মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর তীব্র সংঘাত চলার মাঝেই জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বৃদ্ধি করেছে দেশটির সামরিক শাসকরা। সেইসঙ্গে দেশটির সরকারবিরোধীদের দমনেরও হুমকি দিয়েছেন মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লায়িং।
এক বিবৃতিতে জান্তা সরকার জানিয়েছে, ‘অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট ইউ মিন্ত সোয়ে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানোর ঘোষণা দেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে জান্তাবাহিনীকে সক্ষম করতেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে সংঘাত অনেক বেড়ে গেছে। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে লড়াই-সংঘাতে প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সম্প্রতি সেখানে জাতিগত বিদ্রোহীরা গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন শহর দখল করছে।
এর আগে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জান্তাবাহিনী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে। সেই হিসেবে দেশটিতে সামরিক শাসনের তিন বছর পূর্ণ হয়ে গেছে ৩১ জানুয়ারি। তিন বছর পূর্ণ হওয়ার শেষ দিনে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দেশটিতে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়েছে জান্তা সরকার।
অভ্যুত্থানের ৩ বছরের মাথায় এবারই প্রথম বেকায়দায় পড়েছেন মিয়ানমারের জান্তা প্রধান। জোট গঠন করে বিদ্রোহীদের সমন্বিত আক্রমণ কিছুতেই প্রতিহত করতে পারছে না মিয়ামনারের সামরিক বাহিনী। বরং একটু একটু করে এলাকা বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। গত বছর অক্টোবর থেকে বিদ্রোহী জোট ‘অপারেশন ১০২৭’ নামে সেনাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লায়িং রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এমআরটিভিতে দেওয়া ভাষণে বলেন, দেশে স্থিতিশীলতা ফেরাতে সেনাদের যা দরকার তাই করবে।
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর দাবি, তারা ২০০৮ সালের সংবিধান অনুযায়ী নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তাদের দাবি, এই সংবিধান এখনো কার্যকর আছে। ওই সংবিধানে বলা আছে, জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।