বিদায়ী বছরে রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণহানি ৪২ জনের
- আপডেট সময় : ০৩:৪৪:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪৩০ বার পড়া হয়েছে
বিদায়ী ২০২৩ সালে সারাদেশে ৪০০টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় ৪২ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আর এসব সহিংসতার ঘটনায় ৪ হাজার ৭৭১ জন আহত-গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)৷
রোববার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) আয়োজিত বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৩: এমএসএফের পর্যবেক্ষণ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন এমএসএফের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট সাঈদুর রহমান। তিনি জানান, চলতি বছরে নির্বাচনী সহিংসতার ১৩৮টি ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। মুখোশ পরে গুপ্ত হামলার ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন।
এছাড়া ২০২৩ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ১৫টি ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্বারা অপহরণের অভিযোগ এসেছে ৮৯টি। এ বছরে পুলিশ হেফাজতে ১৭ জন, কারা হেফাজতে ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরে অজ্ঞাতনামা ৩৫২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বছর সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে ৬২টি। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬৩ জন। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২৭ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩২ জন। তবে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা কমে এসেছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৮১, এ বছর তা নেমে এসেছে ৬৩-তে।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রতিষ্ঠাতা সুলতানা কামাল মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সরকারের উদাসীনতায় হতাশা প্রকাশ করে বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় রাষ্ট্র যে খুব বেশি মনোযোগী হয়েছে, এ কথা আমরা বলতে পারি না। যখন আমরা মানবাধিকারের কথা বলছি সরকার অনেক বেশি ডিফেন্সিভ কথাবার্তা বলেছে, আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলেছে। যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেছে তাদেরকে একটি বৈরিতায় জায়গায় নিয়ে গেছে। রাষ্ট্র মানবাধিকার সুরক্ষার কোনো দায়দায়িত্বে নাই। বরং মনে হয়েছে মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাদের বিরক্ত করেছি, তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। তারা মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ কখনো গ্রহণ করেনি।
সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকেই বেশি মনোযোগী হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমাজে মানবাধিকারের নীতি বা বোধ জাগাতে তারা সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কোনো কর্মসূচি তাদের নেই। কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেই চলবে, মানুষের মন মানসিকতার উন্নয়নের বিষয়ে তাদের কোনো দায়দায়িত্ব নাই।
মানবাধিকার ইস্যুতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুলতানা কামাল বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তোলা হয়নি, তাদের অন্তর্নিহিত অনেক দুর্বলতা রয়েছে। যেখানে মানবাধিকার ইস্যুতে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা সর্বজনগ্রাহ্য নাগরিক ব্যক্তিত্বদের, সেখানে বছরের পর বছর নেতৃত্বে অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের অর্থনৈতিক যে ব্যবস্থাপনা, তাদের যে জনবল, তাদের যে তদন্ত করার ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। এ কমিশনের কাজগুলো হওয়ার কথা প্যারিস প্রিন্সিপালের আলোকে, তবে প্যারিস প্রিন্সিপালের নীতিগুলো ফলো করা হয়নি। এ কারণে আমরা যথেষ্ট শক্তিশালী, স্বাধীন কমিশন তৈরি করতে পারিনি।