১১:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন তাইওয়ানের জনগণ

চীনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এ নির্বাচনে প্রায় ২ কোটি ভোটার নির্ধারণ করবেন তাইপের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, নির্বাচনে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তাইওয়ানের বড় দুই রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিকেকে) এবং কুওমিনটাংয়ের মধ্যে। এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ডিকেকের জয়ের সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। শাসক দল ডিকেকেরও এবারের নির্বাচনে জিতে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করার সুযোগ রয়েছে।

এই নির্বাচনে কোনো ভোটকেন্দ্রেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন রাখেনি তাইওয়ানের নির্বাচন কমিশন। ফলে ভোটারদের ব্যালট পেপারের মাধ্যমেই ভোট দিতে হচ্ছে। ভোটগ্রহণ শেষে এদিন সন্ধ্যার দিকে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। দ্বীপ ভূখণ্ডটিতে মোট ১ কোটি ৯৫ লাখ ভোটার রয়েছেন।

জানা গেছে, নির্বাচনে ডিকেকের পক্ষে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন তাইওয়ানের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই। অন্যদিকে বৃহত্তম বিরোধী দল কুওমিনটাংয়ের পক্ষে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলটির শীর্ষ নেতা হোন-ইউ ইহ। এই দুজন ছাড়াও নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাইপের সাবেক মেয়র এবং তাইওয়ান পিপলস পার্টির (টিপিপি) শীর্ষ নেতা কো ওয়েন জে।

তাইওয়ানের সংবিধান অনুসারে, কোনো নাগরিক সেখানে টানা দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকতে পারেন না। তাই এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি ভূখণ্ডটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন।

প্রসঙ্গত, তাইওয়ান সবসময় নিজেদের স্বাধীন ও সার্বভৌম দাবি করে আসলেও তাদেরকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। অন্যদিকে, চীন ভূখণ্ডটিকে নিজেদের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া একটি অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে।

তাইওয়ানের এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভোটের ফলাফল চীনের সঙ্গে দ্বীপরাষ্ট্রটির সম্পর্কে বড় প্রভাব ফেলতে পারে এবং একইসঙ্গে এই পুরো অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়াতে পারে ও বিশ্বের অর্থনীতিকেই প্রভাবিত করতে পারে।

এবারের নির্বাচনে তাইওয়ানের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যোটিক পোগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) সাই ইং ওয়েনের উত্তরসূরী নির্বাচিত হবেন। সাই ২০১৬ ও ২০২০ সালে পরপর দু’বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তার মেয়াদ সম্পন্ন করেছেন।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাইপের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) লাই চিং তে, রক্ষণশীল কোয়োমিনতাং পার্টির (কেএমটি) হো ইয়ু হই ও তাইওয়ান পিপলস পার্টির (টিপিপি) কো ওয়েন জে।

এবারের নির্বাচনে লাইয়ের সঙ্গে থাকা মূল প্রতিদ্বন্দ্বী অপর দুজন চীনঘেঁষা। জনমত জরিপে লাই কিছুটা এগিয়ে থাকলেও তিনি বিজয়ী হবেন, এটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। একসময় তার দল তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পেরেছিল। কিন্তু আট বছর ধরে ক্ষমতায় থাকলেও দলটি নতুন কিছুই করতে পারেনি। সেখানে মূল্যস্ফীতি যেভাবে হয়েছে, মানুষের বেতন সেভাবে বাড়েনি। অথচ বাড়িভাড়া বেড়েছে ব্যাপক।

সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯৬ সালে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পর থেকে মূলত দুটি রাজনৈতিক দল ডিপিপি ও কেএমটি প্রতি চার বছর পর জয়ী হয়ে আসছে। তবে দেশটিতে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ও ধীর অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে ক্ষমতাসীন দল ডিপিপির প্রতি আস্থা কমেছে তাইপের জনগণের।

নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন তাইওয়ানের জনগণ

আপডেট : ০৭:৩২:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৪

চীনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এ নির্বাচনে প্রায় ২ কোটি ভোটার নির্ধারণ করবেন তাইপের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, নির্বাচনে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তাইওয়ানের বড় দুই রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিকেকে) এবং কুওমিনটাংয়ের মধ্যে। এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ডিকেকের জয়ের সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। শাসক দল ডিকেকেরও এবারের নির্বাচনে জিতে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করার সুযোগ রয়েছে।

এই নির্বাচনে কোনো ভোটকেন্দ্রেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন রাখেনি তাইওয়ানের নির্বাচন কমিশন। ফলে ভোটারদের ব্যালট পেপারের মাধ্যমেই ভোট দিতে হচ্ছে। ভোটগ্রহণ শেষে এদিন সন্ধ্যার দিকে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। দ্বীপ ভূখণ্ডটিতে মোট ১ কোটি ৯৫ লাখ ভোটার রয়েছেন।

জানা গেছে, নির্বাচনে ডিকেকের পক্ষে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন তাইওয়ানের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই। অন্যদিকে বৃহত্তম বিরোধী দল কুওমিনটাংয়ের পক্ষে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলটির শীর্ষ নেতা হোন-ইউ ইহ। এই দুজন ছাড়াও নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাইপের সাবেক মেয়র এবং তাইওয়ান পিপলস পার্টির (টিপিপি) শীর্ষ নেতা কো ওয়েন জে।

তাইওয়ানের সংবিধান অনুসারে, কোনো নাগরিক সেখানে টানা দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকতে পারেন না। তাই এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি ভূখণ্ডটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন।

প্রসঙ্গত, তাইওয়ান সবসময় নিজেদের স্বাধীন ও সার্বভৌম দাবি করে আসলেও তাদেরকে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। অন্যদিকে, চীন ভূখণ্ডটিকে নিজেদের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া একটি অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে।

তাইওয়ানের এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভোটের ফলাফল চীনের সঙ্গে দ্বীপরাষ্ট্রটির সম্পর্কে বড় প্রভাব ফেলতে পারে এবং একইসঙ্গে এই পুরো অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়াতে পারে ও বিশ্বের অর্থনীতিকেই প্রভাবিত করতে পারে।

এবারের নির্বাচনে তাইওয়ানের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ডেমোক্র্যোটিক পোগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) সাই ইং ওয়েনের উত্তরসূরী নির্বাচিত হবেন। সাই ২০১৬ ও ২০২০ সালে পরপর দু’বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তার মেয়াদ সম্পন্ন করেছেন।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাইপের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) লাই চিং তে, রক্ষণশীল কোয়োমিনতাং পার্টির (কেএমটি) হো ইয়ু হই ও তাইওয়ান পিপলস পার্টির (টিপিপি) কো ওয়েন জে।

এবারের নির্বাচনে লাইয়ের সঙ্গে থাকা মূল প্রতিদ্বন্দ্বী অপর দুজন চীনঘেঁষা। জনমত জরিপে লাই কিছুটা এগিয়ে থাকলেও তিনি বিজয়ী হবেন, এটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। একসময় তার দল তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পেরেছিল। কিন্তু আট বছর ধরে ক্ষমতায় থাকলেও দলটি নতুন কিছুই করতে পারেনি। সেখানে মূল্যস্ফীতি যেভাবে হয়েছে, মানুষের বেতন সেভাবে বাড়েনি। অথচ বাড়িভাড়া বেড়েছে ব্যাপক।

সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯৬ সালে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পর থেকে মূলত দুটি রাজনৈতিক দল ডিপিপি ও কেএমটি প্রতি চার বছর পর জয়ী হয়ে আসছে। তবে দেশটিতে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ও ধীর অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে ক্ষমতাসীন দল ডিপিপির প্রতি আস্থা কমেছে তাইপের জনগণের।