এবারই প্রথম এশিয়ান কাপের সেমিফাইনালে ওঠে জর্ডান। কিন্তু সেখানে যখন প্রতিপক্ষ হয়ে এল দক্ষিণ কোরিয়া, জর্ডানের ইতিহাসের সমাপ্তি এখানেই দেখে ফেলেছিলেন সবাই।
তা-ই দেখার কথা। একে তো দক্ষিণ কোরিয়া শিরোপার অন্যতম দাবিদার, তার ওপর দুই দলের র্যাঙ্কিংয়ে পার্থক্যটা ৬৪ ধাপের - সর্বশেষ র্যাঙ্কিংয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ২৩তম, জর্ডান ৮৭!
কিন্তু এই অসম লড়াইয়েই আজ আরও নতুন ইতিহাস লিখেছে জর্ডান। দ্বিতীয়ার্ধের দুই গোলে সন হিউং মিনের কোরিয়াকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়ান ফুটবল-শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে চলে গেছে জর্ডান! যে মঞ্চে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরানকে নিয়েই সবার মাতামাতি, সেখানে অগোচরে থেকে ইতিহাস লিখে ফেলেছে জর্ডান!
অন্য সেমিফাইনালে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় মুখোমুখি ইরান ও কাতার। সে ম্যাচে জয়ী দলের সঙ্গে আগামী শনিবার ফাইনালে নামবে জর্ডান। সেখানেও নতুন ইতিহাস লেখা হবে? জর্ডানের মানুষ স্বপ্ন দেখতেই পারে!
র্যাঙ্কিংয়ে দুই দলের যা ব্যবধান, তাতে জর্ডান রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলবে বলেই অনুমান ছিল অনেকের। কিন্তু আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে আজ হলো কী? বলের দখল দক্ষিণ কোরিয়ারই ছিল বেশি - ৭০ শতাংশ সময়ে, তবে জর্ডানের ফুটবলকে রক্ষণাত্মক বলার উপায় কী! এভাবে বলা যায়, দুই দিকের বক্সে ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমানের অধীন কোরিয়াকে বিবশ করে রেখেছে জর্ডান।
ম্যাচে জর্ডান শট নিয়েছে ১৭টি, কোরিয়া ৮টি। জর্ডানের শটের ৭টিই ছিল পোস্টমুখী, উল্টোদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার একটা শটও গোলমুখে রাখতে দেয়নি জর্ডান! পুরো ৯০ মিনিট সন, হোয়াং হি চান, ক্যাং-ইন লি, চু গে-সুংদের মতো তারকাদের একটা শটও গোলমুখে থাকেনি, এ কৃতিত্ব জর্ডানকে দিতেই হবে।
৩০ মিনিটে অবশ্য কোরিয়ানদের পক্ষে একটা পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি, কিন্তু ভিএআরে দেখে সিদ্ধান্ত বদলান। প্রথমার্ধ থাকে গোলশূন্য। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে কোরিয়াকে বড় ধাক্কা দেন আ-নাইমাত। ৫৩ মিনিটে তাঁর গোলে এগিয়ে যায় জর্ডান।
১৩ মিনিট পর আবার গোল জর্ডানের। প্রথম গোলের জোগানদাতা আল-তামারি এবার নিজেই গোল করে বসেন! কোরিয়ানরা এরপর হাঁচোড়-পাঁচোড় করেও আর গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। তাতে ইতিহাস লেখা হয়ে গেল জর্ডানের।