০২:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যীশুর শান্তির বার্তাকে আবারও উপেক্ষা করা হয়েছে: পোপ ফ্রান্সিস

অনর্থক যুদ্ধের যুক্তি দেখিয়ে যীশুর শান্তির বার্তাকে আবারও উপেক্ষা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। বড়দিন উপলক্ষ্যে আজ সোমবার দেওয়া এক ভাষণে তিনি এই মন্তব্য করেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়েছে।

উৎসব মুখর পরিবেশে বিশ্বজুড়ে চলছে যীশুর জন্মোৎসব উদযাপন। আত্মীয় পরিজনদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ব্যস্ত গোটা বিশ্ব। তবে ইসরায়েলি আগ্রাসনে এবার উৎসব মুখর আয়োজন নেই যিশুর জন্মস্থান বেথলেহেমে। যীশুর জন্মস্থানের পবিত্র ভূমিতে ইসরায়েলি যুদ্ধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেথলেহেমে ২৫ ডিসেম্বর কুমারি মাতা মেরির গর্ভে জন্ম হয় যীশু খ্রীস্টের। মানবতা রক্ষার্থে নিজের জীবনও উৎসর্গ করেন তিনি। এই দিনটিকে বড়দিন বা ক্রিসমাস হিসেবে উদযাপন করে থাকেন খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা।

ভ্যাটিক্যানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় ক্রিসমাস ইভ উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয় বিশেষ প্রার্থনার। এতে অংশ নেয় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ।

বড়দিন উপলক্ষ্যে দেওয়া ভাষণে যীশুর সহজ-সরল জীবনের মাহাত্ম তুলে ধরেন পোপ ফ্রান্সিস। এ সময় যীশুর শান্তির বার্তা উপেক্ষা করে তারই জন্মস্থানের পবিত্র ভূমিতে ইসরায়েলি যুদ্ধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘আজ আমাদের হৃদয় বেথলেহেমে রয়েছে। যেখানে অনর্থক যুদ্ধের যুক্তি দেখিয়ে যীশুর শান্তির বার্তাকে আবারও উপেক্ষা করা হয়েছে। এমনকি অস্ত্রের সংঘর্ষের মাধ্যমে আজও তাঁকে পৃথিবীতে শান্তিময় স্থান খুঁজে পেতে বাধা দেওয়া হয়েছে।’

যীশু খ্রিস্টের জন্মস্থান হওয়ায় ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে বেথলেহেম শহরের। প্রতি বছর বড়দিনে সেখানে থাকে উৎসবের বাড়তি মাত্রা। তবে এবারের চিত্র পুরো ভিন্ন। গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের কারণে বাতিল করা হয়েছে উৎসব আয়োজন।

বেথলেহেম শহরের ঐতিহ্যবাহী ন্যাটিভিটি চার্চে বড়দিনের প্রার্থনায় যোগ দেন নানা বয়সী মানুষ। গাজার শিশুদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে মাঙ্গার স্কয়ারে একটি ইনকিউবেটরের ভেতরে ব্রোঞ্জের যিশুর ভাস্কর্য রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে যীশুকে ইনকিউবেটরে থাকা শিশু হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

যীশু খ্রিস্টের জন্মদিনের উৎসবের আনন্দ আত্মীয় পরিজনদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে ব্যস্ত গোটা বিশ্ব। সেইসঙ্গে নতুন বছর যেন সবার জীবনে সুখ, শান্তি বয়ে আনে এমন প্রার্থণাই জানাচ্ছেন তারা।

এদিকে আমেরিকায় নানা আয়োজনে বড়দিনের উৎসব উদযাপিত হচ্ছে। নিউইয়র্কের ম্যানহাটন রকফেলার সেন্টারে ৫০ হাজার বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে ৮০ ফুট উচ্চতার একটি ক্রিসমাস ট্রি। যা দেখতে ভিড় করেন দর্শণার্থীরা। ক্রিসমাস ইভ উদযাপনে নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে জড়ো হয় লক্ষাধিক মানুষ।

এছাড়া ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বড়দিন উদ্‌যাপিত হচ্ছে। অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের খ্রিস্টধর্ম অনুসারীরাও প্রার্থনা, ধর্মীয় আচার, আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে পালন করছেন বড়দিন। রাজধানীসহ সারা দেশের গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল রূপে। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণীতে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এদিন বিশ্বশান্তির জন্য প্রার্থনা করেছেন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা।

