০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন একপাক্ষিক-পাতানো: টিআইবি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একপাক্ষিক ও পাতানো, যেটি অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি বলে দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে সংস্থাটির কার্যালয়ে টিআইবি আয়োজিত ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া ট্র্যাকিং’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষক মাহফুজুর হক, নেওয়াজুল মওলা, সাজেদুল ইসলাম।

সংস্থাটির দাবি, একপাক্ষিক ও ‘পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। নির্বাচনে শেষের এক ঘণ্টায় ১৫.৪৩ শতাংশ ভোটসহ মোট ৪১.৮ শতাংশ ভোট পড়া বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিসহ ১৫টি নিবন্ধিত দলের অনুপস্থিতি ও তাদের নির্বাচন বর্জনের কারণে বেশিরভাগ আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। অন্তত ২৪১টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি।

সংস্থাটির মতে, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক দেখাতে নিজ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করলেও বেশিরভাগ আসনে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। টিআইবি বলছে, নির্বাচনের এমন প্রক্রিয়া গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়া অন্য দলের প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট ছিল না। প্রতিপক্ষের প্রার্থীদের এজেন্টদের হুমকির মাধ্যমে কেন্দ্রে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখা হয়।

সংস্থাটির দাবি, ভোটের দিন স্বল্প ভোটারের আগমন এবং ডামি লাইন তৈরি করে বিভিন্ন আসনে অন্য দলের প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেয়া হয়। ভোটের আগে ব্যালটে সিল মারা, ভোট চলাকালে প্রকাশ্যে সিল মারাসহ আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অনিয়মের অভিযোগ থেকে এমন তথ্য ওঠে এসেছে টিআইবির প্রতিবেদনে।

এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, একপাক্ষিক ও পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিসহ সার্বিক অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত। যা গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনা ও স্বপ্নের সাথে সাংঘর্ষিক।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে দুই বড় দলের বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানের কারণে অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচন হয়নি এবং এ বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানকেন্দ্রিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লড়াইয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জিম্মিদশা প্রকটতর হয়েছে। ক্ষমতায় অব্যাহত থাকার কৌশল বাস্তবায়নের একতরফা নির্বাচন সাফল্যের সাথে সম্পন্ন হয়েছে, যার আইনগত বৈধতা নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ হয়তো হবে না বা হলেও টিকবে না। তবে এ সাফল্য রাজনৈতিক শুদ্ধাচার, গণতান্ত্রিক ও নৈতিকতার মানদণ্ডে চিরকাল প্রশ্নবিদ্ধ থাকবে। নির্বাচনের নামে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের দীর্ঘকাল যাবত চলমান সংস্কৃতির রাজনৈতিক আদর্শের যে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন একপাক্ষিক-পাতানো: টিআইবি

আপডেট : ০৮:০৮:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একপাক্ষিক ও পাতানো, যেটি অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি বলে দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে সংস্থাটির কার্যালয়ে টিআইবি আয়োজিত ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া ট্র্যাকিং’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষক মাহফুজুর হক, নেওয়াজুল মওলা, সাজেদুল ইসলাম।

সংস্থাটির দাবি, একপাক্ষিক ও ‘পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। নির্বাচনে শেষের এক ঘণ্টায় ১৫.৪৩ শতাংশ ভোটসহ মোট ৪১.৮ শতাংশ ভোট পড়া বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিসহ ১৫টি নিবন্ধিত দলের অনুপস্থিতি ও তাদের নির্বাচন বর্জনের কারণে বেশিরভাগ আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। অন্তত ২৪১টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি।

সংস্থাটির মতে, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক দেখাতে নিজ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করলেও বেশিরভাগ আসনে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। টিআইবি বলছে, নির্বাচনের এমন প্রক্রিয়া গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়া অন্য দলের প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট ছিল না। প্রতিপক্ষের প্রার্থীদের এজেন্টদের হুমকির মাধ্যমে কেন্দ্রে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখা হয়।

সংস্থাটির দাবি, ভোটের দিন স্বল্প ভোটারের আগমন এবং ডামি লাইন তৈরি করে বিভিন্ন আসনে অন্য দলের প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেয়া হয়। ভোটের আগে ব্যালটে সিল মারা, ভোট চলাকালে প্রকাশ্যে সিল মারাসহ আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অনিয়মের অভিযোগ থেকে এমন তথ্য ওঠে এসেছে টিআইবির প্রতিবেদনে।

এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, একপাক্ষিক ও পাতানো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিসহ সার্বিক অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত। যা গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনা ও স্বপ্নের সাথে সাংঘর্ষিক।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে দুই বড় দলের বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানের কারণে অংশগ্রহণমূলক ও অবাধ নির্বাচন হয়নি এবং এ বিপরীতমুখী ও অনড় অবস্থানকেন্দ্রিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লড়াইয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জিম্মিদশা প্রকটতর হয়েছে। ক্ষমতায় অব্যাহত থাকার কৌশল বাস্তবায়নের একতরফা নির্বাচন সাফল্যের সাথে সম্পন্ন হয়েছে, যার আইনগত বৈধতা নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ হয়তো হবে না বা হলেও টিকবে না। তবে এ সাফল্য রাজনৈতিক শুদ্ধাচার, গণতান্ত্রিক ও নৈতিকতার মানদণ্ডে চিরকাল প্রশ্নবিদ্ধ থাকবে। নির্বাচনের নামে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের দীর্ঘকাল যাবত চলমান সংস্কৃতির রাজনৈতিক আদর্শের যে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই, তা আবারও প্রমাণিত হয়েছে।