১২:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, বৈরিতা নয় : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা আমাদের দেশের উন্নয়ন চাই। আমাদের উন্নয়নে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেন আমি সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে আজকের এ জায়গায় এসেছি। আমার পিতাও তাঁর জীবনটা এদেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করে গেছেন। আমি আমার পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

আজ সোমবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভা শুরু হয়েছে। এ মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সভার শুরুতে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহমূলক হতে পারে, সেটা আমরা দেখিয়েছি। আপনারা (বিদেশি পর্যবেক্ষক) আসার মাধ্যমে আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা আরও বেশি শক্তিশালী করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা এখন আশাবাদী যে আমরা সরকার গঠন করব। আমরা উন্নয়শীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমরা সেই প্রস্তুতি আগে থেকেই নিয়েছি। বাকি কাজটাও করতে হবে। যদি আমাদের আরও অনেক কাজ বাকি আছে। দারিদ্র্য বিমোচনে আমাদের আর নানা কর্মসূচি হাতে রয়েছে।

তার ভবিষ্যত লক্ষ্য সম্পর্কে শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমার লক্ষ্য একটি মানুষও হতদরিদ্র থাকবে না। এখন আমাদের লক্ষ্য হলো স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। তরুণ প্রজন্মকে কারিগরি শিক্ষায় আরও প্রশিক্ষিত করা।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে আজকের এ জায়গায় এসেছি। আমার পিতাও তাঁর জীবনটা এদেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করে গেছেন। আমি আমার পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

বিভিন্ন দেশ থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসা পর্যবেক্ষকদের ধন্যবাদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমার পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছি। ঘাতকরা আমার বাবা, মা ও ভাইদের নির্মমভাবে হত্যা করে। আমি ও আমার ছোট বোন বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যাই। আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশে গণতন্ত্র উদ্ধার, ভোটের অধিকার ও মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে দেশে ফিরে আসি। জনগণের কথা বলতে গিয়ে আমি অনেকবার গ্রেপ্তার হয়েছি, নির্যাতনের শিকার হয়েছি, কিন্তু দমে যাইনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছি। আমি আমার দলকে গুছিয়েছি। একইসঙ্গে মানুষের কাছে গিয়েছি।

বক্তব্য শেষে সরকারের লক্ষ্য-উদ্দেশ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমি স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট সমাজ ও স্মার্ট অর্থনীতি গঠন করতে চাই।

সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নতুন সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে—এমন এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমার দেশের নাগরিক অনেক স্মার্ট। আমরা দেশের উন্নয়নে কাজ করছি, এটা অব্যাহত থাকবে।

ড. ইউনূসের বিষয়ে সরকারের মনোভাব সম্পর্কে জানতে চান একজন বিদেশি সাংবাদিক। এ বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এটা বাংলাদেশের লেবার কোর্টের বিষয়। তিনি লেবার আইন-লংঘন করেছেন। এ কারণেই আদালত তাকে শাস্তি দিয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের কোনো হাত নেই।

ভারতের মোদী সরকারের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক প্রত্যাশা করছেন ও কী ধরনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন—প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র। ১৯৭১ সালে ভারত আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে। এ ছাড়া ঘাতকরা আমার বাবা, মা ও ভাইদের হত্যা করার পর আমাকে ও আমার ছোট বোনকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে, আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ। ভারতের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় যেসব সমস্যা রয়েছে, তার অনেকগুলো সমাধান হয়েছে। বাকিগুলোও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি খুবই লিবারেল। আমাদের এখানে আমি টেলিভিশন ও পত্রপত্রিকাগুলোকে স্বাধীন করে দিয়েছি। এখানে সবাই সব ধরনের মতামত ব্যক্ত করতে পারে।

২৯৯ আসনের মধ্যে একটি বাদে এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে মোট ২৯৮ আসনের ফলাফল। সেই ফলাফলে ২২২ আসন নিয়ে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। চমক দেখিয়ে ৬২ জন স্বতন্ত্রপ্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। আর একাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধীদল জাতীয় পার্টি (জাপা) এবার বিজয়ের দেখা পেয়েছে মাত্র ১১টি আসনে। এদিকে, কল্যাণ পার্টি একটি এবং মহাজোটের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি পেয়েছে একটি করে মোট দুটি আসন।

সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, বৈরিতা নয় : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট : ১০:৫৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৪

