ভাষা শহিদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ভাষার মাসের প্রথম দিনে বাংলায় আদেশ দিলেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) শুনানির শুরুতেই বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, আজ ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিন। আজ আমরা বাংলায় দিব সব আদেশ।’
এরপর একের পর এক আদেশ ও রায় বাংলায় দেন হাইকোর্টের এই বেঞ্চ। এসময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’— রক্তে রাঙানো সেই ফেব্রুয়ারি মাস, ভাষা আন্দোলনের মাস শুরু হলো আজ বৃহস্পতিবার। বাংলা ভাষা ও অধিকার আদায়ের মাস। পুরো মাস জুড়ে দেশ-বিদেশের কোটি বাংলাভাষী মানুষ ভালোবাসা জানাবে ভাষা শহীদদের প্রতি।
এদিকে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি শুরুর দিনে থেকে ভাষা শহীদদের স্মরণে শুরু হচ্ছে বাংলা সাহিত্যাঙ্গনের অন্যতম ঐতিহ্য ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সেজেছে স্টল ও প্যাভিলিয়নে। আছে লেখক চত্বর ও মঞ্চ। ৬৩৫ প্রতিষ্ঠানের জন্য ৯৩৭ ইউনিট বরাদ্দ পাওয়া প্রকাশকরাও প্রস্তুত। উচ্ছ্বসিত কবি-সাহিত্যিকরা। তারা অপেক্ষায় আছেন উদ্বোধনের। আজ (১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় বইমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ঢাকার রাজপথে যারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাদের অমলিন স্মৃতি স্মরণের মাস এই ফেব্রুয়ারি। সেদিন রাষ্ট্র ভাষা বাংলার দাবিতে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় বাংলাকে মাতৃভাষার মর্যাদা। তারই পথ ধরে শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন। একাত্তরে নয় মাস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। একুশে ফেব্রুয়ারি পরবর্তীতে জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে, যা পালন করা হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।