১১:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফের ভাঙনের মুখে জাতীয় পার্টি

আবারও ভাঙনের মুখে জাতীয় পার্টি। তবে পদত্যাগী নেতাদের রওশন এরশাদের নেতৃত্বে দল পুনর্গঠনের ঘোষণার পরোয়া করছেন না দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলছেন, আগেও কয়েকবার এমন চেষ্টা হয়েছে। তাতে মূল জাতীয় পার্টির কোনো ক্ষতি হয়নি। নতুন দল গঠন হলেও স্বাগত জানাবেন তাঁরা।

এরশাদের মৃত্যুর পর জাপা চেয়ারম্যানের পদ ঘিরে প্রকাশ্যে আসে দেবর জি এম কাদের ও ভাবি রওশন এরশাদের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ কোন্দল। যার ফলশ্রুতিতে ’৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ২৫১টি আসন পাওয়া দলটির নেতাকর্মীরাও দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এরপর কয়েক দফায় দেবর ভাবির মধ্যকার বিরোধ তীব্র হতে দেখা যায়। মাঝে রওশনের ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতাকে জি এম কাদের কর্তৃক দল থেকে বহিষ্কার, কাউন্সিল আহ্বান কিংবা রওশন এরশাদকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে স্পিকারের কাছে চিঠি পাঠানোর বিষয়ও প্রকাশ্যে আসে।

গত ৩৭ বছরে পাঁচবার ভাঙনের মুখে পড়েছে জাতীয় পার্টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই নানা অভিযোগে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় দলটির একাংশ। সম্প্রতি দল থেকে পদত্যাগ করেন ৬০০–এর বেশি নেতা–কর্মী। এসব নেতারা দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের নেতৃত্বে কাউন্সিলের ঘোষণা দেন।

এ অবস্থায় দলের মহাসচিবের প্রশ্ন, যে জাতীয় পার্টি কয়েক দিন আগে ঢাকা-১৮ আসনে কেন্দ্রে এজেন্ট দেওয়ারও লোক পায়নি, সেখানে পদত্যাগ করার এত সদস্য এল কোথা থেকে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সক্রিয় কর্মী যে এজেন্ট দেব, সেটি আমরা খুঁজে হয়রান হয়ে গেছি। এখন সেন্টু সাহেবের ৭০০ কর্মী পদত্যাগ করে এই কর্মী আকাশ থেকে আসল কি না—বিষয়টা গবেষণার। আমরা এটা গবেষণা করে দেখব এসব কর্মী কোথা থেকে এল। এত কর্মী আমার দলে আছে এটা জানা ছিল না।’

দল ভাঙনের শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলছেন, রওশন এরশাদের নেতৃত্বে নতুন দল গঠন হলে স্বাগত জানাবে জাতীয় পার্টি। তিনি বলেন, ‘স্যারের (এইচ এম এরশাদ) আদর্শ প্রতিষ্ঠায় তারা একটি দল গঠন করলে স্বাগতম। এতে কোনো সমস্যা নেই। জাতীয় পার্টি থেকে তো এর আগে অনেকেই চলে গেছে তাতে কি আসে যায়। আমি চলে গেলেও জাতীয় পার্টির কোনো ক্ষতি হবে না। জিএম কাদেরের নেতৃত্বে এই দল আছে এবং তাঁর নেতৃত্বে যে দল আছে সেটিই জাতীয় পার্টি।’

এদিকে বর্তমান চেয়াম্যান ও মহাসচিবের ব্যর্থতায় জাতীয় পার্টি আবারও সংকটে পড়েছে দাবি করে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলছেন পদত্যাগী ও বহিষ্কৃত নেতারা।

জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা সুনীল শুভ রায় বলেন, ‘ওনাদের (জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও চেয়ারম্যান) ব্যর্থতাটা আমরা দেখেছি। সেই ব্যর্থতার জন্য ওনাদের পদত্যাগ চেয়েছি। ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে ম্যাডাম এরশাদের (রওশন এরশাদ) যে ডাক আসছে সেই ডাকের প্রতি আমাদের সাড়া দিতে হচ্ছে বা দিচ্ছি। আমরা সানন্দে তাঁর আহ্বানকে আমরা গ্রহণ করছি।’

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ‘সারাদেশে বিভিন্ন জেলায় নেতাকর্মীরা বলির পাঁঠা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিজেরা নেগোশিয়েশন করেছে দুই একজনের মধ্যে। আলাপ-আলোচনা সেভাবে করেনি।’

আবু হোসেন বাবলার অভিযোগ, ‘নমিনেশনের পর তারা সাহায্য করেনি। বিভিন্ন জেলায় নেতারা যারা ডিপ্রাইভড হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের আগে তাদের অর্থ দেয়নি, খোঁজ-খবর নেয়নি কীভাবে নির্বাচন হচ্ছে।’

শিগগিরই দলের আরও একটি বড় অংশ পদত্যাগ করে জাতীয় পার্টি পুনর্গঠনের কাজে যোগ দেবেন বলেও জানান পদত্যাগী ও বহিষ্কৃত নেতারা।

১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টিতে ভাঙন ধরেছে দুবার। এরমধ্যে ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় জাতীয় পার্টি ভেঙে বেরিয়ে যান এরশাদের একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী নাজিউর রহমান মঞ্জুর। পরে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি নামের দল গঠন করেন। এছাড়া ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এরশাদের হাতে গড়া দলটি থেকে বেরিয়ে যান কাজী জাফর।

মওদুদ আহমদের ‘গণতন্ত্র ও উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের রাজনীতি এবং সামরিক শাসন’ বই থেকে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ প্রথমে ‘জনদল’ নামে একটি রাজনৈতিক দলের গোড়াপত্তন ঘটান। ১৯৮৫ সালের শেষের দিকে এরশাদ তার জনদল, বিএনপির একাংশ, ইউপিপি, গণতান্ত্রিক পার্টি ও মুসলিম লীগের সমন্বয়ে গঠন করেন জাতীয় ফ্রন্ট। একপর্যায়ে কাজী জাফর স্বেচ্ছায় ইউপিপি ভেঙে দিয়ে এরশাদের দলে যোগ দেন। ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির আত্মপ্রকাশ ঘটে।

১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে সরকার গঠন করে। ওই সময় জাতীয় পার্টি প্রথমে তাদের সমর্থন দিলেও পরে চারদলীয় জোটে চলে যায়। সেসময়ের যোগাযোগ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এরশাদের ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ‘জাতীয় পার্টি’ নামে নতুন দল গঠন করেন।

২০০১ সালের নির্বাচনের আগে এরশাদের জাতীয় পার্টিতে আরেক দফা ভাঙন ধরে। নাজিউর রহমান মঞ্জু ‘জাতীয় পার্টি’ নামে আরেকটি দল গঠন করেন। পরে তারা বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের অংশ হয়ে নির্বাচনে যায়। বর্তমানে এ অংশের নেতৃত্বে আছেন আন্দালিব রহমান পার্থ।

এক-এগারোর সময় জাতীয় পার্টি দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। পরে অবশ্য দুটি অংশই এরশাদের নেতৃত্বে এক হয়ে যায়। সর্বশেষ এরশাদের জাতীয় পার্টিতে ভাঙন ধরান তার পুরোনো রাজনৈতিক সহকর্মী কাজী জাফর আহমেদ। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে কাজী জাফর এরশাদকে ছেড়ে আলাদা ‘জাতীয় পার্টি’ গঠন করে যোগ দেন বিএনপি জোটে। ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে দলের বিশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন জাতীয় পার্টির ঘোষণা দেন কাজী জাফর। একই সঙ্গে তিনি এরশাদকে বহিষ্কারেরও ঘোষণা দেন।

