নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে আন্তর্জাতিকভাবে অনেকে জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) গোপালড়ঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় এমন কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থেকে টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাঠিয়েছে। কিন্তু ভাগ্য পরিবর্তনে আওয়ামী লীগ যখনই কাজ শুরু করে বিএনপি তখন বারবার বাধা সৃষ্টি করেছে। তারপরও আপনারা আমাকে আগলে রেখেছেন। সেজন্য আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি বলেন, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে আন্তর্জাতিকভাবে অনেকে জড়িত। নির্বাচনে জয়ী হলে লন্ডনে বসে বাসে আগুন দেয়ার হুকুমদাতাকে ধরে এনে বিচার করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের এই ভালোবাসা, আপনাদের এই সমর্থন আমার একমাত্র শক্তি। তিনি আরও বলেন, এখানে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে চলতে হয়েছে, তারপরও আপনারা আমাকে আগলে রেখেছেন। সেজন্য আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
‘এই বাংলাদেশেকে নিয়ে যে স্বপ্ন ছিল আমার বাবার, আমি প্রাণপণ চেষ্টা করে গেছি, আমি নিজের দিকে তাকাইনি।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারে আয়োজিত এই জনসভায় নিজের ওপর বারবার হামলা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বারবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে আমাকে। মানবঢাল করে আওয়ামী লীগ আমাকে রক্ষা করেছে।
বিএনপির চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের আন্দোলন হলো মানুষ পোড়ানোর, ক্ষতি করার। বিএনপি হচ্ছে খুনিদের পার্টি আর জামায়াত হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের পার্টি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দেশে সন্ত্রাস করা। বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেশপ্রেম নেই। তারা দেশের শত্রু। দেশকে কিছু দেবার যোগ্যতাই তাদের নেই।’
লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধরে এনে সাজা কার্যকর করার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘লন্ডনে বসে জুয়া খেলে আর লাম্পট্য করে দলের নেতাদের দেশে আগুন সন্ত্রাসের হুকুম দিচ্ছে। আগামীতে সুযোগ পেলে তাকে ধরে সাজা কার্যকর করা হবে।’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এ জনসভার আয়োজন করা হয়। টুঙ্গিপাড়া প্রধানমন্ত্রীর নিজ নির্বাচনি এলাকা। জনসভায় নিজের জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নানামুখী উন্নয়ন কাজের বিবরণ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছি। আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছি। একইসঙ্গে স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা নির্মাণ করেছি।’
জনসভামঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে টুঙ্গিপাড়ার জনসভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা জনসভা স্থলে পৌঁছালে হাজার হাজার মানুষ তাদের অভিনন্দন জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ও তার বোন হাত উঁচু করে এবং মঞ্চে ঘুরে ঘুরে জনসভায় উপস্থিত জনসাধারণের অভিনন্দনের জবাব দেন।
শনিবার সকাল থেকেই টুঙ্গিপাড়াসহ আশেপাশের এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে আসতে শুরু করেন। সকাল সোয়া নয়টার মধ্যেই জনসভাস্থল লোকে লোকারণ্যে পরিণত হয়।