০৮:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেড়েছে আয় বৈষম্য, দারিদ্র্যে কমেছে ৫.৬ শতাংশ

পাঁচ বছরের ব্যবধানে দেশে দারিদ্র্যের হার প্রায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশের মতো কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে। একই সময়ে দ্বিগুণ হারে বেড়েছে পরিবার প্রতি আয় ও ব্যয়। এ সময় বেড়েছে আয় বৈষম্যও, শহরে এই বৈষম্য এখন পৌঁছেছে চরমে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, দেশের একটি পরিবার মাসে গড় আয় করে সাড়ে ৩২ হাজার টাকা। আয়ের বিপরীতে একটি পরিবারের ব্যয় হয় সাড়ে ৩১ হাজার টাকা। অর্থাৎ একটি পরিবার মাসে এক হাজার টাকার মতো সঞ্চয় করেন। এদিকে দেশে দরিদ্র ও অতি দরিদ্র বেশি বরিশাল বিভাগে।

আজ (বুধবার) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের অডিটোরিয়ামে ‘হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভে’ (এইচআইইএস) ২০২২-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন— ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন এনডিসি, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. মো. কাউছার আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এবং মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ এমপিএইচ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উচ্চ ও নিম্ন উভয় দারিদ্র্য রেখার মাধ্যমে প্রাপ্ত হিসাব অনুযায়ী ২০২২ সালে বরিশাল বিভাগে দারিদ্র্যের হার বিভাগগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২২ সালে বরিশালে উচ্চ দারিদ্র্য রেখা অনুযায়ী দারিদ্র্য হার ২৬.৯ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম খুলনা বিভাগে। এই বিভাগে দারিদ্র্যের হার ১৪ দশমিক আট। আর দেশের সার্বিক দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক সাত।

এইচআইই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এখন দেশের ৯৯ দশমিক ৩৪ খানা বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় রয়েছে। যেখানে পল্লী অঞ্চলের রয়েছে ৯৯ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলের ৯৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যা ২০১৬ সালে ছিলো ৭৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। উন্নত টয়লেট ব্যবহারের হার এখন ৯২ দশমিক ৩ শতাংশ।

বিবিএস প্রতিবেদনে জানায়, দেশের প্রতিটি খানার গড় আয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এইচআইইএস ২০২২ জরিপের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী খানার মাসিক গড় আয় ৩২ হাজার ৪২২ টাকা। যা ২০১০ ও ২০১৬ সালের জরিপে ছিল যথাক্রমে ১১ হাজার ৪৭৯ টাকা এবং ১৫ হাজার ৯৮৮ টাকা। এ ছাড়া, এইচআইইএস ২০২২ অনুযায়ী গতবারের তুলনায় এবার প্রতিটি খানার মাসিক আয় বৃদ্ধির সাথে সাথে মাসিক ব্যয়ও বেড়েছে। এইচআইইএস ২০২২ অনুযায়ী, বর্তমানে একটি খানার মাসিক ব্যয় ৩১ হাজার ৫০০ টাকা। যা ২০১০ ও ২০১৬ সালে ছিল যথাক্রমে ১১ হাজার ২০০ টাকা এবং ১৫ হাজার ৭১৫ টাকা।

সংস্থাটি জানায়, এইচআইইএস ২০২২ এর তথ্য-উপাত্ত নিরীক্ষণে দেখা যায় খানায় খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত ব্যয়ের ধারায় পরিবর্তন হয়েছে। খাদ্য বহির্ভূত ব্যয় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ২০২২ সালে খাদ্য ব্যয়ের শতকরা হার ৪৫.৮ শতাংশ, এবং খাদ্য বহির্ভূত ব্যয় ৫৪.২ শতাংশ। যেখানে ২০১৬ সালে খাদ্যের জন্য ব্যয় ছিল ৪৭.৭ শতাংশ এবং খাদ্য বহির্ভূত ব্যয় ৫২.৩ শতাংশ। ২০২২ সালে চালের দৈনিক মাথাপিছু গড় ভোগের পরিমাণ ছিল ৩২৮.৯ গ্রাম; যা ২০১৬ সালে ছিল ৩৬৭.২ গ্রাম এবং ২০১০ সালে ছিল ৪১৬.০ গ্রাম। ২০০৫ সালে ছিল ৪৩৯.৬ গ্রাম এবং ২০০০ সালে ৪৫৮.৫ গ্রাম। অন্যদিকে, সবজি ও মাংসের ব্যবহার ধীরে ধীরে বেড়েছে বলে জানায় বিবিএস।

প্রতিবেদনে আরও বলা গয়, প্রোটিন গ্রহণের গড় পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী দৈনিক মাথাপিছু প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ ৭২.৫ গ্রাম, যা ২০১৬ সালে ছিল ৬৩.৮ গ্রাম। এছাড়া ২০১০ সালে ৬৬.২৬ গ্রাম, ২০০৫ সালে ৬২.৫২ গ্রাম ও ২০০০ সালে ছিল ৬২.৫০ গ্রাম ছিল।

