০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজিবি সদস্য হত্যার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি

বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যকে হত্যার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা। তারা বলছেন, স্বভূমির সীমানায় কাউকে শান্তিতে রাখেনি আওয়ামী সরকার। নাগরিকদের জীবনের চেয়ে দখলদার আওয়ামী মন্ত্রীদের ক্ষমতা খুব জরুরি। দেশবাসীকে পরাধীন রেখে ক্ষমতা ভোগ করাই আওয়ামী লীগের নীতি ও আদর্শ। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন নেতারা। গত ২১ জানুয়ারি সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দিনকে হত্যার পর বিএসএফের পক্ষ থেকে যা বলা হয়েছে তা অগ্রহণযোগ্য বলেও মনে করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির পক্ষে থেকে বলা হয়, গত ২১ জানুয়ারি ভোরে যশোর সীমান্তের ধান্যখোলা বিওপির জেলেপাড়া পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দিনকে গুলি করে হত্যা করে। প্রতিনিয়তই প্রাণহানির সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে গণমাধ্যমে। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে গত ৭ বছরে ২০১ জন বাংলাদেশি নাগরিক বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

তারা বলেন, বিএসএফের পক্ষ থেকে বলা হয় ‘তিনি (নিহত ব্যক্তি) বিজিবির সদস্য তা তারা বুঝতেই পারেননি, তিনি লুঙ্গি ও টি-শার্ট পরে ছিলেন এবং পাচারকারী দলের সঙ্গে তাকে ভারতের সীমানার ভেতরে দেখা গিয়েছিল। একজন বিজিবি সদস্য কীভাবে লুঙ্গি আর টি-শার্ট পরে পাচারকারী দলের সঙ্গে মিশে থাকতে পারেন সেটি বোধগম্য নয়। তাদের এই বয়ান শুধু বানোয়াটই নয়, ভারতীয় নীতি নির্ধারকদের ‘বিগ ব্রাদার’ সুলভ গরিমা থেকে উৎসাহিত হয়ে বিএসএফ তাদের হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাইছে। একজন বিজিবি সদস্য কখনোই লুঙ্গি ও টি-শার্ট পরে পাচারকারী দলের সঙ্গে থাকতে পারেন না।

তারা আরও বলেন, বিএসএফের মন্তব্যের সঙ্গে ভারতের মানবাধিকার সংগঠন ‘মাসুম’ও দ্বিমত পোষণ করেছে। বিএসএফের এমন আচরণের ইতিহাস হিংসাশ্রয়ী ও রক্তপাতের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে। বরাবরই বিএসএফের অপরাধকর্ম এবং বয়ানের মধ্যে দুস্তর ব্যবধান থাকে। তাদের আচরণে মনে হয় তারা আদিম ও মধ্যযুগ পেরোতে পারেনি।

ভারতের উচ্চাকাঙ্খী নীতির কারণেই সীমান্তে রক্তপাত থামছে না বলেও দাবি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের। তাদের অভিমত, বিএসএফ বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাকে ‘ব্লাডস্পোর্ট’ বা রক্তক্ষয়ী খেলায় পরিণত করেছে। বাংলাদেশের মানুষকে নতজানু রাখার এটি একটি আধিপত্যবাদী বার্তা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখন তাদের বন্ধুপ্রতীম দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে দিয়ে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক এবং সীমান্তরক্ষীদের প্রাণ সংহার করা হচ্ছে। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ হলেও তাদের নীতি নির্ধারকদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের গভীরতা অর্জিত হয়নি। সেজন্যই বাংলাদেশ সীমান্তে বেআইনি হত্যাকাণ্ডে তারা কোনও দায়বোধ করে না। কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানীর হৃদয়বিদারক লাশের দৃশ্য দেখে বাংলাদেশের মানুষের মনে এখনও ক্ষোভের আগুন জ্বলছে।

নেতারা বলেন, পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সবচেয়ে সহিংস ও রক্তস্নাত। ভারত বারবার প্রতিশ্রতি দিলেও বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দ্বারা বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার ঘটনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিএসএফেরর ‘ডেলিবারেট কিলিং’ এখন সর্বজনবিদিত বলে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলেন, নিয়ন্ত্রণহীন এসব হত্যাকাণ্ডের আশকারা দেওয়া দিল্লির উগ্রতা আর ঢাকার নীরবতা। শেখ হাসিনার দিল্লির সঙ্গে অধীনতামূলক চিরস্থায়ী ‘রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’র ফলশ্রুতি হচ্ছে বিএসএফের সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার ঘটনায় নিশ্চুপ থাকা।

