যেমন কথা তেমন কাজ! যুক্তরাষ্ট্রকে ইটের জবাব পাটকেলে দিচ্ছে হুতি বিদ্রোহীরা। এবার মার্কিন মালিকের আরও একটি পণ্যবাহী জাহাজে ড্রোন হামলা চালিয়েছে সংগঠনটি। বুধবার ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে উড়ে আসা একটি ড্রোন এডেন উপসাগরে মার্কিন মালিকানাধীন জাহাজে হামলা করেছে। যদিও এতে কেউ হতাহত হয়নি। হামলার জেরে জাহাজের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, জাহাজের নাম এম.ভি গেনকো পিকার্ডি। এটি মার্কিন মালিকানাধীন ও মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী। হামলার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে হুতির মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারে। সমুদ্রে হুতিদের এমন কাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের ‘খেই হারিয়ে অবস্থা’।
জাহাজে হামলার পর পরই বুধবার হুতিদের অবস্থান লক্ষ্য করে আবারও হামলা চালায় ওয়াশিংটন। পেন্টাগন বলছে, এ সময় লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলায় ব্যবহৃত হতে পারে হুতিদের এমন ১৪টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে ছোঁড়া টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হুতিদের এসব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে যুক্তরাষ্ট্র।
অর্থাৎ, হুতিদের হাজার ডলারের মিসাইল ঠেকাতে মিলিয়ন ডলারের টমাহক ছুড়তে হচ্ছে আমেরিকাকে। তারপরও জলে-আকাশে কিংবা ডাঙ্গায় হুতিদের সাথে পেরে উঠছে না বাইডেন প্রশাসন। তাই হুতিদের নাম নতুন করে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় তুলতে সূর চড়িয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
গত বছরের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে হুথি বিদ্রোহীরা। গাজায় ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে এসব হামলা চালাচ্ছে তারা।
সমুদ্রপথে বাণিজ্যের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ লোহিত সাগরে হুতিদের একের পর এক জাহাজে হামলার ঘটনা, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের বড় উদ্বেগের কারণ। এ অবস্থায় গত সপ্তাহে ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র দেশগুলোকে হামলার ক্ষেত্রে সংযমী হতে আহবান জানিয়েছে সৌদি আরব। পাশাপাশি উত্তেজনা না বাড়ানোরও আহবান জানায় দেশটি। সৌদি আরব সাম্প্রতিক মাসগুলোয় হুতিদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যুক্ত আছে। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, গভীর উদ্বেগের সাথে পুরো পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে রিয়াদ।
হুতিদের বিরুদ্ধে হামলায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়াও। দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়াতেই ইয়েমেনে বিমান হামলা চালিয়েছে পশ্চিমারা। তাদের এ হামলা মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থিতিশীল করবে।