ফের ভাঙনের মুখে জাতীয় পার্টি

আপডেট : ০৩:২২:৩১ পূর্বাহ্ন, রোববার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪

আবারও ভাঙনের মুখে জাতীয় পার্টি। তবে পদত্যাগী নেতাদের রওশন এরশাদের নেতৃত্বে দল পুনর্গঠনের ঘোষণার পরোয়া করছেন না দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলছেন, আগেও কয়েকবার এমন চেষ্টা হয়েছে। তাতে মূল জাতীয় পার্টির কোনো ক্ষতি হয়নি। নতুন দল গঠন হলেও স্বাগত জানাবেন তাঁরা।

এরশাদের মৃত্যুর পর জাপা চেয়ারম্যানের পদ ঘিরে প্রকাশ্যে আসে দেবর জি এম কাদের ও ভাবি রওশন এরশাদের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ কোন্দল। যার ফলশ্রুতিতে ’৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ২৫১টি আসন পাওয়া দলটির নেতাকর্মীরাও দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এরপর কয়েক দফায় দেবর ভাবির মধ্যকার বিরোধ তীব্র হতে দেখা যায়। মাঝে রওশনের ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতাকে জি এম কাদের কর্তৃক দল থেকে বহিষ্কার, কাউন্সিল আহ্বান কিংবা রওশন এরশাদকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে স্পিকারের কাছে চিঠি পাঠানোর বিষয়ও প্রকাশ্যে আসে।

গত ৩৭ বছরে পাঁচবার ভাঙনের মুখে পড়েছে জাতীয় পার্টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই নানা অভিযোগে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় দলটির একাংশ। সম্প্রতি দল থেকে পদত্যাগ করেন ৬০০–এর বেশি নেতা–কর্মী। এসব নেতারা দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের নেতৃত্বে কাউন্সিলের ঘোষণা দেন।

এ অবস্থায় দলের মহাসচিবের প্রশ্ন, যে জাতীয় পার্টি কয়েক দিন আগে ঢাকা-১৮ আসনে কেন্দ্রে এজেন্ট দেওয়ারও লোক পায়নি, সেখানে পদত্যাগ করার এত সদস্য এল কোথা থেকে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সক্রিয় কর্মী যে এজেন্ট দেব, সেটি আমরা খুঁজে হয়রান হয়ে গেছি। এখন সেন্টু সাহেবের ৭০০ কর্মী পদত্যাগ করে এই কর্মী আকাশ থেকে আসল কি না—বিষয়টা গবেষণার। আমরা এটা গবেষণা করে দেখব এসব কর্মী কোথা থেকে এল। এত কর্মী আমার দলে আছে এটা জানা ছিল না।’

দল ভাঙনের শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলছেন, রওশন এরশাদের নেতৃত্বে নতুন দল গঠন হলে স্বাগত জানাবে জাতীয় পার্টি। তিনি বলেন, ‘স্যারের (এইচ এম এরশাদ) আদর্শ প্রতিষ্ঠায় তারা একটি দল গঠন করলে স্বাগতম। এতে কোনো সমস্যা নেই। জাতীয় পার্টি থেকে তো এর আগে অনেকেই চলে গেছে তাতে কি আসে যায়। আমি চলে গেলেও জাতীয় পার্টির কোনো ক্ষতি হবে না। জিএম কাদেরের নেতৃত্বে এই দল আছে এবং তাঁর নেতৃত্বে যে দল আছে সেটিই জাতীয় পার্টি।’

এদিকে বর্তমান চেয়াম্যান ও মহাসচিবের ব্যর্থতায় জাতীয় পার্টি আবারও সংকটে পড়েছে দাবি করে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলছেন পদত্যাগী ও বহিষ্কৃত নেতারা।

জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা সুনীল শুভ রায় বলেন, ‘ওনাদের (জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও চেয়ারম্যান) ব্যর্থতাটা আমরা দেখেছি। সেই ব্যর্থতার জন্য ওনাদের পদত্যাগ চেয়েছি। ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে ম্যাডাম এরশাদের (রওশন এরশাদ) যে ডাক আসছে সেই ডাকের প্রতি আমাদের সাড়া দিতে হচ্ছে বা দিচ্ছি। আমরা সানন্দে তাঁর আহ্বানকে আমরা গ্রহণ করছি।’

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ‘সারাদেশে বিভিন্ন জেলায় নেতাকর্মীরা বলির পাঁঠা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিজেরা নেগোশিয়েশন করেছে দুই একজনের মধ্যে। আলাপ-আলোচনা সেভাবে করেনি।’

আবু হোসেন বাবলার অভিযোগ, ‘নমিনেশনের পর তারা সাহায্য করেনি। বিভিন্ন জেলায় নেতারা যারা ডিপ্রাইভড হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের আগে তাদের অর্থ দেয়নি, খোঁজ-খবর নেয়নি কীভাবে নির্বাচন হচ্ছে।’

শিগগিরই দলের আরও একটি বড় অংশ পদত্যাগ করে জাতীয় পার্টি পুনর্গঠনের কাজে যোগ দেবেন বলেও জানান পদত্যাগী ও বহিষ্কৃত নেতারা।

১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টিতে ভাঙন ধরেছে দুবার। এরমধ্যে ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় জাতীয় পার্টি ভেঙে বেরিয়ে যান এরশাদের একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী নাজিউর রহমান মঞ্জুর। পরে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি নামের দল গঠন করেন। এছাড়া ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এরশাদের হাতে গড়া দলটি থেকে বেরিয়ে যান কাজী জাফর।

মওদুদ আহমদের ‘গণতন্ত্র ও উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের রাজনীতি এবং সামরিক শাসন’ বই থেকে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ প্রথমে ‘জনদল’ নামে একটি রাজনৈতিক দলের গোড়াপত্তন ঘটান। ১৯৮৫ সালের শেষের দিকে এরশাদ তার জনদল, বিএনপির একাংশ, ইউপিপি, গণতান্ত্রিক পার্টি ও মুসলিম লীগের সমন্বয়ে গঠন করেন জাতীয় ফ্রন্ট। একপর্যায়ে কাজী জাফর স্বেচ্ছায় ইউপিপি ভেঙে দিয়ে এরশাদের দলে যোগ দেন। ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির আত্মপ্রকাশ ঘটে।

১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে সরকার গঠন করে। ওই সময় জাতীয় পার্টি প্রথমে তাদের সমর্থন দিলেও পরে চারদলীয় জোটে চলে যায়। সেসময়ের যোগাযোগ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এরশাদের ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ‘জাতীয় পার্টি’ নামে নতুন দল গঠন করেন।

২০০১ সালের নির্বাচনের আগে এরশাদের জাতীয় পার্টিতে আরেক দফা ভাঙন ধরে। নাজিউর রহমান মঞ্জু ‘জাতীয় পার্টি’ নামে আরেকটি দল গঠন করেন। পরে তারা বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের অংশ হয়ে নির্বাচনে যায়। বর্তমানে এ অংশের নেতৃত্বে আছেন আন্দালিব রহমান পার্থ।

এক-এগারোর সময় জাতীয় পার্টি দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। পরে অবশ্য দুটি অংশই এরশাদের নেতৃত্বে এক হয়ে যায়। সর্বশেষ এরশাদের জাতীয় পার্টিতে ভাঙন ধরান তার পুরোনো রাজনৈতিক সহকর্মী কাজী জাফর আহমেদ। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে কাজী জাফর এরশাদকে ছেড়ে আলাদা ‘জাতীয় পার্টি’ গঠন করে যোগ দেন বিএনপি জোটে। ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে দলের বিশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন জাতীয় পার্টির ঘোষণা দেন কাজী জাফর। একই সঙ্গে তিনি এরশাদকে বহিষ্কারেরও ঘোষণা দেন।