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আমরা আমাদের দেশের উন্নয়ন চাই। আমাদের উন্নয়নে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেন আমি সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে আজকের এ জায়গায় এসেছি। আমার পিতাও তাঁর জীবনটা এদেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করে গেছেন। আমি আমার পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

আজ সোমবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভা শুরু হয়েছে। এ মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সভার শুরুতে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহমূলক হতে পারে, সেটা আমরা দেখিয়েছি। আপনারা (বিদেশি পর্যবেক্ষক) আসার মাধ্যমে আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা আরও বেশি শক্তিশালী করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা এখন আশাবাদী যে আমরা সরকার গঠন করব। আমরা উন্নয়শীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমরা সেই প্রস্তুতি আগে থেকেই নিয়েছি। বাকি কাজটাও করতে হবে। যদি আমাদের আরও অনেক কাজ বাকি আছে। দারিদ্র্য বিমোচনে আমাদের আর নানা কর্মসূচি হাতে রয়েছে।

তার ভবিষ্যত লক্ষ্য সম্পর্কে শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমার লক্ষ্য একটি মানুষও হতদরিদ্র থাকবে না। এখন আমাদের লক্ষ্য হলো স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। তরুণ প্রজন্মকে কারিগরি শিক্ষায় আরও প্রশিক্ষিত করা।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে আজকের এ জায়গায় এসেছি। আমার পিতাও তাঁর জীবনটা এদেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করে গেছেন। আমি আমার পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

বিভিন্ন দেশ থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসা পর্যবেক্ষকদের ধন্যবাদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমার পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছি। ঘাতকরা আমার বাবা, মা ও ভাইদের নির্মমভাবে হত্যা করে। আমি ও আমার ছোট বোন বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যাই। আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশে গণতন্ত্র উদ্ধার, ভোটের অধিকার ও মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে দেশে ফিরে আসি। জনগণের কথা বলতে গিয়ে আমি অনেকবার গ্রেপ্তার হয়েছি, নির্যাতনের শিকার হয়েছি, কিন্তু দমে যাইনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করছি। আমি আমার দলকে গুছিয়েছি। একইসঙ্গে মানুষের কাছে গিয়েছি।

বক্তব্য শেষে সরকারের লক্ষ্য-উদ্দেশ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমি স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট সমাজ ও স্মার্ট অর্থনীতি গঠন করতে চাই।

সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নতুন সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে—এমন এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমার দেশের নাগরিক অনেক স্মার্ট। আমরা দেশের উন্নয়নে কাজ করছি, এটা অব্যাহত থাকবে।

ড. ইউনূসের বিষয়ে সরকারের মনোভাব সম্পর্কে জানতে চান একজন বিদেশি সাংবাদিক। এ বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এটা বাংলাদেশের লেবার কোর্টের বিষয়। তিনি লেবার আইন-লংঘন করেছেন। এ কারণেই আদালত তাকে শাস্তি দিয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের কোনো হাত নেই।

ভারতের মোদী সরকারের সঙ্গে কী ধরনের সম্পর্ক প্রত্যাশা করছেন ও কী ধরনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন—প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র। ১৯৭১ সালে ভারত আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে। এ ছাড়া ঘাতকরা আমার বাবা, মা ও ভাইদের হত্যা করার পর আমাকে ও আমার ছোট বোনকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে, আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ। ভারতের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় যেসব সমস্যা রয়েছে, তার অনেকগুলো সমাধান হয়েছে। বাকিগুলোও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি খুবই লিবারেল। আমাদের এখানে আমি টেলিভিশন ও পত্রপত্রিকাগুলোকে স্বাধীন করে দিয়েছি। এখানে সবাই সব ধরনের মতামত ব্যক্ত করতে পারে।

২৯৯ আসনের মধ্যে একটি বাদে এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে মোট ২৯৮ আসনের ফলাফল। সেই ফলাফলে ২২২ আসন নিয়ে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। চমক দেখিয়ে ৬২ জন স্বতন্ত্রপ্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। আর একাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধীদল জাতীয় পার্টি (জাপা) এবার বিজয়ের দেখা পেয়েছে মাত্র ১১টি আসনে। এদিকে, কল্যাণ পার্টি একটি এবং মহাজোটের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ও বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি পেয়েছে একটি করে মোট দুটি আসন।