১২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফের নিজেকে জাপা চেয়ারম্যান ঘোষণা করলেন রওশন

জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি দিয়ে নিজেকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করলেন রওশন এরশাদ। মহাসচিব হিসেবে কাজী মামুনুর রশীদের নাম ঘোষণা করেছেন তিনি। নিজেকে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেছেন দলটির প্রধান পৃষ্টপোষক রওশন এরশাদ। রোববার রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রওশন এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টিতে এখন একটি ক্রান্তিকাল বিরাজ করছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বক্তব্য ও বিবৃতি এবং দ্বাদশ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাঁদের ভূমিকা পার্টিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

জাতীয় নির্বাচনে আসন সমঝোতার পরও জনসম্মুখে অস্বীকার করে দেশবাসী এবং পার্টির মধ্যে বিভ্রান্তী সৃষ্টি করে পার্টিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেন রওশন এরশাদ।

নির্বাচনে ২৬টি আসন সমঝোতার পর বাকি আসনের প্রার্থীদের রাজনৈতিকভাবে জনগণের বিরূপ সমালোচনার মুখোমুখী হতে হয়েছে বলে উল্লেখ করেন রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান ও মহাসচিব তাঁদের কোনো খোঁজ–খবর না নেওয়ার ফলে ভোটের মাঠে পার্টি চরমভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন।

‘নির্বাচনে ভরাডুবি হওয়ায় পার্টির নেতা–কর্মীরা তাঁর প্রতিবাদ করার অধিকার রাখেন। এই প্রতিবাদী নেতা কর্মীদের সাথে কোনোরূপ আলোচনা কিংবা সান্ত্বনা প্রদান না করে ক্রমাগত বহিষ্কার ও অব্যাহতির মাধ্যমে পার্টির অস্তিত্ব নষ্ট করা হয়েছে।’

রওশন বলেন, পার্টির অবস্থা সার্বিকভাবে বিবেচনায় গত ২২ জানুয়ারি পার্টির চেয়াম্যান ও মহাসচিবকে দলে ঐক্য ফিরিয়ে এনে সকল বহিষ্কার ও অব্যাহতির আদেশ বাতিল করে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় পার্টি গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা তা আমলে নেননি।

গত ২৫ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ৬৬৮ জন নেতা-কর্মী পার্টি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করায় দলে বিরাট সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন রওশন এরশাদ।

পার্টির এ অবস্থায় সংকট নিরসন, নেতা–কর্মীদের অনুরোধ এবং পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে জিএম কাদের ও মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানান রওশন এরশাদ।

এ ছাড়া নিজেকে পার্টির চেয়ারম্যান এবং পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত কাজী মো. মামুনুর রশিদকে মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তিনি সার্বিকভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে জানানো হয়।

রওশন জানান, পার্টির অন্যান্য পদ পদবী স্ব স্ব অবস্থায় বহাল থাকবে এবং পার্টির যে সকল নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে কিংবা বহিষ্কার করা হয়েছে এবং যাদের পার্টির কমিটির বাইরে রাখা হয়েছিল তাদের পূর্বেকার স্বপদে আবার বহাল করা হবে।

এ ছাড়া শিগগিরই পার্টির জাতীয় সম্মেলন আহ্বান করা হবে বলে জানান রওশন এরশাদ।

গত ৩৭ বছরে পাঁচবার ভাঙনের মুখে পড়েছে জাতীয় পার্টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই নানা অভিযোগে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় দলটির একাংশ। সম্প্রতি দল থেকে পদত্যাগ করেন ৬০০–এর বেশি নেতা–কর্মী। এসব নেতারা দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের নেতৃত্বে কাউন্সিলের ঘোষণা দেন।

তবে দলে ভাঙনের শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে নতুন দল গঠন হলে সেই দলকে তারা স্বাগত জানাবে বলে জানান মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, ‘স্যারের (এইচ এম এরশাদ) আদর্শ প্রতিষ্ঠায় তারা একটি দল গঠন করলে স্বাগতম। এতে কোনো সমস্যা নেই। জাতীয় পার্টি থেকে তো এর আগে অনেকেই চলে গেছে তাতে কি আসে যায়। আমি চলে গেলেও জাতীয় পার্টির কোনো ক্ষতি হবে না। জিএম কাদেরের নেতৃত্বে এই দল আছে এবং তাঁর নেতৃত্বে যে দল আছে সেটিই জাতীয় পার্টি।’