যীশুর শান্তির বার্তাকে আবারও উপেক্ষা করা হয়েছে: পোপ ফ্রান্সিস

আপডেট : ০৮:১৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩

অনর্থক যুদ্ধের যুক্তি দেখিয়ে যীশুর শান্তির বার্তাকে আবারও উপেক্ষা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। বড়দিন উপলক্ষ্যে আজ সোমবার দেওয়া এক ভাষণে তিনি এই মন্তব্য করেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়েছে।

উৎসব মুখর পরিবেশে বিশ্বজুড়ে চলছে যীশুর জন্মোৎসব উদযাপন। আত্মীয় পরিজনদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ব্যস্ত গোটা বিশ্ব। তবে ইসরায়েলি আগ্রাসনে এবার উৎসব মুখর আয়োজন নেই যিশুর জন্মস্থান বেথলেহেমে। যীশুর জন্মস্থানের পবিত্র ভূমিতে ইসরায়েলি যুদ্ধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেথলেহেমে ২৫ ডিসেম্বর কুমারি মাতা মেরির গর্ভে জন্ম হয় যীশু খ্রীস্টের। মানবতা রক্ষার্থে নিজের জীবনও উৎসর্গ করেন তিনি। এই দিনটিকে বড়দিন বা ক্রিসমাস হিসেবে উদযাপন করে থাকেন খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা।

ভ্যাটিক্যানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় ক্রিসমাস ইভ উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয় বিশেষ প্রার্থনার। এতে অংশ নেয় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ।

বড়দিন উপলক্ষ্যে দেওয়া ভাষণে যীশুর সহজ-সরল জীবনের মাহাত্ম তুলে ধরেন পোপ ফ্রান্সিস। এ সময় যীশুর শান্তির বার্তা উপেক্ষা করে তারই জন্মস্থানের পবিত্র ভূমিতে ইসরায়েলি যুদ্ধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘আজ আমাদের হৃদয় বেথলেহেমে রয়েছে। যেখানে অনর্থক যুদ্ধের যুক্তি দেখিয়ে যীশুর শান্তির বার্তাকে আবারও উপেক্ষা করা হয়েছে। এমনকি অস্ত্রের সংঘর্ষের মাধ্যমে আজও তাঁকে পৃথিবীতে শান্তিময় স্থান খুঁজে পেতে বাধা দেওয়া হয়েছে।’

যীশু খ্রিস্টের জন্মস্থান হওয়ায় ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে বেথলেহেম শহরের। প্রতি বছর বড়দিনে সেখানে থাকে উৎসবের বাড়তি মাত্রা। তবে এবারের চিত্র পুরো ভিন্ন। গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের কারণে বাতিল করা হয়েছে উৎসব আয়োজন।

বেথলেহেম শহরের ঐতিহ্যবাহী ন্যাটিভিটি চার্চে বড়দিনের প্রার্থনায় যোগ দেন নানা বয়সী মানুষ। গাজার শিশুদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে মাঙ্গার স্কয়ারে একটি ইনকিউবেটরের ভেতরে ব্রোঞ্জের যিশুর ভাস্কর্য রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে যীশুকে ইনকিউবেটরে থাকা শিশু হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

যীশু খ্রিস্টের জন্মদিনের উৎসবের আনন্দ আত্মীয় পরিজনদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে ব্যস্ত গোটা বিশ্ব। সেইসঙ্গে নতুন বছর যেন সবার জীবনে সুখ, শান্তি বয়ে আনে এমন প্রার্থণাই জানাচ্ছেন তারা।

এদিকে আমেরিকায় নানা আয়োজনে বড়দিনের উৎসব উদযাপিত হচ্ছে। নিউইয়র্কের ম্যানহাটন রকফেলার সেন্টারে ৫০ হাজার বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে ৮০ ফুট উচ্চতার একটি ক্রিসমাস ট্রি। যা দেখতে ভিড় করেন দর্শণার্থীরা। ক্রিসমাস ইভ উদযাপনে নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে জড়ো হয় লক্ষাধিক মানুষ।

এছাড়া ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বড়দিন উদ্‌যাপিত হচ্ছে। অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের খ্রিস্টধর্ম অনুসারীরাও প্রার্থনা, ধর্মীয় আচার, আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে পালন করছেন বড়দিন। রাজধানীসহ সারা দেশের গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল রূপে। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণীতে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এদিন বিশ্বশান্তির জন্য প্রার্থনা করেছেন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা।