একতরফা প্রহসনের ভোটের প্রতিবাদে সকাল ১১ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত প্রেসক্লাবের সামনে মুখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান কর্মসূচি পালন ও মিছিল করেছে গণঅধিকার পরিষদ। অবস্থান কর্মসূচিতে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুলহক নুর বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ,সুষ্ঠু নির্বাচনের গণদাবি উপেক্ষা করে জনবিচ্ছিন্ন সরকার দেশে একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েমে এই একতরফা নির্বাচন করেছে। নিজেরা নিজেরা নির্বাচন করেছে সেখানেও কেন্দ্র দখল,জোরজবরদস্তি করে ব্যালটে সিল মারা, শিশুদের দিয়ে ভোটদান, গোলাগুলি, মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। দেশের ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষ ভোট বর্জন করে এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে।
নুর অভিযোগ করে বলেন, সিইসি বিকেল ৩ টার সময় একবার বললেন ২৮% এর মতো ভোট পড়েছে, ১ ঘন্টা পর বললেন ৪০%। প্রকৃত অর্থে ১০% ভোট পড়েছে কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ আছে। আমরা আগে থেকেই বলে আসছি লোকজন ভোট না দিলেও এরা ৬০%- ৪০% ভোট মিলিয়ে দেখাবে। কাজেই ভোট কতো পারসেন্ট পড়েছে, কারা ভোট দিয়েছে, কারা প্রার্থী হয়েছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করার অবকাশ নাই। অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় থাকতে জনমতের বাইরে এই ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে। আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা, মন্ত্রীদের কথা শুনে লজ্জা লাগে ,ওবায়দুল কাদের বললেন ভোটের মাধ্যমে নাকি তাদের বিজয় হয়েছে। তর্কের খাতিরে আপনাদের কথা যদি ধরেও নেই যে ৪০% ভোট পড়েছে তাহলেও তো সংখ্যা গরিষ্ঠ ৬০% মানুষ আপনাদের প্রত্যাখান করেছে। কিভাবে বলেন জনগণ আপনাদের ভোট দিয়েছে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ৭ জানুয়ারি ফেলানি হত্যা দিবস, সেই দিন কেন নির্বাচনের তারিথ ঠিক করা হলো। আগে/পরেও তো করা যেতো। ফেলানি হত্যাসহ সীমান্ত হত্যার কথা মানুষের মন থেকে ভুলিয়ে দিতেই ৭ জানুয়ারি ফেলানি হত্যা দিবসে ভারতীয় মদদে এই প্রহসনের ভোটের তারিখ ঠিক করা হয়েছে। ৬৩ টি রাজনৈতিক দল এই নির্বাচন বর্জন করেছে। ২০১৪ ও ১৮ সালে ভোটের পর সেভাবে আন্দোলন হয়নি। বিএনপিসহ সকলকে বলবো, এবার আর ভুল করা যাবে না। ৮০ থেকে ৯০ ভাগ জনগণ আমাদের সাথে আছে। ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আন্দোলনের গনঅভ্যুত্থানেই এই সরকারের পতন হবে। বিএনপিসহ নির্বাচন বর্জনকারী সকল দলসমূহকে নিয়ে নতুনভাবে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে। আমরা রাজপথে আছি,বিজয় অর্জন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ থেকে ফিরবো না।
দলের সাধারণ সম্পাদক মো: রাশেদ খাঁন বলেন, এখন বিরোধীদল খোঁজা হচ্ছে। কে হবে বিরোধীদল, জাতীয় পার্টি নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা? এমনও হতে পারে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দিয়ে আওয়ামীলীগ দলের ঘোষণা দেওয়ায়ে বিরোধীদল বানাতে পারে। বিদেশি পর্যবেক্ষকরা বলছে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, তবে উত্তর কোরিয়া মডেলে নির্বাচন হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিকে আওয়ামীলীগ ধ্বংস করেছে। এটা কোন নির্বাচন? শুধুমাত্র ভোটের অধিকার জন্য পাকিস্তান দুই ভাগ হয়েছে। এখন গণতন্ত্র হরণের জন্য আমাদের কি করা উচিত ? এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমারা দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই।
জাতীয় পার্টি তার বেইমানির ফল পেলো, ১১ টি আসন! তাও আওয়ামীলীগ ছাড় না দিলে ১ টি আসনও পেতো না। অন্যান্য যারা জাতির সাথে বেইমানি করেছে, তারাও পাশ করতে পারেনি। এটাই বেইমানির ফল। বাংলাদেশের রাজনীতি ভারত থেকে নির্ধারিত হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশকে আমরা ভারতের অঙ্গরাজ্য হতে দিবো না। দেশের মানুষকে বলবো, আর কত চুপ থাকবেন? গতকাল যে ডামি ভোট হয়েছে, কৃত্রিম লাইন তৈরি করেছে, কারচুপির দেখে রাতে ঘুমাতে পারিনি। কোন সুস্থ মানুষ এই নির্বাচন মেনে নিতে পারেনা। এই নির্বাচন দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবেনা। এই রাষ্ট্রে পচন ধরেছে, সুস্থতার জন্য আন্দোলনের বিকল্প নেই। সব প্রতিষ্ঠান আওয়ামীলীগ ধ্বংস করেছে। আপনারা রাজপথে নামুন শান্তিপূর্ণ গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই সরকারের পতন হবে।