০১:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মালদ্বীপের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সমর্থন দেবেন চীন

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বলেছেন, কৌশলগত ভৌগলিক অবস্থানে থাকা মালদ্বীপের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশটিকে তিনি সমর্থন দেবেন। অবকাঠামো থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে উভয় দেশ বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরের পর গতকাল বুধবার তিনি এ কথা বলেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গত বছর সেপ্টেম্বরে নির্বাচিত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু মূলত চীনপন্থী হিসেবেই পরিচিত। তিনি বেইজিংয়ের সাথে শক্তিশালী সম্পর্ক অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছেন।

ভারতের সাথে কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই মুইজ্জু চীন সফর করছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। দুই দিন আগে চীন এলেও গতকাল বুধবার জিনপিংয়ের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। ঐতিহাসিক গ্রেট হলে পৌঁছানোর পর মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানানো হয় তোপধ্বনির মাধ্যমে। দেওয়া হয় গার্ড অব অনার। এসময় সাথে ছিলেন দেশটির ফার্স্ট লেডি।

এরপরই তাদের স্বাগত জানান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এরপর বৈঠকে বসেন দুই প্রেসিডেন্ট। সাথে ছিলেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে বেইজিং এবং মালের সম্পর্ককে ঐতিহাসিক আখ্যা দেন জিনপিং।

চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, শি মুইজ্জুকে বলেছেন, নতুন পরিস্থিতিতে অতীত অর্জনের ওপর ভিত্তি করে এগিয়ে যাওয়ার ঐতিহাসিক সুযোগ পেয়েছে দুই দেশ।

চীনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, চীন ও মালদ্বীপ একে অপরের বন্ধু। গত পাঁচ দশক ধরে দুই দেশ সবসময় একে অপরকে সম্মান ও সমর্থন করে আসছে। এর পাশাপাশি গেল ১০ বছরে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। ‘বেল্ট আ্যন্ড রোড’ উদ্যোগের আওতায় চীন ও মালদ্বীপের মধ্যে সহযোগিতা থেকে অনেক সুফলও অর্জিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

এসময় মালদ্বীপে বিনিয়োগের জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানান মোহাম্মদ মুইজ্জু। সবচেয়ে বেশি জোর দেন মালদ্বীপের পর্যটন খাতে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, বেইজিংয়ের সাথে মালের যে দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে, তার মর্যাদা রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। আমাদের যতগুলো প্রতিবেশী রয়েছে, তাদের মধ্যে চীন সবচেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ। দুই দেশের স্বার্থে এই সম্পর্ক আরও জোরদারের চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি।

মুইজ্জুর সফরকালে দু’দেশ জলবায়ু, কৃষি ও অবকাঠামো খাতে বেশি কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

সমুদ্রসম্পদ ও জাহাজ নির্মাণ শিল্প থাকা সত্ত্বেও মালদ্বীপের অর্থনীতি প্রধানত পর্যটন নির্ভর। দেশের মোট প্রবৃদ্ধির ২৮ শতাংশ আসে পর্যটন খাত থেকে। এছাড়া মালদ্বীপের মোট বৈদেশিক মুদ্রার ৬০ শতাংশও এ খাত থেকেই আসে।

গত সেপ্টেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘চীননপন্থী’ নেতা তথা ‘পিপল্‌স ন্যাশনাল কংগ্রেস’-এর প্রধান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে একের পর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যা নিয়ে নয়াদিল্লি-মালে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। এই আবহে সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ছবি নিয়ে মোদিকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করায় মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী-মরিয়ম শিউনা, মালশা শরিফ এবং মাদজুম মাজিদকে বরখাস্ত করা হয়।

মালদ্বীপের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সমর্থন দেবেন চীন

আপডেট : ০৯:৪৬:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বলেছেন, কৌশলগত ভৌগলিক অবস্থানে থাকা মালদ্বীপের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশটিকে তিনি সমর্থন দেবেন। অবকাঠামো থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে উভয় দেশ বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরের পর গতকাল বুধবার তিনি এ কথা বলেছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গত বছর সেপ্টেম্বরে নির্বাচিত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু মূলত চীনপন্থী হিসেবেই পরিচিত। তিনি বেইজিংয়ের সাথে শক্তিশালী সম্পর্ক অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছেন।

ভারতের সাথে কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই মুইজ্জু চীন সফর করছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। দুই দিন আগে চীন এলেও গতকাল বুধবার জিনপিংয়ের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। ঐতিহাসিক গ্রেট হলে পৌঁছানোর পর মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানানো হয় তোপধ্বনির মাধ্যমে। দেওয়া হয় গার্ড অব অনার। এসময় সাথে ছিলেন দেশটির ফার্স্ট লেডি।

এরপরই তাদের স্বাগত জানান চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এরপর বৈঠকে বসেন দুই প্রেসিডেন্ট। সাথে ছিলেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে বেইজিং এবং মালের সম্পর্ককে ঐতিহাসিক আখ্যা দেন জিনপিং।

চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, শি মুইজ্জুকে বলেছেন, নতুন পরিস্থিতিতে অতীত অর্জনের ওপর ভিত্তি করে এগিয়ে যাওয়ার ঐতিহাসিক সুযোগ পেয়েছে দুই দেশ।

চীনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, চীন ও মালদ্বীপ একে অপরের বন্ধু। গত পাঁচ দশক ধরে দুই দেশ সবসময় একে অপরকে সম্মান ও সমর্থন করে আসছে। এর পাশাপাশি গেল ১০ বছরে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। ‘বেল্ট আ্যন্ড রোড’ উদ্যোগের আওতায় চীন ও মালদ্বীপের মধ্যে সহযোগিতা থেকে অনেক সুফলও অর্জিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

এসময় মালদ্বীপে বিনিয়োগের জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানান মোহাম্মদ মুইজ্জু। সবচেয়ে বেশি জোর দেন মালদ্বীপের পর্যটন খাতে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, বেইজিংয়ের সাথে মালের যে দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে, তার মর্যাদা রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। আমাদের যতগুলো প্রতিবেশী রয়েছে, তাদের মধ্যে চীন সবচেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ। দুই দেশের স্বার্থে এই সম্পর্ক আরও জোরদারের চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি।

মুইজ্জুর সফরকালে দু’দেশ জলবায়ু, কৃষি ও অবকাঠামো খাতে বেশি কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

সমুদ্রসম্পদ ও জাহাজ নির্মাণ শিল্প থাকা সত্ত্বেও মালদ্বীপের অর্থনীতি প্রধানত পর্যটন নির্ভর। দেশের মোট প্রবৃদ্ধির ২৮ শতাংশ আসে পর্যটন খাত থেকে। এছাড়া মালদ্বীপের মোট বৈদেশিক মুদ্রার ৬০ শতাংশও এ খাত থেকেই আসে।

গত সেপ্টেম্বরে মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘চীননপন্থী’ নেতা তথা ‘পিপল্‌স ন্যাশনাল কংগ্রেস’-এর প্রধান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে একের পর সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। যা নিয়ে নয়াদিল্লি-মালে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। এই আবহে সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লক্ষদ্বীপে গিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সফরের বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ছবি নিয়ে মোদিকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করায় মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী-মরিয়ম শিউনা, মালশা শরিফ এবং মাদজুম মাজিদকে বরখাস্ত করা হয়।