১০:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সারাদেশে কিছুটা বেড়েছে তাপমাত্রা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট : ০৭:৫৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৭৪ দেখেছেন

আজও দেশের বিভিন্নস্থানে বয়ে যাচ্ছে শৈত্য প্রবাহ। তবে, দেশের বিভিন্নস্থানে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। শীতের তীব্রতা গত দুই দিন রাজধানী ঢাকায় অনেকটাই কম। সকাল থেকেই মিলছে রোদের দেখা। যে কারণে শীত খুব একটা অনুভূত হচ্ছে না। তবে সারাদেশের পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। দেশের ৩৬ জেলার ওপর দিয়ে এখনো শৈত্যপ্রবাহ বইছে। সবচেয়ে বেশি শীত পড়ছে দেশের উত্তরের জেলাগুলোতে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, একইসঙ্গে সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এতে বলা হয়- মৌলভীবাজার, কুমিল্লা, ফেনী, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, ভোলা, ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে।

রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৫ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলিসিয়াস। যা এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। আর দিনাজপুরে গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে একদিনের ব্যবধানেও দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা আজ দিনাজপুরে রেকর্ড করা হয় ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে হিসেবে আজ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়েছে।

অবশ্য গতকাল দেশের ২৬ জেলায় তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ১০ ডিগ্রির নিচে। আজ সে সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। ২২ জেলায় আজ ১০ ডিগ্রির নিচে ছিল তাপমাত্রা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ সোমবার থেকে সারা দেশের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। আর আগামীকাল মঙ্গলবার শৈত্যপ্রবাহের আওতাধীন জেলার সংখ্যাও অনেকটা কমে আসবে।

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। গতকাল রোববার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল ৫ ডিগ্রিতে।

এদিকে শুক্রবার ৫ দশমিক ৮ তাপমাত্রায় শুরু তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। এরপর থেকেই টানা চারদিন ধরে চলছে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ।

তবে প্রতিদিনের মতো সোমবার সকাল ৯টার দিকে সূর্যের দেখা মেলে। কিন্ত প্রতিদিন বিকেলের পর থেকেই শুরু হয় ঘনকুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমশীতল বাতাস। পরদিন সকাল পর্যন্ত হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হয়। কনকনে শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী আর নিম্ন আয়ের মানুষ।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, শুক্রবার থেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ থেকে ৭ এর মধ্যেই উঠানামা করছে। এখন তীব্র থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। আজ সোমবার সকালে তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়। আগামী দুই–তিন দিনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়তে পারে।

এদিকে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ছয় দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা আরো বেড়েছে। জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন নির্বাহ করা খুবই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তীব্র শীতে চরম বিপাকে শিশু ও বৃদ্ধরা।

কুড়িগ্রামেও শীতে নাকাল কর্মজীবী ও শ্রমজীবী মানুষ। ঠান্ডায় সর্দি-কাশিসহ নানান শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। তীব্র ঠান্ডার মধ্যেই শুরু হয়েছে বোরো আবাদ। শ্রমিকরা দীর্ঘক্ষণ মাঠে থাকতে পারছেন না। ৮ দিন ধরে এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিলছে। সূর্যের কিছুটা উত্তাপ ছড়ালেও বিকেল হতেই তাপমাত্রা আবারও নিম্নগামী হচ্ছে।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকাল ছিল ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা জয়পুরহাট। গত এক সপ্তাহ ধরে এ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ। টানা শৈত্যপ্রবাহে এ জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত।

শীতের এই মৌসুমে গত তিন দিন তাপমাত্রার পারদ ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে এসেছে। এই তিন দিনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকছে রাতে। আর দিনের ঝলমলে রোদ কিছুটা গরম আবহাওয়া দিচ্ছে। তবে বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেই বাড়ছে শীত।

এদিকে, নাটোরে কুয়াশা কমলেও কনকনে শীতের দাপট কমছে না। এ জনপদে সূর্যের দেখা মিললেও অনেকটাই স্থবির জনজীবন। হাড় কাঁপানো শীতে কাজে যেতে হচ্ছে দিনমজুর আর নিম্নআয়ের মানুষকে। সোমবার জয়পুরহাটে রোদের দেখা মিললেও হিমেল হাওয়ায় কাঁপন থামছে না। প্রায় একমাস ধরে আবহাওয়া অপরিবর্তিত থাকায় শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট আর ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে।

এদিকে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে বৃষ্টি হলেও শীতের প্রকোপ আর বাড়বে না।

আজ সোমবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য দেওয়া এক আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে শৈত্যপ্রবাহের আওতা কমেছে। আজ সোমবার ৩৬ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল রোববার ৪৭ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিলো। সামনের কয়েকদিনে শৈত্যপ্রবাহ আরও কমে যাবে।

তবে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও দেশের উত্তরাঞ্চলে এখনও শীতের তীব্রতা রয়েছে। আজ সোমবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল দিনাজপুরে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন চলাচল অস্থায়ীভাবে ব্যাহত হতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

মঙ্গলবার ফরিদপুর অঞ্চলসহ খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আগামী ২ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ৩০ জানুয়ারি ফরিদপুর অঞ্চলসহ খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। কুয়াশার বিষয়ে বলা হয়েছে, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। আর এদিন সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।

৩১ জানুয়ারি বৃষ্টিপাতের ব্যাপারে বলা হয়েছে, খুলনা, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। আর মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। একইসঙ্গে সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

এছাড়া, সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ৬টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সীতাকুণ্ডে ২৮.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা

সারাদেশে কিছুটা বেড়েছে তাপমাত্রা

আপডেট : ০৭:৫৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪

আজও দেশের বিভিন্নস্থানে বয়ে যাচ্ছে শৈত্য প্রবাহ। তবে, দেশের বিভিন্নস্থানে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। শীতের তীব্রতা গত দুই দিন রাজধানী ঢাকায় অনেকটাই কম। সকাল থেকেই মিলছে রোদের দেখা। যে কারণে শীত খুব একটা অনুভূত হচ্ছে না। তবে সারাদেশের পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। দেশের ৩৬ জেলার ওপর দিয়ে এখনো শৈত্যপ্রবাহ বইছে। সবচেয়ে বেশি শীত পড়ছে দেশের উত্তরের জেলাগুলোতে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, একইসঙ্গে সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এতে বলা হয়- মৌলভীবাজার, কুমিল্লা, ফেনী, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, ভোলা, ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে।

রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৫ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলিসিয়াস। যা এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। আর দিনাজপুরে গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে একদিনের ব্যবধানেও দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা আজ দিনাজপুরে রেকর্ড করা হয় ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে হিসেবে আজ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেড়েছে।

অবশ্য গতকাল দেশের ২৬ জেলায় তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ১০ ডিগ্রির নিচে। আজ সে সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। ২২ জেলায় আজ ১০ ডিগ্রির নিচে ছিল তাপমাত্রা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ সোমবার থেকে সারা দেশের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। আর আগামীকাল মঙ্গলবার শৈত্যপ্রবাহের আওতাধীন জেলার সংখ্যাও অনেকটা কমে আসবে।

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। গতকাল রোববার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছিল ৫ ডিগ্রিতে।

এদিকে শুক্রবার ৫ দশমিক ৮ তাপমাত্রায় শুরু তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। এরপর থেকেই টানা চারদিন ধরে চলছে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ।

তবে প্রতিদিনের মতো সোমবার সকাল ৯টার দিকে সূর্যের দেখা মেলে। কিন্ত প্রতিদিন বিকেলের পর থেকেই শুরু হয় ঘনকুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমশীতল বাতাস। পরদিন সকাল পর্যন্ত হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হয়। কনকনে শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী আর নিম্ন আয়ের মানুষ।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, শুক্রবার থেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ থেকে ৭ এর মধ্যেই উঠানামা করছে। এখন তীব্র থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। আজ সোমবার সকালে তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়। আগামী দুই–তিন দিনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়তে পারে।

এদিকে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ছয় দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা আরো বেড়েছে। জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন নির্বাহ করা খুবই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তীব্র শীতে চরম বিপাকে শিশু ও বৃদ্ধরা।

কুড়িগ্রামেও শীতে নাকাল কর্মজীবী ও শ্রমজীবী মানুষ। ঠান্ডায় সর্দি-কাশিসহ নানান শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। তীব্র ঠান্ডার মধ্যেই শুরু হয়েছে বোরো আবাদ। শ্রমিকরা দীর্ঘক্ষণ মাঠে থাকতে পারছেন না। ৮ দিন ধরে এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিলছে। সূর্যের কিছুটা উত্তাপ ছড়ালেও বিকেল হতেই তাপমাত্রা আবারও নিম্নগামী হচ্ছে।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকাল ছিল ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তীব্র থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা জয়পুরহাট। গত এক সপ্তাহ ধরে এ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ। টানা শৈত্যপ্রবাহে এ জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত।

শীতের এই মৌসুমে গত তিন দিন তাপমাত্রার পারদ ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে এসেছে। এই তিন দিনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকছে রাতে। আর দিনের ঝলমলে রোদ কিছুটা গরম আবহাওয়া দিচ্ছে। তবে বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেই বাড়ছে শীত।

এদিকে, নাটোরে কুয়াশা কমলেও কনকনে শীতের দাপট কমছে না। এ জনপদে সূর্যের দেখা মিললেও অনেকটাই স্থবির জনজীবন। হাড় কাঁপানো শীতে কাজে যেতে হচ্ছে দিনমজুর আর নিম্নআয়ের মানুষকে। সোমবার জয়পুরহাটে রোদের দেখা মিললেও হিমেল হাওয়ায় কাঁপন থামছে না। প্রায় একমাস ধরে আবহাওয়া অপরিবর্তিত থাকায় শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট আর ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে।

এদিকে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে বৃষ্টি হলেও শীতের প্রকোপ আর বাড়বে না।

আজ সোমবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য দেওয়া এক আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে শৈত্যপ্রবাহের আওতা কমেছে। আজ সোমবার ৩৬ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল রোববার ৪৭ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছিলো। সামনের কয়েকদিনে শৈত্যপ্রবাহ আরও কমে যাবে।

তবে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও দেশের উত্তরাঞ্চলে এখনও শীতের তীব্রতা রয়েছে। আজ সোমবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল দিনাজপুরে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন চলাচল অস্থায়ীভাবে ব্যাহত হতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

মঙ্গলবার ফরিদপুর অঞ্চলসহ খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

আগামী ২ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ৩০ জানুয়ারি ফরিদপুর অঞ্চলসহ খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। কুয়াশার বিষয়ে বলা হয়েছে, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। আর এদিন সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।

৩১ জানুয়ারি বৃষ্টিপাতের ব্যাপারে বলা হয়েছে, খুলনা, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। আর মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। একইসঙ্গে সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

এছাড়া, সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ৬টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সীতাকুণ্ডে ২৮.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।