদের মধ্যে ছিলেন হাবিবুর, ইয়াসিন, ইয়াসিনের বড় ভাই ফাহিম (৮) এবং তাদের মা নাদিরা।

তিনি জানান, তেজগাঁও রেল স্টেশন এসে ট্রেনটি থামলে তখন কিছু যাত্রী নেমে যায়। এ সময় তাদের পেছনের সিটে থাকা দুই ব্যক্তিও নেমে যান। এরপর পেছনের সিট থেকে আগুন জ্বলে উঠে। মুহূর্তেই আগুন পুরো বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে দৌড়ে হাবিবুর ও ফাহিমসহ অন্য যাত্রীরা নামতে পারলেও ভেতরে আটকা পড়েন ইয়াসিন ও তার মা নাদিয়া আক্তার পপি। তাদেরকে আর কোনোভাবেই বের করা যায়নি।

পরে ফায়ার সার্ভিস তাদের লাশ বের করেন। তিনি আরো জানান, নিহত নাদিয়ার স্বামী নাম মিজানুর রহমান মিজান। তিনি কারওয়ান বাজারে হার্ডওয়ার দোকানে কাজ করেন। তেজগাঁও তেজতুরি বাজার এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার গণমাধ্যমকে জানান, ভোর ৫টা ৪ মিনিটে আগুনের খবর পেলে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের দল তেজগাঁও রেলস্টেশনে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ট্রেনের একটি বগির আগুন নেভানোর পর সেখান থেকে চার জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট।

মো. শাহজাহান শিকদার আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেনটি কমলাপুর রেলস্টেশনে সরিয়ে নেওয়ার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। নিহত চার জনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আজ ভোরের দিকে তেজগাঁও রেলস্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে নিহত চার জনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের মর্গে নিয়ে আসে রেলওয়ে থানা পুলিশ। এদের মধ্যে দুই জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। দগ্ধের পরিমাণ বেশি হওয়ায় বাকি দুই জনের পরিচয় জানা যায়নি। তবে প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে ।

এর আগে, গত ১৩ ডিসেম্বর গাজীপুরে রেল লাইনের ২০ ফুট কেটে ফেলায় দুর্ঘটনায় পড়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাত বগি দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে এক জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হন অর্ধশতাধিক যাত্রী।