জাপানের রাজধানী টোকিওর ব্যস্ততম হানেদা বিমানবন্দরে দুটি উড়োজাহাজের সংর্ঘষে মুহূর্তের মধ্যে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। জাপান এয়ারলাইনসের (জাল) যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে ১২ ক্রুসহ যাত্রী ছিল ৩৭৯ জন। অন্যদিকে দেশটির উপকূল রক্ষাকারী কোস্টগার্ডের অপেক্ষাকৃত ছোট উড়োজাহাজটিতে আরোহী ছিলেন ছয়জন। তাদের মধ্যে একজন বেঁচে গেলেও দগ্ধ হয়ে মারা যান পাঁচজনই। তবে অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে যায় বিশালাকার উড়োজাহাজের সব যাত্রী। সামান্য আহত হয়েছেন ১৭ যাত্রী। খবর সিএনএন।
জাপানের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, হানেদা বিমানবন্দরে অবতরণের পর রানওয়েতে থাকা জাপানের উপকূলরক্ষী বাহিনীর একটি বিমানের সাথে জাপান এয়ারলাইন্সের যাত্রীবাহী ওই বিমানটির সংঘর্ষ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় রানওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা কোস্টগার্ডের উড়োজাহাজের সঙ্গে সংঘর্ষের পর মুহূর্তে জাল ফ্লাইট-৫১৬ এর পুরো পেসেঞ্জার কেভিনে আগুনের কুণ্ডলী ছড়িয়ে পড়ে। উড়োজাহাজটি কিছু দূর এগিয়ে রানওয়ের ঢালে গিয়ে থেমে যায়। এসময় অনেক যাত্রী আগুনের শিখা থেকে বাঁচতে লাফিয়ে পড়েন। এদিকে উদ্ধারকর্মীরা দ্রুততার সঙ্গে ধাও ধাও করে জ্বলতে থাকা উড়োজাহাজটির সামনের দুই পাশে জরুরি (স্লাডিং) বহির্গমন খুলে দেয়। এতে করে ক্রুসহ অন্যসব যাত্রী নেমে আসেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যে ভয়াবহ আগুনের উড়োজাহাজের পেছনের অংশ আলাদা হয়ে যায়।
https://twitter.com/i/status/1742119103668646336
চ্যানেল নিপ্পন টিভি বলছে, মঙ্গলবার টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরে উপকূলরক্ষী বাহিনীর একটি বিমানের সাথে সম্ভাব্য সংঘর্ষের পর জাপান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে আগুন ধরে গেছে। অগ্নিকাণ্ডের সময় যাত্রীরা বিমানে ছিলেন।
এনএইচকে বলেছে, আগুন ধরে যাওয়া জাপান এয়ারলাইন্সের জেএএল-৫১৬ ফ্লাইটটি হোক্কাইডো বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করেছিল। পরে সেটি হানেদা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
জাপান এয়ারলাইন্সের একজন মুখপাত্র ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, হোক্কাইডোর শিন চিটোসে বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় ৩০০ জনের বেশি যাত্রীকে নিয়ে যাত্রা করেছিল জেএএল-৫১৬। হানেদা বিমানবন্দরে বিমানটির অবতরণের সময় নির্ধারিত ছিল ৫টা ৪০ মিনিট।
কোস্টগার্ডের উড়োজাহাজটি ভয়াবহ ভূমিকম্পে লণ্ডভণ্ড দেশটির দূর্গম অঞ্চলে উদ্ধার অভিযানের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কোস্টগার্ড বাহিনী বলেছে, তাদের বোম্বার্ডিয়ার ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজে ছয় কর্মকর্তা ছিলেন। তারা ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত নোটো উপদ্বীপে সহায়তা সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার জন্য নিগাতা বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া অপরজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
https://twitter.com/i/status/1742141372310700067
রয়টার্সক বলছে, হোক্কাইডোর শিন চিটোসে বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় ৩০০ জনের বেশি যাত্রীকে নিয়ে যাত্রা করেছিল জেএএল-৫১৬। বিবিসি বলছে, হানেদা বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের শিকার জাপান এয়ারলাইন্সের ওই বিমানে ৩৭৯ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন। তাদের সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে দেশটির এই বিমানসংস্থা বলেছে, ‘‘আমরা বর্তমানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মূল্যায়ন করছি।’’