বিজিবি সদস্য হত্যার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি

আপডেট : ০৯:৩৫:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৪

বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যকে হত্যার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা। তারা বলছেন, স্বভূমির সীমানায় কাউকে শান্তিতে রাখেনি আওয়ামী সরকার। নাগরিকদের জীবনের চেয়ে দখলদার আওয়ামী মন্ত্রীদের ক্ষমতা খুব জরুরি। দেশবাসীকে পরাধীন রেখে ক্ষমতা ভোগ করাই আওয়ামী লীগের নীতি ও আদর্শ। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেন নেতারা। গত ২১ জানুয়ারি সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দিনকে হত্যার পর বিএসএফের পক্ষ থেকে যা বলা হয়েছে তা অগ্রহণযোগ্য বলেও মনে করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির পক্ষে থেকে বলা হয়, গত ২১ জানুয়ারি ভোরে যশোর সীমান্তের ধান্যখোলা বিওপির জেলেপাড়া পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দিনকে গুলি করে হত্যা করে। প্রতিনিয়তই প্রাণহানির সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে গণমাধ্যমে। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে গত ৭ বছরে ২০১ জন বাংলাদেশি নাগরিক বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

তারা বলেন, বিএসএফের পক্ষ থেকে বলা হয় ‘তিনি (নিহত ব্যক্তি) বিজিবির সদস্য তা তারা বুঝতেই পারেননি, তিনি লুঙ্গি ও টি-শার্ট পরে ছিলেন এবং পাচারকারী দলের সঙ্গে তাকে ভারতের সীমানার ভেতরে দেখা গিয়েছিল। একজন বিজিবি সদস্য কীভাবে লুঙ্গি আর টি-শার্ট পরে পাচারকারী দলের সঙ্গে মিশে থাকতে পারেন সেটি বোধগম্য নয়। তাদের এই বয়ান শুধু বানোয়াটই নয়, ভারতীয় নীতি নির্ধারকদের ‘বিগ ব্রাদার’ সুলভ গরিমা থেকে উৎসাহিত হয়ে বিএসএফ তাদের হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাইছে। একজন বিজিবি সদস্য কখনোই লুঙ্গি ও টি-শার্ট পরে পাচারকারী দলের সঙ্গে থাকতে পারেন না।

তারা আরও বলেন, বিএসএফের মন্তব্যের সঙ্গে ভারতের মানবাধিকার সংগঠন ‘মাসুম’ও দ্বিমত পোষণ করেছে। বিএসএফের এমন আচরণের ইতিহাস হিংসাশ্রয়ী ও রক্তপাতের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে। বরাবরই বিএসএফের অপরাধকর্ম এবং বয়ানের মধ্যে দুস্তর ব্যবধান থাকে। তাদের আচরণে মনে হয় তারা আদিম ও মধ্যযুগ পেরোতে পারেনি।

ভারতের উচ্চাকাঙ্খী নীতির কারণেই সীমান্তে রক্তপাত থামছে না বলেও দাবি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের। তাদের অভিমত, বিএসএফ বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাকে ‘ব্লাডস্পোর্ট’ বা রক্তক্ষয়ী খেলায় পরিণত করেছে। বাংলাদেশের মানুষকে নতজানু রাখার এটি একটি আধিপত্যবাদী বার্তা।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখন তাদের বন্ধুপ্রতীম দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে দিয়ে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক এবং সীমান্তরক্ষীদের প্রাণ সংহার করা হচ্ছে। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ হলেও তাদের নীতি নির্ধারকদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের গভীরতা অর্জিত হয়নি। সেজন্যই বাংলাদেশ সীমান্তে বেআইনি হত্যাকাণ্ডে তারা কোনও দায়বোধ করে না। কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানীর হৃদয়বিদারক লাশের দৃশ্য দেখে বাংলাদেশের মানুষের মনে এখনও ক্ষোভের আগুন জ্বলছে।

নেতারা বলেন, পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সবচেয়ে সহিংস ও রক্তস্নাত। ভারত বারবার প্রতিশ্রতি দিলেও বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দ্বারা বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার ঘটনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিএসএফেরর ‘ডেলিবারেট কিলিং’ এখন সর্বজনবিদিত বলে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলেন, নিয়ন্ত্রণহীন এসব হত্যাকাণ্ডের আশকারা দেওয়া দিল্লির উগ্রতা আর ঢাকার নীরবতা। শেখ হাসিনার দিল্লির সঙ্গে অধীনতামূলক চিরস্থায়ী ‘রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’র ফলশ্রুতি হচ্ছে বিএসএফের সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার ঘটনায় নিশ্চুপ থাকা।