০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাপানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬২, আরও ভূমিকম্পের শঙ্কা

জাপানের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬২ জনে দাঁড়িয়েছে। আজ বুধবারেও উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দল। এরই মধ্যে আরও ভূমিকম্প, ভূমিধস ও বৃষ্টিপাতের শঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে জাপান কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

নববর্ষের প্রথম দিন গত সোমবার জাপান সাগরের নোটো অঞ্চলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ১৫৫বার ভূকম্পন অনুভূত হয়। এরপর ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের ওয়াজিমা শহরে ১ দশমিক ২ মিটার উচ্চতার সুনামি আঘাত হানে। এতে অনেক ভবন ধসে পড়ে এবং রাস্তায় ফাটল সৃষ্টি হয়। একই সময়ে অগ্নিকাণ্ডেরও সৃষ্টি হয়েছিল।

ভূমিকম্পের আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে নোটো উপদ্বীপ। সেখানে শতাধিক ভবন আগুনে পুড়ে গেছে এবং অসংখ্য ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করলেও পরবর্তীতে তা তুলে নেয় জাপানের আবহাওয়া সংস্থা।

জাপান সরকার গতকাল মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৬২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে এবং ২২ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে। এ ছাড়া অন্তত ৩১ হাজার ৮০০ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে বলেও জানিয়েছে জাপানি কর্তৃপক্ষ।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ভূমিকম্পের পরপরই জরুরি বৈঠকে বসেন এবং সেনাবাহিনীকে উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন। জাপানের সরকারি গণমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, আজ বুধবারেও জরুরি টাস্কফোর্সের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী কিশিদার।

এদিকে জাপান আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) আজ বুধবার নোটো অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, আজ সন্ধ্যার মধ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।

উপকূলীয় শহর সুজুতে মেয়র মাসুহিরো ইজুমিয়া বলেন, ভূমিকম্পে আমাদের এ অঞ্চলের প্রায় কোনো বাড়িই আর দাঁড়িয়ে নেই। সব ধসে পড়েছে। ৯০ শতাংশ বাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এর মধ্যে বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও বিপর্যয়কর হয়ে উঠবে।

স্থানীয় জনপরিষেবা সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর ইশিকাওয়া প্রায় ৩৪ হাজার পরিবার বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং এখনো অনেক পরিবার বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। অনেক জায়গায় পানি সরবরাহের লাইনও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রায় ২৪ ঘণ্টার বন্ধ থাকার পর শিনকানসেন বুলেট ট্রেন পুনরায় চলতে শুরু করেছে।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক ৬ বললেও মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। গত দুই দিনে এই অঞ্চলে ২১০টির বেশি ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।

ভৌগলিকভাবে চারটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের সঙ্গমস্থলে অবস্থিত জাপান। ফলে জাপানকে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সারা বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার যেসব ভূমিকম্প হয়, তার প্রায় ২০ শতাংশ জাপানে হয়ে থাকে। সে কারণে ভূমিকম্প–সহিষ্ণু অবকাঠামো তৈরির ওপর ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করেছে জাপান।

শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা

জাপানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৬২, আরও ভূমিকম্পের শঙ্কা

আপডেট : ০৬:২৯:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৪

জাপানের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬২ জনে দাঁড়িয়েছে। আজ বুধবারেও উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দল। এরই মধ্যে আরও ভূমিকম্প, ভূমিধস ও বৃষ্টিপাতের শঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে জাপান কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

নববর্ষের প্রথম দিন গত সোমবার জাপান সাগরের নোটো অঞ্চলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ১৫৫বার ভূকম্পন অনুভূত হয়। এরপর ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের ওয়াজিমা শহরে ১ দশমিক ২ মিটার উচ্চতার সুনামি আঘাত হানে। এতে অনেক ভবন ধসে পড়ে এবং রাস্তায় ফাটল সৃষ্টি হয়। একই সময়ে অগ্নিকাণ্ডেরও সৃষ্টি হয়েছিল।

ভূমিকম্পের আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে নোটো উপদ্বীপ। সেখানে শতাধিক ভবন আগুনে পুড়ে গেছে এবং অসংখ্য ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করলেও পরবর্তীতে তা তুলে নেয় জাপানের আবহাওয়া সংস্থা।

জাপান সরকার গতকাল মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৬২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে এবং ২২ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে। এ ছাড়া অন্তত ৩১ হাজার ৮০০ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে বলেও জানিয়েছে জাপানি কর্তৃপক্ষ।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ভূমিকম্পের পরপরই জরুরি বৈঠকে বসেন এবং সেনাবাহিনীকে উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন। জাপানের সরকারি গণমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, আজ বুধবারেও জরুরি টাস্কফোর্সের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী কিশিদার।

এদিকে জাপান আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) আজ বুধবার নোটো অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, আজ সন্ধ্যার মধ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।

উপকূলীয় শহর সুজুতে মেয়র মাসুহিরো ইজুমিয়া বলেন, ভূমিকম্পে আমাদের এ অঞ্চলের প্রায় কোনো বাড়িই আর দাঁড়িয়ে নেই। সব ধসে পড়েছে। ৯০ শতাংশ বাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এর মধ্যে বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও বিপর্যয়কর হয়ে উঠবে।

স্থানীয় জনপরিষেবা সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর ইশিকাওয়া প্রায় ৩৪ হাজার পরিবার বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং এখনো অনেক পরিবার বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। অনেক জায়গায় পানি সরবরাহের লাইনও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রায় ২৪ ঘণ্টার বন্ধ থাকার পর শিনকানসেন বুলেট ট্রেন পুনরায় চলতে শুরু করেছে।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক ৬ বললেও মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। গত দুই দিনে এই অঞ্চলে ২১০টির বেশি ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।

ভৌগলিকভাবে চারটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের সঙ্গমস্থলে অবস্থিত জাপান। ফলে জাপানকে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সারা বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার যেসব ভূমিকম্প হয়, তার প্রায় ২০ শতাংশ জাপানে হয়ে থাকে। সে কারণে ভূমিকম্প–সহিষ্ণু অবকাঠামো তৈরির ওপর ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করেছে জাপান।