নাটক জমিয়ে জিতল কুমিল্লা
- আপডেট সময় : ০৫:৩৮:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৪
- / ৪১৩ বার পড়া হয়েছে
ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের ম্যাচে বাড়তি নজর ছিল পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানের দিকে। কিন্তু হতাশ করেছেন রিজওয়ান। বরিশালের ১৬১ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ১৭ রান করেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন। তাতে অবশ্য ভিক্টোরিয়ানসের জয় থেমে থাকেনি। শেষ দিকের নাটকীয়তায় ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে তারা। এবারের বিপিএলে দ্বিতীয় ম্যাচে এসে কুমিল্লা পেল প্রথম জয়।
টি-টোয়েন্টি বিবেচনায় নিলে বরিশালের দেওয়া লক্ষ্যটা আহামরি কিছু নয়। কিন্তু মিরপুরের উইকেট সাপেক্ষে এটা বড় টার্গেট। তবু আগের দিনগুলোতে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে যেভাবে রানবন্যা দেখা গেছে, তাতে কুমিল্লার পক্ষে বাজি ধরার লোকের কমতি ছিল না।
কিন্তু প্রত্যাশিত শুরু পায়নি ভিক্টোরিয়ানসরা। মোহাম্মদ ইমরানের করা প্রথম ওভার থেকে লিটন দাস ও রিজওয়ান মিলে নেন মাত্র ৩ রান। পরের ওভারে আব্বাস আফ্রিদির দ্বিতীয় বলে চার মেরে বাউন্ডারির খাতা খোলেন রিজওয়ান। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে একটি করে চার ও ছক্কা মারেন। ভিক্টোরিয়ানস সমর্থকদের আশার পারদও উঁচুতে উঠতে থাকে।
কিন্তু পরের ওভারে দুনিথ ভেল্লাগের বলে পুল শট খেলতে গিয়ে গড়বড় পাকিয়ে ফেলেন রিজওয়ান। মিড উইকেটে দাঁড়ানো মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ১৪ বলে ১৭ রান করা রিজওয়ান।
ভেল্লাগের পরের বলেই আবারও উইকেটের দেখা পায় ভিক্টোরিয়ানস। এবার লঙ্কান বোলারের শিকার তাওহীদ হৃদয়। রানের খাতা খোলার আগেই শোয়েব মালিকের হাতে ক্যাচে পরিণত হন তিনি।
২৬ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে কুমিল্লা। সেখান থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির হাল ধরেন লিটন দাস ও ইমরুল কায়েস। পাওয়ার প্লে-তে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩৬ রান তোলে কুমিল্লা।
ইনিংসের নবম ওভারে তৃতীয় উইকেট হারায় ভিক্টোরিয়ানস। ধুঁকতে থাকা লিটন ১৯ বলে ১৪ রান করে খালেদ আহমেদের বলে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। ক্যারিবীয় তারকা রোস্টন চেজও নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। ১৫ বলে ১৩ রান করে ভেল্লাগের বলে আউট হয়েছেন উইন্ডিজ ব্যাটসম্যান।
জয়ের জন্য কুমিল্লার শেষ দশ ওভারে প্রয়োজন ১০১ রান। ইমরুল কায়েস এক প্রান্ত থেকে চেষ্টা করে গেলেও সেটা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। কায়েস রান করেছেন ঠিকই, কিন্তু পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ব্যাটিং করতে পারেননি। এরপর ১৭তম ওভারে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে উইকেট দিয়েছেন। ৪১ বলে ৪ চার ও ৩ ছয়ে ৫১ রান করে সাজঘরে ফেরেন কায়েস।
তখন জয়ের জন্য ২১ বলে ৪৬ রান চাই কুমিল্লার। হাতে ৫ উইকেট। ম্যাচ হেলে পড়ছিল বরিশালের দিকে। কিন্তু আব্বাস আফ্রিদির ওই ওভারে টানা দুই ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন জাকির আলী।
ম্যাচ তখন পেন্ডুলামের মতো দুলছে। ১৮তম ওভারে ইমরান এসে ১১ রান দেন। শেষ দুই ওভারে ২২ রান দরকার কুমিল্লার। আব্বাসের করা ১৯তম ওভারে খুশদিলের ক্যাচ ফেলে বরিশাল। সে ওভার থেকে ৯ রান তুললে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৩ রান দরকার ছিল কুমিল্লার।
ম্যাচ তখন জমে ক্ষীর। শেষ ওভারের প্রথম বলেই খুশদিলকে (৭ বলে ১৪) ফেরান আব্বাস। ৫ বলে দরকার ১৩ রান। পরের বলে ২ রান নেন ম্যাথিউ ফোর্ড। পরের দুই বলে ছক্কা ও চার হাঁকিয়ে ম্যাচ কুমিল্লার দিকে টেনে উইন্ডিজ ব্যাটসম্যান। ততক্ষনে ম্যাচ টাই। হাতে তখনো দুই বল। ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে এক্সট্রা কাভারের দিকে ঠেলে দিয়ে সিঙ্গেল নিয়ে কুমিল্লার জয় নিশ্চিত করেন ৪ বলে ১৩ রান করা ফোর্ড। অন্যপ্রান্তে ২০ বলে ২৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন জাকির।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ফরচুন বরিশাল : ১৬১/৯, ২০ ওভার (মুশফিকুর ৬২, সৌম্য ৪২, মুস্তাফিজুর ৩/৩২)।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ১৬২/৬, ১৯.৫ ওভার (ইমরুল ৫২, জাকের ২৩*, ওয়েললাগে ৩/২৬)।
ফল : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৪ উইকেটে জয়ী।