এবারের নির্বাচন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে: প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৯:১৮:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৪
- / ৪৩২ বার পড়া হয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত কঠোরভাবে শৃঙ্খলা রক্ষা করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেছে। এমন নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি), সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, জনগণসহ সবাইকে ধন্যবাদ।
মঙ্গলবার (০৯ জানুয়ারি) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যেহেতু জনগণ ভোট দিয়েছে, তাই যারা নির্বাচিত হয়েছে তাদের ওপর কোনো অনুযোগ রাখা যাবে না। শান্তিপূর্ণভাবে থাকতে হবে। নির্বাচন নিয়ে যারা বড় খেলা খেলতে চেয়েছিলো তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে সুযোগ খুঁজবে। নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন যাতে না হয় তার জন্য বিএনপি নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করেছিল। মুরুব্বিদের পরামর্শে চললে বাংলাদেশের আর চলা লাগবে না। এটাই হলো বাস্তবতা। যদি সৎ পরামর্শ হয়, সেটা ভালো কথা। নির্বাচন হতে দেবে না, এসব হুমকি-ধামকি গেল কোথায়?
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এবার নির্বাচন হতেই দেবে না। তাদের লক্ষ্য ছিল নির্বাচন হতে দেবে না। তাদের কিছু মুরুব্বি আছে তারাও সেই পরামর্শ দেয়। এমন অবস্থা সৃষ্টি করবে যাতে নির্বাচন না হয় কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে তারা চিনে নাই। ’৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা বলেছিলেন, কেউ দাবায় রাখতে পারবা না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে এ দেশের মানুষ এটাই প্রমাণ করেছে।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র আছে দুর্ভিক্ষ ঘটাবে, সেটা যেন করতে না পারে সেজন্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমাদের কোনো মাস্টার নেই, জনগণই আমাদের মাস্টার ও শক্তি। ২০৪১ এর মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো ঘোষণা দিয়ে সেখ হাসিনা বলেন, দেশ আর কোনোদিন পেছনে যাবে না। ১০ জানুয়ারি জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ও আওয়ামী লীগের জয়ী হওয়ার আনন্দ পালন করবো। সবাই সেখানে উপস্থিত থাকবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা হয়। স্বাধীনতায় লাখো শহীদের যে অবদান, সেটাই ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়। ইতিহাস বিকৃতি করা হয়। এটাই হচ্ছে জাতির সবচেয়ে দুর্ভাগ্য।
তিনি বলেন, ’৭৫ এর পর নির্বাচন মানে কি আমি দেখেছি, নির্বাচন নামেই নির্বাচন। ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি, ভোটার লিস্টে মিথ্যা নাম দেওয়া, সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের পকেট থেকে রাজনৈতিক দল বের হতো, এই দল মাটি মানুষের কথা বলে না। ক্ষমতার উচ্চ আসনে বসে গঠিত রাজনৈতিক দল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই দল না। আওয়ামী লীগ হচ্ছে মানুষের অধিকারের কথা বলার জন্য, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল না তখনই আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে, জনগণের অধিকার রক্ষায় আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। সৃষ্টির শুরু থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের স্বার্থে কাজ করে গেছে। আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য বারবার অনেকেই এসেছে, আইয়ুব খানও চেষ্টা করেছে, ইয়াহিয়া খানও চেষ্টা করেছে, জিয়াউর রহমান চেষ্টা করেছে, এরশাদ চেষ্টা করেছে। জিয়াউর রহমান যেমন হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন, কীভাবে খালেদা জিয়াও হত্যাকাণ্ড চালিয়ে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর নির্মমতা করেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নয়, এ দেশের প্রতিটি শ্রেণির মানুষ আজ তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত। একটা মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব থাকলে কোনোদিন এভাবে পুড়িয়ে মারতে পারে না। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ভেবেছিল একেবারে ক্ষমতায় চলে যাবে, এ নির্বাচনে মাত্র ৩০টা সিট পায়। এরপর থেকে তারা জানে বাংলাদেশের মানুষ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, মানুষ হত্যা এগুলো পছন্দ করে না। তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। যে কারণে তারা কোনো নির্বাচনে আসতে চায়নি।
দেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মুষ্টিমেয় খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের দল ছাড়া এ দেশে সব মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হয়েছে। জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। এত দলের মধ্যে দুই-চারটা দল অংশগ্রহণ না করলে কিছু আসে যায় না। জনগণ অংশগ্রহণ করছে কি না, সেটাই সবচেয়ে বড় কথা। এ নির্বাচনের স্বতঃস্ফূর্তভাবে জনগণ অংশগ্রহণ করেছে। ১২০ বছরের বয়স্ক বুড়ো মানুষও ভোট দিতে গেছে। এরচেয়ে বড় কথা আর কি হতে পারে?