শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত : ইসরায়েল রাষ্ট্র সংস্কারে আরও ৪ কমিশন গঠন ‘শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ব্যবস্থা নেবে সরকার’ শেখ হাসিনা ভারতে আছেন এবং থাকবেন: ভারত কমনওয়েলথ সম্মেলনে যাচ্ছেন না ড. ইউনূস: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ঈদুল ফিতরে ৫, আজহায় ৬ ও দুর্গাপূজায় ২ দিন ছুটি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের সব সম্পদ জব্দের আদেশ ভারতকে লজ্জায় ডুবিয়ে নিউজিল্যান্ডের লিড আ.লীগ আমলের বাজার সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয়: জামায়াত আমির জাতীয় পার্টি বৈষম্যের শিকার: জিএম কাদের ওবায়দুল কাদের-জাফর ইকবালসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ৪৩ থেকে ৪৬ বিসিএসের নিয়োগ বাতিলের দাবি বিএনপির কমপ্লিট শাটডাউনের হুঁশিয়ারি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কূটনৈতিক যুদ্ধে ভারত-কানাডার সম্পর্ক চরমে সাবেক সেনাপ্রধান আজিজকে স্ত্রীসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নিজ দেশের জনগণের তোপের মুখে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সেপ্টেম্বরে ১৯২ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৯৫ জন শরীরচর্চা করতে গিয়ে গুরুতর আহত অভিনেত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনের নামে হত্যাচেষ্টার মামলা বাজার সিন্ডিকেট ভাঙার চেষ্টা করছে সরকার: উপদেষ্টা আসিফ

দেশের ৪৯ শতাংশ খাবার পানিতে ক্যানসারের ঝুঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১১৩ জন দেখেছেন
আপডেট : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২০ অপরাহ্ন
দেশের ৪৯ শতাংশ খাবার পানিতে ক্যানসারের ঝুঁকি
৭১ নিউজ বিডি অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যা এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট চরম আবহাওয়ায় বাংলাদেশের পানিতে আর্সেনিকের বিষক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে। ফলে মানুষের ত্বক, মূত্রাশয় এবং ফুসফুসের ক্যান্সার বাড়ছে। সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিজ্ঞানবিষয়ক পিএলওএস ওয়ান সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধের বরাত দিয়ে জানায়, বাংলাদেশের মানুষের পান করা অর্ধেক পানিতে উচ্চমাত্রার আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে।

মূলত, পানিতে অতিরিক্ত মাত্রায় আর্সেনিকের উপস্থিতির কারণে ফুসফুস, মূত্রাশয়, কিডনি এবং ত্বকের ক্যানসার হতে পারে। এ গবেষণাটি পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

গবেষকরা আর্সেনিক নিঃসরণের মাত্রা নিরূপণে পানিতে অক্সিজেনের ঘনত্ব, পিএইচ এবং তাপমাত্রা পরীক্ষা করে জানান, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের পান করা পানির ৪৯ শতাংশের মধ্যে ক্যানসার সৃষ্টিকারী আর্সেনিক রয়েছে। এই গবেষণায় মূলত বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য সংকটের তীব্রতাকে তুলে ধরা হয়েছে।

জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থা এবং এনজিওগুলো বলছে, বাড়ির কাজে, ফসল সেচ এবং ফসল চাষের জন্য গভীর নলকূপ ব্যবহার করে। যদিও মাটির তলদেশের পানি পানের কারণে, পানিবাহিত রোগের বিস্তার কমে শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু ৯০ এর দশকে দেখা যায়, গভীর নলকূপ ব্যবহারের ফলে যে পানি পাওয়া যায় তাতে উচ্চ মাত্রার আর্সেনিক রয়েছে।

পানীয় জল থেকে দীর্ঘস্থায়ী আর্সেনিক বিষক্রিয়ার বিষয়ে প্রথম ১৯৯৩ সালে প্রথম সনাক্ত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওই সনাক্তের ঘটনাকে বিশ্বের ইতিহাসে ‘বৃহত্তম গণ বিষক্রিয়া” হিসেবে চিহ্নিত করে।

আর্সেনিক প্রাকৃতিকভাবেই উৎপন্ন হয়, যা হিমালয়ের চূড়া থেকে পানির সাথে গড়িয়ে বিভিন্ন জলাধারে এসে পরে। ফলে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা নদীর অববাহিকা থেকে আসা সমস্ত পলি প্রাকৃতিকভাবে আর্সেনিক সমৃদ্ধ।

গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি প্রায়ই প্রবল বন্যার মুখোমুখি হয়। একই সঙ্গে জলবায়ু সংকটের ক্ষতিকর প্রভাবের সবচেয়ে ঝুঁকিতেও আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ নদী মাত্রিক দেশ হওয়ার পলির সাথে ধুয়ে আসা আর্সেনিক বাংলাদেশের নদীর পানিতে মিশে যায়।

২০১৮ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকা তলিয়ে যায়। বর্ষা মৌসুমের তীব্র বৃষ্টিপাতের কারণে প্রত্যেক বছর বাংলাদেশের প্রায় ২১ শতাংশ এলাকায় বন্যা হয়। পিএলওএস ওয়ান সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পানিতে অতিরিক্ত মাত্রার আর্সেনিকের উপস্থিতির সাথে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও মৌসুমি ভারী বন্যার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। সমুদ্রের নোনা পানি সুপেয় পানির সাথে মিশে যাওয়ায় পলি থেকে আর্সেনিক নির্গত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, পানিতে আর্সেনিকের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা ১০ পার্টস পার বিলিয়ন (পিপিবি)। কিন্তু বাংলাদেশের ৪৯ শতাংশ এলাকার নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত মাত্রার চেয়ে প্রায় ৪৫ গুণ বেশি।

আর্সেনিকের মাত্রা মানুষ সৃষ্ট ও প্রাকৃতিক উভয় কারণে বাড়তে পারে। মানবসৃষ্ট কারণগুলোর মধ্যে পানিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার, কীটনাশক, বর্জ্য পদার্থ প্রয়োগ অন্যতম।

আর প্রাকৃতিক কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি মাটির নিচে আর্সেনিকের খনি। এ খনিজ পদার্থ ভূগর্ভের পানির স্তরের সংস্পর্শে এলে পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা বেড়ে যায়।

পানিতে মিশে থাকা বিষাক্ত কেমিক্যাল, ভারি ধাতু, মরিচা, সিসা, বিভিন্ন দূষিত পদার্থ পানি ফোটানোর পরও অনেক সময় পুরোপুরি দূষণমুক্ত হয় না। ব্যাকটেরিয়াসহ অন্যান্য ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংসের জন্য পানি সঠিক তাপমাত্রায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ফোটানো দরকার। এছাড়া পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য বিকল্প হিসেবে উন্নত মানের ফিল্টার ব্যবহার করা যায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের অন্য সংবাদ