প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ সালের পর অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনের মধ্যে এই নির্বাচন সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। নির্বাচনের আগে অনেক চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ছিলো। বিএনপি নানা অপকর্ম করে নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিলো। কিন্তু মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে, তাদের অধিকার প্রয়োগ করেছে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গণভবনে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'নির্বাচনের আগে অনেক চক্রান্ত ছিল। এছাড়া জিয়াউর রহমানের হাতে তৈরি দল জ্বালাও পোড়াও, মানুষকে ধ্বংস করা, রেল লাইনে আগুন দেয়া ও মানুষ পুড়িয়ে মারাসহ নানা রকমের অপকর্ম করে নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিল।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচনে যেভাবে আপনারা কাজ করেছেন সেটা অনেকের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। আপনাদের পদচারণার গণভবনের মাটি ধন্য হয়েছে। সামনে চলার যাত্রাপথ এতো সহজ না। অনেক বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করতে হবে। বাংলাদেশকে ঘিরে অনেক চক্রান্ত আছে।
গোপালগঞ্জ জেলার আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আজ রাজনৈতিক কোনো কারণে ডাকিনি। ভোট দিয়ে কোথায় পাঠালেন সেটা দেখার জন্য দাওয়াত দিয়েছি। কোটালিপাড়া, টুঙ্গিপাড়ার মানুষ এসেছে গণভবন ধন্য হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের সার্বিক উন্নতিই ছিলো জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য। আমার একটাই দায়িত্ব দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। সে কাজ নির্বিঘ্নে করতে পারছি কারণ কোটালিপাড়া, টুঙ্গিপাড়াবাসী আমার দায়িত্ব নিয়েছে। বাবা-মা সব হারিয়েছে। আমার হয়ে বলার কে আছে? কিন্তু আপনারা আমার দায়িত্ব নিয়েছেন। তাই সাহসের সঙ্গে কাজ করছি। পদ্মা সেতু হয়ে গেছে তাই আপনারা সহজেই আসতে পারছেন।
তিনি আরও বলেন, 'ফসল উৎপাদন বাড়াতে হবে। বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, অনেক টাকা দিয়ে আমাদের কিনে আনতে হয়। যারা নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ এটা তাদের জন্য কষ্ট হচ্ছে। আমরা সবাই যদি অনাবাদী জমিগুলো চাষ করি, তাহলে আর খাদ্যের অভাব থাকবে না।'
দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে বলে উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সামনের দিনগুলোতে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। সংকট মোকাবিলায় কৃষি ও শিল্পোৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে কারণে সারা বিশ্বে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আমি জানি দেশে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ একটু কষ্টে আছে। কিন্তু সবাই যদি অনাবাদি জমি চাষ করি তবে খাদ্যের অভাব থাকবে না। বরং উদ্বৃত্ত মানুষকে দিতেও পারবো।
মানুষের কল্যাণে কাজ করছি, এ কাজ আরও করতে হবে। খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। প্রত্যেক জেলায় খাদ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছি। চাকরির পেছনে না ছুটে চাকরি দেবে।
তিনি বলেন, সারা দেশ নিয়ে চিন্তা করতে হবে। দেশের উন্নয়নে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। দেশের চেয়ারম্যান, মেম্বারদের বলবো যে প্রকল্প আর কাজ দেয় সরকার; সেগুলো যেন যথাযথভাবে হয়। মানুষ যেন গালি না দেয়। তারা যেন আস্থা-বিশ্বাস আনতে পারে। এই আস্থা-বিশ্বাস সবচেয়ে দরকার। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই স্থানীয় সরকারে কাজ করবেন, যেন মানুষ সুফল পায়। কাজের মান ঠিক রাখলে মানুষ সুফল পাবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, একটাই আকাঙ্খা শেষ জীবনে টুঙ্গিপাড়া থাকবো। দেশের মানুষের যখন কোনো কল্যাণ করতে পারি, তাদের মুখে হাসি ফোটে; তখন মনে হয় বাবা বেহেশত থেকে দেখবেন।