হরতাল-অবরোধে এতদিন তুলনামূলক নিরাপদ যান ছিল ট্রেন। সম্প্রতি রেলপথে পড়েছে নাশকতাকারীদের থাবা। গত দেড় মাসে এ পথে অন্তত সাতটি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। সব শেষ তেজগাঁও রেলস্টেশনে মঙ্গলবার ভোর ৫টায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে মা ও শিশুসহ নিহত হন চারজন।
এমন পরিস্থিতিতে নাশকতা এড়াতে ও ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় রাতে চলাচলকারী ৫টি লোকাল, মেইল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। রেলওয়ে বলছে, হরতাল-অবরোধে নাশকতা এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে ট্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩ হাজার আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে আজ থেকে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, আজ থেকেই বন্ধ থাকবে উত্তরা মেইল ট্রেনটি। এ ট্রেন থেকে তেমন কোন আয় না আসায় লোকসান গুনতে হচ্ছে রেলওয়েকে। রাতেই ট্রেনগুলো অনেকটাই ফাঁকা থাকে। ফলে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে কোনো নাশকতার শঙ্কায় এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিনা এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি এই মহাব্যবস্থাপক। তিনি জানান, উত্তরা মেইল ট্রেনের ইঞ্জিন ও লোকবল আন্তঃনগর ট্রেনে ব্যবহার করা হবে।
এদিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে এক জোড়া কমিউটার ট্রেন এবং জামালপুর-তারাকান্দা রুটের ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ময়মনসিংহ-ভূয়াপুর রুটে দুটি লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। আর ঢাকা-তারাকান্দার মধ্যে চলাচলকারী আন্তঃনগর যমুনার রুট সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে কবে নাগাদ এসব ট্রেন চালু হবে সে বিষয়ে কোন তথ্য নেই কারও কাছে। তবে ইঞ্জিন ব্যবহার করা হবে আন্তঃনগরে।
গত দেড় মাসে রেলপথের ১২টি স্থানে এবং ৫টি ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিনটি স্থানে রেললাইন কাটা এবং ফিশপ্লেটের ক্লিপ খুলে নেওয়া হয়েছে। রেলওয়ে পুলিশের ছয়টি অঞ্চলের মধ্যে নাশকতার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঢাকা অঞ্চলে।