ঢাকা ১১:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৬:২৮:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৪১৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

লোহিত সাগরে জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের হামলার জেরে সামুদ্রিক বাণিজ্য ব্যাহত এবং কোম্পানিগুলোকে জাহাজের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য করায় আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিপিং কোম্পানি মায়ের্স্ক জানিয়েছে, তারা উত্তমাশা অন্তরীপের (কেপ অব গুড হোপ) চারপাশ দিয়ে তাদের কিছু জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করবে।

তেল ও তরল গ্যাস পরিবহনে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথগুলোর মধ্যে অন্যতম লোহিত সাগর। এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণে ভোগ্যপণ্যও পরিবাহিত হয় এই পথে। গত অক্টোবরে ইসরায়েল–হামাস সংঘাত শুরুর পর লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে ইরান-সমর্থিত হুথিদের হামলা এরই মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্যকে প্রভাবিত করেছে। ১২টি বড় কোম্পানি ও জ্বালানি তেল পরিবহনকারী সংস্থা লোহিত সাগর দিয়ে তাদের পরিষেবা বন্ধ রেখেছে। এ কোম্পানিগুলো বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের প্রায় ৬০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করে। ফলে পণ্য ও জ্বালানি তেল সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাবিক ও জাহাজের নিরাপত্তার জন্য লোহিত সাগর হয়ে পূর্বনির্ধারিত সব যাত্রা বাতিল করেছে বা করবে ১২টি কোম্পানি। এ কোম্পানিগুলো হচ্ছে বিপি, এমএসসি, মায়ের্স্ক, হ্যাপাগ লয়েড, সিএমএ সিজিএম, ইয়াং মিং মেরিন ট্রান্সপোর্ট, ইকুইনর, ইউরোনাভ, ফ্রন্টলাইন, এইচএমএম, ওওসিএল ও এভারগ্রিন।

এভারগ্রিন জানিয়েছে, এটি সাময়িকভাবে ইসরায়েলগামী যেকোনো কার্গো পরিবহন বন্ধ করবে। ইসরায়েলে শিপিং পরিষেবা স্থগিত করবে বলেও জানিয়েছে কোম্পানিটি। চীনা মালিকানাধীন কসকো শিপিং গ্রুপের ওরিয়েন্ট ওভারসিজ কন্টেইনার লাইন (ওওসিএল) জানিয়েছে, সমস্যার কারণে ইসরায়েলি কার্গো পরিবহন বন্ধ করা হয়েছে।

ইসরায়েলি চেম্বার অব শিপিংয়ের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইয়োনি এসাকভ জানান, ইসরায়েলি আমদানির প্রায় ৩০ শতাংশ লোহিত সাগর দিয়ে কন্টেইনার জাহাজে আসে। এগুলো ভোগ্য বা অন্যান্য পণ্যের জন্য দুই-তিন মাস আগে বুক করা হয়। এখন যদি জাহাজগুলো রুট পরিবর্তন করে, তাহলে পণ্যগুলো ওই অঞ্চল থেকে আমদানি করা কঠিন হবে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক জ্বালানি তেল কোম্পানি বিপির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের জনগণ এবং যারা আমাদের জন্য কাজ করছেন তাদের নিরাপত্তা সবার আগে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় বিপি অস্থায়ীভাবে লোহিত সাগর দিয়ে সব ট্রানজিট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

অনলাইন শিপিং মার্কেটপ্লেস ফ্রেইটসের তথ্যানুসারে, সমুদ্রে পণ্য পরিবহন খরচ এরই মধ্যে বেড়ে গেছে। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর এশিয়া-ইউএস ইস্ট কোস্টের (কার্গো সার্ভিস) দাম প্রতি ৪০ ফুট কন্টেইনারে ৫ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৪৯৭ ডলারে পৌঁছেছে। এটি আরও বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে। কারণ বড় কোম্পানিগুলো সুয়েজ খাল এড়িয়ে যাচ্ছে। ভারত মহাসাগরে যাওয়ার জন্য আফ্রিকা ঘুরে যেতে হচ্ছে। এ পথ ঘুরে যেতে ১৪ দিন পর্যন্ত অতিরিক্ত সময় যোগ করতে হয়। একই সঙ্গে যোগ করতে হয় উচ্চ জ্বালানি খরচ। ফলে জাহাজগুলো তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক বেশি সময় নেয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম

