০৬:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে মঙ্গলবার থেকে কমবে শীতের প্রকোপ

দেশের ১৩ জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসহ রংপুর বিভাগের ৮ জেলার রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাটের উপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

আজকে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৭ ভাগ। চলতি বছরে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা আরো কমে যেতে পারে। এছাড়া, দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা টেকনাফে ২৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেইসঙ্গে আগামী পাঁচদিনের মধ্যে সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের দাপটে শীতে বিপর্যস্ত এ জেলা। গত ৬ দিন ধরে কুয়াশার মেঘে সূর্য ঢাকা থাকায় দুর্ভোগে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে পড়েছে এ জনপদ। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় পঞ্চপড়ের তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শুক্রবার ভোর ৬টায় রেকর্ড হয়েছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। সকালে তাপমাত্রার রেকর্ডের তথ্যটি জানান জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।

ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের মাত্রা বেড়েছে। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে চারদিক। উত্তরের হিমেল বাতাসে রাতে বাড়ছে শীতের অনুভূতি। ঘন কুয়াশার কারণে সকালে সড়কে চলা যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) এই জেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ঘরে নেমে এসেছে। যা ছিল ঠাকুরগাঁওয়ের এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা কৃষি সম্প্রসারণের তথ্য মতে সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সকাল থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে পড়ে জেলা শহরের চারপাশ। এ সময় গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন যানবাহনের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। এর মাঝে প্রয়োজনের ক্ষেত্রে কিছু মানুষকে বিভিন্ন যানবাহনের হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

হিমশীতল বাতাসে নীলফামারীর জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। রাত থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টির ফোঁটার মতো শিশির পড়ছে। দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। আকাশপথেও বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

শনিবার (১৩ জানয়ারি) সকাল ৬টায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। বর্তমানে সৈয়দপুরের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। শনিবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরকম তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন থাকবে। সৈয়দপুরের আকাশে ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। এই ঘন কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে প্রায় প্রতিদিনই সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামায় বিঘ্ন ঘটছে।

উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে জেঁকে বসেছে শীত। টানা পাঁচদিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় তাপমাত্রার পারদ রয়েছে নিম্নগামী। সঙ্গে বাতাস ও ঘন কুয়াশায় স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা এ বছরে জেলায় সর্বনিম্ন।

টানা পাঁচ দিন ধরে সূর্যের দেখা না পাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ ও ছিন্নমূল মানুষ। পশ্চিমা হিমেল বাতাসে ক্ষতি হচ্ছে শীতকালীন সবজির ও আলু ক্ষেতের। ঘন ঘন ছত্রাকনাশক ছিটিয়ে লেট ব্লাইট বা মড়ক থেকে আলু রক্ষার চেষ্টা করছেন কৃষকরা।

নওগাঁয় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ঘন কুয়াশা আর শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে অস্থিরতা। গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কষ্ট পাচ্ছে নানা শ্রেণির মানুষ। হুমকির মুখে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) জেলায় সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে বদলগাছি আবহাওয়া অফিস। যা এই মৌসুমের জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।

বদলগাছি আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, গতকাল নওগাঁয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। আর আজ সেই তাপমাত্রা আরও নিচে ৮ দশমিক ৯ এ নেমেছে। গতকাল জেলায় সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। আজও ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা না মেলার সম্ভাবনা বেশি। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে না বের হওয়ার পরামর্শ এই কর্মকর্তার।

রাতে বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। তীব্র শীতে জনজীবনে নেমে এসেছে অস্থিরতা। দিন ও রাতের তাপমাত্রার মধ্যে বেশ পার্থক্য দেখা দেওয়ায় ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছেন চাষীরা। কৃষকের ফসল রক্ষায় বীজতলা ভালোভাবে ঢেকে রেখে পরিচর্যার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, শীতের এমন প্রকোপ থাকবে অন্তত আরও দুদিন। এ সময়ের মধ্যে সারা দেশেই তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে। তবে আগামী মঙ্গলবার থেকে বাড়তে শুরু করবে তাপমাত্রা। অর্থাৎ আগামী মঙ্গলবার থেকে শীতের প্রকোপ কিছুটা কমে গরম অনুভূতি বাড়তে পারে।

এদিকে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টা অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

এছাড়া, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসহ রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।

সংস্থাটি জানায়, ১৪ জানুয়ারি অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

এছাড়া, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।

বজলুর রশিদ পূর্বাভাসে আরও জানান, ১৫ জানুয়ারি অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

এছাড়া, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। আগামী ৫ দিনে দেশে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানায় সংস্থাটি।

শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা

দেশে মঙ্গলবার থেকে কমবে শীতের প্রকোপ

আপডেট : ০৬:৫৪:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৪

দেশের ১৩ জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসহ রংপুর বিভাগের ৮ জেলার রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাটের উপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

আজকে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৭ ভাগ। চলতি বছরে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা আরো কমে যেতে পারে। এছাড়া, দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা টেকনাফে ২৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেইসঙ্গে আগামী পাঁচদিনের মধ্যে সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের দাপটে শীতে বিপর্যস্ত এ জেলা। গত ৬ দিন ধরে কুয়াশার মেঘে সূর্য ঢাকা থাকায় দুর্ভোগে বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে পড়েছে এ জনপদ। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় পঞ্চপড়ের তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শুক্রবার ভোর ৬টায় রেকর্ড হয়েছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। সকালে তাপমাত্রার রেকর্ডের তথ্যটি জানান জেলার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।

ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের মাত্রা বেড়েছে। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে চারদিক। উত্তরের হিমেল বাতাসে রাতে বাড়ছে শীতের অনুভূতি। ঘন কুয়াশার কারণে সকালে সড়কে চলা যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) এই জেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ঘরে নেমে এসেছে। যা ছিল ঠাকুরগাঁওয়ের এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা কৃষি সম্প্রসারণের তথ্য মতে সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সকাল থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢেকে পড়ে জেলা শহরের চারপাশ। এ সময় গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন যানবাহনের উপস্থিতি কম দেখা গেছে। এর মাঝে প্রয়োজনের ক্ষেত্রে কিছু মানুষকে বিভিন্ন যানবাহনের হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

হিমশীতল বাতাসে নীলফামারীর জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। রাত থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টির ফোঁটার মতো শিশির পড়ছে। দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। আকাশপথেও বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

শনিবার (১৩ জানয়ারি) সকাল ৬টায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। বর্তমানে সৈয়দপুরের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। শনিবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরকম তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন থাকবে। সৈয়দপুরের আকাশে ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। এই ঘন কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে প্রায় প্রতিদিনই সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামায় বিঘ্ন ঘটছে।

উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে জেঁকে বসেছে শীত। টানা পাঁচদিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় তাপমাত্রার পারদ রয়েছে নিম্নগামী। সঙ্গে বাতাস ও ঘন কুয়াশায় স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা এ বছরে জেলায় সর্বনিম্ন।

টানা পাঁচ দিন ধরে সূর্যের দেখা না পাওয়ায় অসহায় হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ ও ছিন্নমূল মানুষ। পশ্চিমা হিমেল বাতাসে ক্ষতি হচ্ছে শীতকালীন সবজির ও আলু ক্ষেতের। ঘন ঘন ছত্রাকনাশক ছিটিয়ে লেট ব্লাইট বা মড়ক থেকে আলু রক্ষার চেষ্টা করছেন কৃষকরা।

নওগাঁয় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ঘন কুয়াশা আর শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে অস্থিরতা। গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কষ্ট পাচ্ছে নানা শ্রেণির মানুষ। হুমকির মুখে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) জেলায় সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে বদলগাছি আবহাওয়া অফিস। যা এই মৌসুমের জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।

বদলগাছি আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, গতকাল নওগাঁয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। আর আজ সেই তাপমাত্রা আরও নিচে ৮ দশমিক ৯ এ নেমেছে। গতকাল জেলায় সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। আজও ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা না মেলার সম্ভাবনা বেশি। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে না বের হওয়ার পরামর্শ এই কর্মকর্তার।

রাতে বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। তীব্র শীতে জনজীবনে নেমে এসেছে অস্থিরতা। দিন ও রাতের তাপমাত্রার মধ্যে বেশ পার্থক্য দেখা দেওয়ায় ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছেন চাষীরা। কৃষকের ফসল রক্ষায় বীজতলা ভালোভাবে ঢেকে রেখে পরিচর্যার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, শীতের এমন প্রকোপ থাকবে অন্তত আরও দুদিন। এ সময়ের মধ্যে সারা দেশেই তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে। তবে আগামী মঙ্গলবার থেকে বাড়তে শুরু করবে তাপমাত্রা। অর্থাৎ আগামী মঙ্গলবার থেকে শীতের প্রকোপ কিছুটা কমে গরম অনুভূতি বাড়তে পারে।

এদিকে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদের দেওয়া পূর্বাভাসে জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টা অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

এছাড়া, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসহ রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।

সংস্থাটি জানায়, ১৪ জানুয়ারি অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

এছাড়া, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।

বজলুর রশিদ পূর্বাভাসে আরও জানান, ১৫ জানুয়ারি অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

এছাড়া, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। আগামী ৫ দিনে দেশে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানায় সংস্থাটি।