আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আগামী ৭ জানুয়ারি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। দেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এটি মাইলফলক স্থাপন করবে। জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবে এবং তাদের বিজয়ী করবে। এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে আজ বুধবার (৩ জানুয়ারি) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাঁচটি জেলা ও একটি উপজেলায় দলের নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি। আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের সহযোগিতা করুন। আমরা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে দেশে একটি স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। এদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে। দেশবাসী এর সুফলও পাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই নির্বাচন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রার পথ প্রশস্ত করবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, এই নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অনেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে অনেক খেলা খেলতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, তারা জয় বাংলা স্লোগান ও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করে, তারা দেশকে ধ্বংস করে দেবে। তারা এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে। সুতরাং আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, কেউ যেন আর এ ধরনের খেলা খেলতে না পারে তা নিশ্চিত করা।
শেখ হাসিনা বলেন, জনগণকে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে।এখানে, কেউ কাউকে প্রতিরোধ করতে পারে না। আমি কোনো ধরনের সংঘাত চাই না। আমাদের সেই পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। আওয়ামী লীগের স্লোগান হচ্ছে, ‘আমি যাকে চাই তাকে ভোট দেব।’
নির্বাচন সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নৌকা মার্কার প্রার্থী রয়েছে। এর বাইরেও আমরা নির্বাচন সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। কাজেই আপনারা আপনাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দেবেন। কিন্তু কোনোরকম গণ্ডগোল আমি চাই না। কোনো ধরনের সহিংসতা যেন না হয়, সর্বোচ্চ সহনশীলতা দেখাতে হবে। নির্বাচনে যারা যার ভোট শান্তিমতো দেবে, সেই পরিবেশ আমরা সৃষ্টি করে দিয়েছি। ভোটের পরিবেশটা আমাদের ঠিক রাখতে হবে। কারণ আমাদের সবার মনে রাখতে হবে, এ নির্বাচনটা বাংলাদেশের জন্য একান্ত জরুরি। কারণ বাংলাদেশকে নিয়ে অনেকেই অনেক রকম খেলা খেলতে চায়। এদেশের ভাগ্য নিয়ে যাতে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন যাতে ইতিহাসের মাইলফলক হয়ে থাকে, আমাদের সেই চেষ্টাই করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সুতরাং দয়া করে আপনার পছন্দ মতো প্রার্থীকে ভোট দিন। আমি কোনো বিশৃঙ্খলা চাই না। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন না ঘটে এবং সবাইকে সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। এ নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি থাকা উচিত নয়।
রেললাইনসহ বিভিন্ন ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে বলেন, বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মের জবাব দিতে হবে বাংলাদেশের জনগণকে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আমরা সফল হব এবং জনগণই বিজয়ী হবে।
পরে শেখ হাসিনা গাইবান্ধা, রাজশাহী, টাঙ্গাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা জেলা এবং চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।