আমেরিকা তো আমার বিরুদ্ধে লেগেই থাকে: শেখ হাসিনা
- আপডেট সময় : ০৭:৩৯:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪০৬ বার পড়া হয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারও সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করে ক্ষমতায় যেতে হবে ওই চিন্তা আমি করি না। আমেরিকা তো আমার বিরুদ্ধে সারাক্ষণ লেগেই থাকে, তাতে কিছু যায় আসে না।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত ৮টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুকসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচার হওয়া ‘লেটস টক উইথ শেখ হাসিনা’ এসব কথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) টক শোটির আয়োজন করে।
সিআরআই বলছে, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে বরাবরই তরুণ প্রজন্মকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ। এ কারণেই তরুণদের সঙ্গে আবারো মুখোমুখি আলোচনায় বসেছেন শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারও সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করে ক্ষমতায় যেতে হবে ওই চিন্তা আমি করি না। ওরাতো (আমেরিকা) লেগেই আছে আমার বিরুদ্ধে সারাক্ষণ তাতে কিছু আসে যায় না। জনগণের শক্তি বড় শক্তি। তারা ইলেকশনের ব্যাপারে অনেক কথা বলে। যখন তাদের প্রশ্ন করা হয় এই যে, বিএনপি ট্রেনে আগুন মা শিশু পুড়িয়ে ফেলল। এ ব্যাপারে তাদের মুখ বন্ধ। এদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে এদের নিজেদেরই একসময় খেসারত দিতে হবে। এটা হল বাস্তবতা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ তো একমাত্র গ্যাস। আমি যখন ৯৬ সালে সরকারে আসি তখন ইন্টারন্যাশনাল টেন্ডার দিয়ে অনেক কোম্পানি আসে। আমেরিকান কোম্পানিও এখানে তখন গ্যাস উত্তোলন করে। তখন একটা প্রস্তাব আসল যে এই গ্যাস বিক্রি করে দিতে হবে। আমি এতে আপত্তি করলাম। সেই আপত্তি করার খেসারত আমাকে দিতে হয়েছে। ২০০১ এর নির্বাচনে আমাকে আসতে দেওয়া হয়নি। আমার দেশের ভেতর আর বাইরের চক্রান্ত এক হয়ে গেল। তো এরকম কিছু ব্যাপার আছে। এরা সবসময় হস্তক্ষেপ করতে চায়।’
‘আজকে মানবাধিকার কথা নিয়ে তারা (আমেরিকা) প্রশ্ন তোলে। শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা তোলে। দুর্ভাগ্যের বিষয়টি হলো- নিজের দেশের দিকে তাকায় না, জাতিসংঘে আমি ফিলিস্তিনি ইস্যুটা তুলেছিলাম। ইইউতেও আমি যখন গেলাম তখন খুব শক্তভাবে এই প্রশ্নটা তুলেছিলাম ফিলিস্তিনি শিশু ও নারীদের মারা হচ্ছে, এখন কেনো সবাই চুপ। এমনকি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের দুই দুই বার যুদ্ধ বন্ধের জন্য যে প্রস্তাব আসে তাতে আমেরিকা ভেটো দিল। আমেরিকায় মানুষের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু তারা অন্য জায়গায় এসে খবরদারি করে।’
স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় কাজগুলো চালাব। এতে আমাদের কর্মঘণ্টা বাঁচবে। যোগাযোগ যাতায়ের সমস্যা হবে না। সেইসঙ্গে আমি চাই আমাদের সোসাইটির সবাই ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করুক। এখন তো পেনশন থেকে শুরু করে বিল দেওয়া পর্যন্ত সমস্ত কাজ অনলাইনে করছে সবাই। এমনকি, আমি যে প্রথমবার ক্ষমতায় এসে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি করেছিলাম তা আমরা অনলাইনে দিয়ে দেই। এখন আমাদের ৬ লাখ ৮০ হাজার ছেলে মেয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে অর্থ উপার্জন করে।’
ট্যুরিজম সেক্টর নিয়ে সরকারের কোনো বড় পরিকল্পনা রয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার একটা প্ল্যান আছে যে, আমরা বাইরের কোনো দেশকে একটা অংশ দেব। তারা ওখানে ইনভেস্টমেন্ট করবে। সেটা শুধু বিদেশি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তাহলে বিদেশি পর্যটকেরা আমাদের দেশে আসবে। এখনও বিদেশিরা আসে কিন্তু তারা ওই সুযোগটা পায় না। আরেকটা বিষয় নিয়ে নেপালের সাথে আমার আলোচনা হয়েছে। আমরা যৌথভাবে কীভাবে ট্যুরিজমটা উন্নত করা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা করেছি। এমনকি মালদ্বীপের সাথেও আমরা নৌ-ভ্রমণের ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করছি। আমরা করে যাচ্ছি তবে আমাদের আরও পরিকল্পিতভাবে করতে হবে। আর তোমাদের মতো তরুণ প্রজন্মরাও এ নিয়ে ধারণা দাও। তোমরা পরিকল্পনা করবা আমি সেটাই চাই।’