ফের নিজেকে জাপা চেয়ারম্যান ঘোষণা করলেন রওশন

আপডেট : ০৪:৫৯:১৭ অপরাহ্ন, রোববার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪

জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি দিয়ে নিজেকে দলের চেয়ারম্যান ঘোষণা করলেন রওশন এরশাদ। মহাসচিব হিসেবে কাজী মামুনুর রশীদের নাম ঘোষণা করেছেন তিনি। নিজেকে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেছেন দলটির প্রধান পৃষ্টপোষক রওশন এরশাদ। রোববার রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রওশন এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টিতে এখন একটি ক্রান্তিকাল বিরাজ করছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বক্তব্য ও বিবৃতি এবং দ্বাদশ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাঁদের ভূমিকা পার্টিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

জাতীয় নির্বাচনে আসন সমঝোতার পরও জনসম্মুখে অস্বীকার করে দেশবাসী এবং পার্টির মধ্যে বিভ্রান্তী সৃষ্টি করে পার্টিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেন রওশন এরশাদ।

নির্বাচনে ২৬টি আসন সমঝোতার পর বাকি আসনের প্রার্থীদের রাজনৈতিকভাবে জনগণের বিরূপ সমালোচনার মুখোমুখী হতে হয়েছে বলে উল্লেখ করেন রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান ও মহাসচিব তাঁদের কোনো খোঁজ–খবর না নেওয়ার ফলে ভোটের মাঠে পার্টি চরমভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে। প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন।

‘নির্বাচনে ভরাডুবি হওয়ায় পার্টির নেতা–কর্মীরা তাঁর প্রতিবাদ করার অধিকার রাখেন। এই প্রতিবাদী নেতা কর্মীদের সাথে কোনোরূপ আলোচনা কিংবা সান্ত্বনা প্রদান না করে ক্রমাগত বহিষ্কার ও অব্যাহতির মাধ্যমে পার্টির অস্তিত্ব নষ্ট করা হয়েছে।’

রওশন বলেন, পার্টির অবস্থা সার্বিকভাবে বিবেচনায় গত ২২ জানুয়ারি পার্টির চেয়াম্যান ও মহাসচিবকে দলে ঐক্য ফিরিয়ে এনে সকল বহিষ্কার ও অব্যাহতির আদেশ বাতিল করে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় পার্টি গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা তা আমলে নেননি।

গত ২৫ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ৬৬৮ জন নেতা-কর্মী পার্টি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করায় দলে বিরাট সংকট সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন রওশন এরশাদ।

পার্টির এ অবস্থায় সংকট নিরসন, নেতা–কর্মীদের অনুরোধ এবং পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে জিএম কাদের ও মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানান রওশন এরশাদ।

এ ছাড়া নিজেকে পার্টির চেয়ারম্যান এবং পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত কাজী মো. মামুনুর রশিদকে মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তিনি সার্বিকভাবে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে জানানো হয়।

রওশন জানান, পার্টির অন্যান্য পদ পদবী স্ব স্ব অবস্থায় বহাল থাকবে এবং পার্টির যে সকল নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে কিংবা বহিষ্কার করা হয়েছে এবং যাদের পার্টির কমিটির বাইরে রাখা হয়েছিল তাদের পূর্বেকার স্বপদে আবার বহাল করা হবে।

এ ছাড়া শিগগিরই পার্টির জাতীয় সম্মেলন আহ্বান করা হবে বলে জানান রওশন এরশাদ।

গত ৩৭ বছরে পাঁচবার ভাঙনের মুখে পড়েছে জাতীয় পার্টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই নানা অভিযোগে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় দলটির একাংশ। সম্প্রতি দল থেকে পদত্যাগ করেন ৬০০–এর বেশি নেতা–কর্মী। এসব নেতারা দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের নেতৃত্বে কাউন্সিলের ঘোষণা দেন।

তবে দলে ভাঙনের শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে নতুন দল গঠন হলে সেই দলকে তারা স্বাগত জানাবে বলে জানান মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, ‘স্যারের (এইচ এম এরশাদ) আদর্শ প্রতিষ্ঠায় তারা একটি দল গঠন করলে স্বাগতম। এতে কোনো সমস্যা নেই। জাতীয় পার্টি থেকে তো এর আগে অনেকেই চলে গেছে তাতে কি আসে যায়। আমি চলে গেলেও জাতীয় পার্টির কোনো ক্ষতি হবে না। জিএম কাদেরের নেতৃত্বে এই দল আছে এবং তাঁর নেতৃত্বে যে দল আছে সেটিই জাতীয় পার্টি।’