মিয়ানমারে জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহীদের চলমান সংঘাতে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার ও কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলসের সৌজন্য সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মিয়ানমারে দুই পক্ষের সংঘর্ষের প্রভাব এসে পড়েছে বাংলাদেশের বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্ত এলাকায়। মিয়ামানমারে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। তারা বলছেন, সীমান্তের ওপার থেকে ভেসে আসছে ভারি অস্ত্রের গোলাগুলির শব্দ। এরমধ্যে, গত শনিবার ১৩টি মর্টার শেল ও ১টি বুলেট বাংলাদেশের কক্সবাজার সীমান্তে এসে পড়ে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মিয়ানমারে দেশটির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত চলছে। এই সংঘাতের মর্টার শেল যাতে আর আমাদের সীমান্তে এসে না পড়ে এ বিষয়ে নজর রাখছি। আমাদের সীমান্তরক্ষীরা সতর্ক আছেন। মিয়ানমার সরকারের সাথেও এ বিষয়ে আমরা যোগাযোগের মধ্যে রয়েছি।’
বঙ্গবন্ধু হত্যায় ফাঁসিন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে ফিরিয়ে আনতে কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলসের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি নুর চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কানাডায় মৃত্যুদণ্ড নেই, সেটি একটি অসুবিধা বলে আমাকে হাইকমিশনার জানিয়েছেন। আমি দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। হাইকমিশনার বলেছেন, তিনি বিষয়টি তাদের সরকারকে জানাবেন।’
বাংলাদেশ থেকে আরও অভিবাসী নেওয়ার জন্য 'প্রিফারেন্সিয়াল' ব্যবস্থা গ্রহণ বিশেষ করে কৃষিখাতে নেওয়ার জন্য এবং এ দেশের শিক্ষার্থীদেরকে কানাডার স্টুডেন্টস ডিরেক্ট স্কিমের (এসডিএস) অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে হাইকমিশনারের সাথে আলোচনা হয়েছে জানান মন্ত্রী।
এ সময় শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি সাম্প্রতিক মন্তব্যের সমালোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি যথেষ্ট সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে বলছি, তিনি যা বলেছেন তা সঠিক নয়। ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের পাওনা সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে পারেনি, তারা বঞ্চিত হয়েছে। এতে সংক্ষুব্ধ শ্রমিকরাই মামলা করেছে। এ জন্য শ্রম অধিদপ্তরের একটি অনুমোদন লাগে, সেটি তারা নিয়েছে। বিস্তারিত আইনি ব্যাখ্যা আইন মন্ত্রণালয় দেবে।'
ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডেনমার্কের দ্বিতীয় উন্নয়ন অংশীদার বাংলাদেশ। তারা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জলবায়ু ইস্যুতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে ডেনমার্কের সাথে কাজ করছি। আগামীতেও এই বিষয়ে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশের ইকোনমিক জোনগুলোতে ড্যানিশ ইনভেস্টমেন্ট বৃদ্ধির বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।’