আওয়ামী লীগের স্মার্ট বাংলাদেশের চার স্তম্ভ
- আপডেট সময় : ০৭:২০:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪২২ বার পড়া হয়েছে
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইশতেহার ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজের মাধ্যমে ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত স্মার্ট সোনার বাংলা গড়তে চায় দলটি। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আজ বুধবার সকালে ইশতেহার ঘোষণা করেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের ইশতেহারে আওয়ামী লীগ কীভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করবে—সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারে বলা হয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০২৫, ২০৩১ ও ২০৪১-এর সময়রেখার মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত হয়ে তৈরি করবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ দেশ ও সমাজের উন্নতি নিশ্চিত করবে, গড়ে তুলবে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দেন। স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক, জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিগত এবং উদ্ভাবনী। স্মার্ট বাংলাদেশের রয়েছে চারটি স্তম্ভ—স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ।
স্মার্ট নাগরিক
শতভাগ শিক্ষিত নাগরিকেরা নতুন নতুন জ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং নিজস্ব উদ্ভাবনী শক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে নিজেদের এবং সমাজের সকলের জীবন ও জীবিকার মান বদলে দেবে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট বা কম্পিউটারের মাধ্যমে তারা সমাজের সঙ্গে যুক্ত থাকবে; সরকারি ও বেসরকারি খাত প্রদত্ত পণ্য ও সেবা গ্রহণ করবে; দেশ-বিদেশের অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত থেকে নিজেদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবন ঋদ্ধ করে তুলবে। প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা নিজেদের সমস্যা সমাধান করবে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে।
স্মার্ট অর্থনীতি
স্মার্ট অর্থনীতি ধর্ম, বর্ণ, জাতি, নারী-পুরুষ, শিক্ষা অথবা ভৌগোলিক দূরত্ব নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণের সমান সুযোগ নিশ্চিত করবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবোটিক্সের ব্যবহার হবে কৃষি, শিল্প, সেবা সকল খাতে; ক্ষুদ্র-কুটির ও মাঝারিসহ সকল ব্যবসার পরিবেশ সহজ করা হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশে উদ্ভাবিত সাশ্রয়ী প্রযুক্তি শিল্প-বাণিজ্যে প্রয়োগ উৎসাহিত করার লক্ষ্যে রাষ্ট্র সহায়তা করবে। কমিয়ে ফেলা যাবে কায়িক শ্রম; সম্পদের হবে সুষ্ঠু ব্যবহার; কমবে অপচয়; বাড়বে উৎপাদনশীলতা; খরচ কমবে উৎপাদনের; উৎপাদন হয়ে উঠবে প্রতিযোগিতামূলক; প্রসারিত এবং বৈচিত্র্যময় হবে অভ্যন্তরীণ ও রপ্তানি বাজার। তথ্যপ্রযুক্তি সহযোগে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে নেওয়া যাবে ত্বরিত ও তথ্য নির্ভর সিদ্ধান্ত; সহজে করা যাবে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা; ব্যবস্থাপনা হয়ে উঠবে দক্ষ।
স্মার্ট সরকার
প্রযুক্তির ব্যবহার সরকার পরিচালনা ব্যবস্থাকে দক্ষ, কার্যকর এবং সাশ্রয়ী করে তুলবে। সর্বোপরি সুশাসন প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করবে। সরকারের প্রতিটি সিদ্ধান্তই হবে জ্ঞানভিত্তিক ও তথ্য নির্ভর; প্রতিটি সেবা হবে একটি চাহিদা অনুযায়ী এবং সমন্বিতভাবে। আইওটি, মেশিন লার্নিং, ক্লাউড কম্পিউটিং ইত্যাদি প্রযুক্তির মাধ্যমে সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং অন্যান্য উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যাবলি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে এবং স্মার্ট নাগরিকদের স্মার্ট প্রতিনিধির সঙ্গে যুক্ত হয়ে সরকার পরিচালনার সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করবে। সরকার তথা রাষ্ট্র হয়ে উঠবে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক।
স্মার্ট সমাজ
স্মার্ট বাংলাদেশের প্রযুক্তির মাধ্যমে দূর করা যাবে সব রকম সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য। অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট সমাজে নাগরিকেরা জ্ঞান চর্চা ও প্রয়োগের সুযোগ পাবেন অনেক বেশি। সঠিক তথ্যপ্রবাহের ফলে কমে যাবে ভুল ও মিথ্যা তথ্য প্রচারের মাধ্যমে অনৈতিক সুযোগ। প্রযুক্তি ব্যবহার সংস্কৃতিচর্চা, বিনোদন ও মানসিক উৎকর্ষ সাধনের সময় ও সুযোগ বৃদ্ধি করবে।
ইশতেহারে বলা হয়েছে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য প্রযুক্তি সক্ষমতা খুবই প্রয়োজন। শিল্প উৎপাদনের নতুন ধারায় তুলনীয় সক্ষমতা ছাড়া গ্লোবাল ভ্যালু চেইনে সম্পৃক্ত থাকা সম্ভব নয়। তাই স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য অর্জনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজ অব্যাহত রাখবে এবং সমন্বয় সাধন করবে।