বেড়েছে আয় বৈষম্য, দারিদ্র্যে কমেছে ৫.৬ শতাংশ

আপডেট : ০৭:৪৮:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩

পাঁচ বছরের ব্যবধানে দেশে দারিদ্র্যের হার প্রায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশের মতো কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে। একই সময়ে দ্বিগুণ হারে বেড়েছে পরিবার প্রতি আয় ও ব্যয়। এ সময় বেড়েছে আয় বৈষম্যও, শহরে এই বৈষম্য এখন পৌঁছেছে চরমে। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, দেশের একটি পরিবার মাসে গড় আয় করে সাড়ে ৩২ হাজার টাকা। আয়ের বিপরীতে একটি পরিবারের ব্যয় হয় সাড়ে ৩১ হাজার টাকা। অর্থাৎ একটি পরিবার মাসে এক হাজার টাকার মতো সঞ্চয় করেন। এদিকে দেশে দরিদ্র ও অতি দরিদ্র বেশি বরিশাল বিভাগে।

আজ (বুধবার) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের অডিটোরিয়ামে ‘হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভে’ (এইচআইইএস) ২০২২-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন— ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন এনডিসি, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. মো. কাউছার আহমেদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এবং মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ এমপিএইচ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উচ্চ ও নিম্ন উভয় দারিদ্র্য রেখার মাধ্যমে প্রাপ্ত হিসাব অনুযায়ী ২০২২ সালে বরিশাল বিভাগে দারিদ্র্যের হার বিভাগগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২২ সালে বরিশালে উচ্চ দারিদ্র্য রেখা অনুযায়ী দারিদ্র্য হার ২৬.৯ শতাংশ। আর সবচেয়ে কম খুলনা বিভাগে। এই বিভাগে দারিদ্র্যের হার ১৪ দশমিক আট। আর দেশের সার্বিক দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক সাত।

এইচআইই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এখন দেশের ৯৯ দশমিক ৩৪ খানা বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় রয়েছে। যেখানে পল্লী অঞ্চলের রয়েছে ৯৯ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলের ৯৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যা ২০১৬ সালে ছিলো ৭৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। উন্নত টয়লেট ব্যবহারের হার এখন ৯২ দশমিক ৩ শতাংশ।

বিবিএস প্রতিবেদনে জানায়, দেশের প্রতিটি খানার গড় আয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এইচআইইএস ২০২২ জরিপের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী খানার মাসিক গড় আয় ৩২ হাজার ৪২২ টাকা। যা ২০১০ ও ২০১৬ সালের জরিপে ছিল যথাক্রমে ১১ হাজার ৪৭৯ টাকা এবং ১৫ হাজার ৯৮৮ টাকা। এ ছাড়া, এইচআইইএস ২০২২ অনুযায়ী গতবারের তুলনায় এবার প্রতিটি খানার মাসিক আয় বৃদ্ধির সাথে সাথে মাসিক ব্যয়ও বেড়েছে। এইচআইইএস ২০২২ অনুযায়ী, বর্তমানে একটি খানার মাসিক ব্যয় ৩১ হাজার ৫০০ টাকা। যা ২০১০ ও ২০১৬ সালে ছিল যথাক্রমে ১১ হাজার ২০০ টাকা এবং ১৫ হাজার ৭১৫ টাকা।

সংস্থাটি জানায়, এইচআইইএস ২০২২ এর তথ্য-উপাত্ত নিরীক্ষণে দেখা যায় খানায় খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত ব্যয়ের ধারায় পরিবর্তন হয়েছে। খাদ্য বহির্ভূত ব্যয় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ২০২২ সালে খাদ্য ব্যয়ের শতকরা হার ৪৫.৮ শতাংশ, এবং খাদ্য বহির্ভূত ব্যয় ৫৪.২ শতাংশ। যেখানে ২০১৬ সালে খাদ্যের জন্য ব্যয় ছিল ৪৭.৭ শতাংশ এবং খাদ্য বহির্ভূত ব্যয় ৫২.৩ শতাংশ। ২০২২ সালে চালের দৈনিক মাথাপিছু গড় ভোগের পরিমাণ ছিল ৩২৮.৯ গ্রাম; যা ২০১৬ সালে ছিল ৩৬৭.২ গ্রাম এবং ২০১০ সালে ছিল ৪১৬.০ গ্রাম। ২০০৫ সালে ছিল ৪৩৯.৬ গ্রাম এবং ২০০০ সালে ৪৫৮.৫ গ্রাম। অন্যদিকে, সবজি ও মাংসের ব্যবহার ধীরে ধীরে বেড়েছে বলে জানায় বিবিএস।

প্রতিবেদনে আরও বলা গয়, প্রোটিন গ্রহণের গড় পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী দৈনিক মাথাপিছু প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ ৭২.৫ গ্রাম, যা ২০১৬ সালে ছিল ৬৩.৮ গ্রাম। এছাড়া ২০১০ সালে ৬৬.২৬ গ্রাম, ২০০৫ সালে ৬২.৫২ গ্রাম ও ২০০০ সালে ছিল ৬২.৫০ গ্রাম ছিল।