বিএনপি-জামায়াত দেশে স্থিতিশীলতা চায় না – শেখ হাসিনা
- আপডেট সময় : ০৫:২৮:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪২০ বার পড়া হয়েছে
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামাত দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ থাকুক তা চায় না। আগুন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য করে অগ্রগতি ব্যাহত করতে চায়। তাদের বিষয়ে দেশবাসীকে সজাগ থাকার আহবান জানান তিনি।
উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে নৌকা মার্কায় ভোট দরকার বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, একমাত্র নৌকা মার্কা স্বাধীনতা দিয়েছে, অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছে। আমি আপনাদের এলাকার পুত্রবধূ। কি বাহে একখান ভোট কি মুই পামু না? হামাক একখান ভোট দেবেন না? হামাক একখান ভোট দিবেন?
মঙ্গলবার ( ২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুরের পীরগঞ্জে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এভাবেই রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় ভোট কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকা মার্কা হচ্ছে নূহ নবীর নৌকা। মহাপ্লাবন থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করেছিল। আমার মেয়ে শিরীন শারমিন চৌধুরীকে দিয়ে গেলাম আপনাদের কাছে। শিরীন শারমিন চৌধুরী আমার মেয়ের মতো। নৌকায় ভোট দেয়া মানে আমাকে ভোট দেয়া, জয়কে ভোট দেয়া। সে জয়-পুতুলের বোন। এসময় শিরীন শারমিন চৌধুরীর হাত তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শিরীন শারমিন চৌধুরী অত্যন্ত মেধাবী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে জীবনে কখনো প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হয়নি। সে অত্যন্ত মেধাবী। ২০০৮ থেকে তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন আপনারা। তার নেতৃত্বে পীরগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আগামীতেও যেন এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকে সেজন্য তাকে ভোট দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ শুরু করি।
আমাদের লক্ষ্য ছিল মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন। শিক্ষা, দীক্ষা ও কর্মসংস্থানে তরুণ যুবসমাজকে এগিয়ে আনতে কাজ করেছি।
ভূমিহীন গৃহহীনদের ঘর দিয়েছি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। দেশ এখন ডিজিটাল হয়েছে। আমরা আনন্দিত যে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রংপুরে মঙ্গা দেখা দেয়নি।
এসময় শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি এবং কৃষিতে অভাবনীয় উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ইতিহাসে এই প্রথম গণতন্ত্র দীর্ঘদিন অব্যাহত থেকেছে। কিন্তু এটা অনেকেই চায় না। বিএনপি-জামায়াত আগুন সন্ত্রাস করে আনন্দ পায়। মানুষের জীবন নিয়ে খেলতে দেবো না। সকলকে সজাগ থাকতে হবে। তাদের ধরে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বেলা ৩টা ৫৩ মিনিটে বক্তব্য শুরু করে শেষ করেন ৪ টা ২৫ মিনিটে।
পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন রাজার সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ওই আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় প্রচারণায় সিলেটের পর রংপুর সফর করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার নিজের শ্বশুরবাড়ি পীরগঞ্জে জনসভাসহ আরো দুটি নির্বাচনী পথসভায় বক্তব্য রাখেন। এসময় তার সাথে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা। পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের জনসভা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। বাদ্য বাজনা আর মিছিল শ্লোগানে মুখরিত হয়ে জনসভায় যোগ দেন নেতা কর্মীরা। রংপুর সফরে এসে দুপুর আড়াইটার দিকে পীরগঞ্জের ফতেহপুরে স্বামী প্রয়াত ড. এম.এ ওয়াজেদ মিয়ার বাড়ি ‘জয়সদনে’ পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।
সেখানে পৌঁছে ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারত করেন এবং কুশল বিনিময় করেন শ্বশুর বাড়ির স্বজনদের সঙ্গে। এরপর দুপুরের খাবার গ্রহণ করে রংপুর-৬ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন। জনসভা শেষে সড়ক পথে সৈয়দপুর গিয়ে বাংলাদেশ বিমান যোগে ঢাকায় ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে বেলা বারোটার দিকে রংপুর-২ (তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউকের নির্বাচনীয় জনসভায় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী।