শীতের দাপটের মধ্যেই দুই বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। এতে তাপমাত্রা কমে বাড়তে পারে শীতের তীব্রতা। সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার (৩ দিন) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে, ঘন কুয়াশার কারণে সাড়ে ৭ ঘণ্ট বন্ধ থাকার পর পদ্মার তিনটি নৌরুট- পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, আরিচা-কাজিরহাট ও ধাওয়াপাড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে আটটার দিকে কুয়াশার ঘনত্ব কেটে গেলে ওই তিন নৌরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
জানা যায়, রাত ১০টা থেকেই রুট তিনটিতে ঘন কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাত ১টার দিকে কুয়াশার মাত্রা আরও বাড়ে। এতে ফেরি চলাচলের মার্কিং পয়েন্ট ও বিকনবাতির কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। এ সময় দুর্ঘটনা এড়াতে রাতে নৌরুটগুলোতে ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ জানান, রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত ১টার দিকে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়লে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। আজ সোমবার(২৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কুয়াশার ঘনত্ব কেটে গেলে ওই তিন নৌরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
অন্যদিকে, কুয়াশার চাদর কাটিয়ে পৌষে রোদ ঝলমলে সকালের দেখা মিলছে উত্তরের হিমকন্যা জেলা পঞ্চগড়ে। সকালে শীতের তীব্রতা থাকলেও জনপদে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্যের স্বস্তি। সকাল থেকেই নিম্নআয়ের মানুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ফিরছেন কাজে।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রোববার ১১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল। সামান্য তাপমাত্রা বাড়লেও এ জেলায় গত ১৬ ডিসেম্বর থেকেই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। আবহাওয়ার তথ্যটি জানিয়েছেন জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।
সোমবার সকালে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ঝলমলে রোদ উঠেছে। ফলে জনপদে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্যের স্বস্তি। কমেছে শীতের তীব্রতা। নিম্নআয়ের মানুষগুলোকে কাজে যেতে দেখা গেছে। কেউ পাথর তুলতে, কেউ চা বাগানে, কেউ বীজতলাসহ দিনমজুরী কাজ করতে বেরিয়েছেন।
এদিকে, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। সেই সঙ্গে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
এই অবস্থায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় হালকা/গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে, এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। পাশাপাশি এই সময়ে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে, মঙ্গলবারের (২৬ ডিসেম্বর) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সেই সঙ্গে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। উল্লেখিত সময়ে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এছাড়া আগামী বুধবারের (২৭ ডিসেম্বর) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
এই সময়ে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে আগামী পাঁচ দিনের শেষদিকে তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।