আপডেট সময় : ০৬:২৮:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

লোহিত সাগরে জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের হামলার জেরে সামুদ্রিক বাণিজ্য ব্যাহত এবং কোম্পানিগুলোকে জাহাজের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য করায় আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিপিং কোম্পানি মায়ের্স্ক জানিয়েছে, তারা উত্তমাশা অন্তরীপের (কেপ অব গুড হোপ) চারপাশ দিয়ে তাদের কিছু জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করবে।

তেল ও তরল গ্যাস পরিবহনে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথগুলোর মধ্যে অন্যতম লোহিত সাগর। এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণে ভোগ্যপণ্যও পরিবাহিত হয় এই পথে। গত অক্টোবরে ইসরায়েল–হামাস সংঘাত শুরুর পর লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে ইরান-সমর্থিত হুথিদের হামলা এরই মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্যকে প্রভাবিত করেছে। ১২টি বড় কোম্পানি ও জ্বালানি তেল পরিবহনকারী সংস্থা লোহিত সাগর দিয়ে তাদের পরিষেবা বন্ধ রেখেছে। এ কোম্পানিগুলো বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের প্রায় ৬০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করে। ফলে পণ্য ও জ্বালানি তেল সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাবিক ও জাহাজের নিরাপত্তার জন্য লোহিত সাগর হয়ে পূর্বনির্ধারিত সব যাত্রা বাতিল করেছে বা করবে ১২টি কোম্পানি। এ কোম্পানিগুলো হচ্ছে বিপি, এমএসসি, মায়ের্স্ক, হ্যাপাগ লয়েড, সিএমএ সিজিএম, ইয়াং মিং মেরিন ট্রান্সপোর্ট, ইকুইনর, ইউরোনাভ, ফ্রন্টলাইন, এইচএমএম, ওওসিএল ও এভারগ্রিন।

এভারগ্রিন জানিয়েছে, এটি সাময়িকভাবে ইসরায়েলগামী যেকোনো কার্গো পরিবহন বন্ধ করবে। ইসরায়েলে শিপিং পরিষেবা স্থগিত করবে বলেও জানিয়েছে কোম্পানিটি। চীনা মালিকানাধীন কসকো শিপিং গ্রুপের ওরিয়েন্ট ওভারসিজ কন্টেইনার লাইন (ওওসিএল) জানিয়েছে, সমস্যার কারণে ইসরায়েলি কার্গো পরিবহন বন্ধ করা হয়েছে।

ইসরায়েলি চেম্বার অব শিপিংয়ের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইয়োনি এসাকভ জানান, ইসরায়েলি আমদানির প্রায় ৩০ শতাংশ লোহিত সাগর দিয়ে কন্টেইনার জাহাজে আসে। এগুলো ভোগ্য বা অন্যান্য পণ্যের জন্য দুই-তিন মাস আগে বুক করা হয়। এখন যদি জাহাজগুলো রুট পরিবর্তন করে, তাহলে পণ্যগুলো ওই অঞ্চল থেকে আমদানি করা কঠিন হবে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক জ্বালানি তেল কোম্পানি বিপির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের জনগণ এবং যারা আমাদের জন্য কাজ করছেন তাদের নিরাপত্তা সবার আগে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় বিপি অস্থায়ীভাবে লোহিত সাগর দিয়ে সব ট্রানজিট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

অনলাইন শিপিং মার্কেটপ্লেস ফ্রেইটসের তথ্যানুসারে, সমুদ্রে পণ্য পরিবহন খরচ এরই মধ্যে বেড়ে গেছে। ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর এশিয়া-ইউএস ইস্ট কোস্টের (কার্গো সার্ভিস) দাম প্রতি ৪০ ফুট কন্টেইনারে ৫ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৪৯৭ ডলারে পৌঁছেছে। এটি আরও বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে। কারণ বড় কোম্পানিগুলো সুয়েজ খাল এড়িয়ে যাচ্ছে। ভারত মহাসাগরে যাওয়ার জন্য আফ্রিকা ঘুরে যেতে হচ্ছে। এ পথ ঘুরে যেতে ১৪ দিন পর্যন্ত অতিরিক্ত সময় যোগ করতে হয়। একই সঙ্গে যোগ করতে হয় উচ্চ জ্বালানি খরচ। ফলে জাহাজগুলো তাদের গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক বেশি সময় নেয়।