পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ড। সমুদ্র পর্যটননির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলেছে। জিডিপিতে দেশটির পর্যটন খাতের অবদান ২৩ দশমিক ২ শতাংশ, টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা। সমুদ্র ঘিরেই যার বেশিরভাগ আয়। প্রতি বছর গড়ে সাড়ে ৩ কোটি পর্যটক ভ্রমণে আসেন থাইল্যান্ডে।
দুনিয়াজুড়ে বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করে সমৃদ্ধ হচ্ছে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকতের দেশ বাংলাদেশ। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ঘিরে প্রতিবছর গড়ে পর্যটন বাণিজ্য হচ্ছে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি। আর সারাদেশ মিলিয়ে জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান মাত্র ৩ দশমিক ২ শতাংশ। তবে সরকারি-বেসরকারি খাত মিলিয়ে আগামী ১৫ বছরে এই খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে কয়েকগুণ। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে বা ক্ষুদ্র বিনিয়োগের পরিমাণও বেড়ে চলেছে।
এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাতেও এমন বিনিয়োগের সুযোগ দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন হোটেল ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মেলায় ক্রেতাদের জন্য সুযোগ রাখছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগের, যেখানে মাত্র ৭ থেকে ১০ লাখ টাকায় যে কেউ তারকা মানের হোটেল কক্ষের মালিক হচ্ছেন। আগ্রহীরাও যাচাই-বাছাই করে দেখছেন এসব।
ক্রেতারা বলছেন, ‘এখানে এসে যাচাই-বাছাই করার সুযোগ আছে। সাধ্যের মধ্যে অনেকে পর্যটন হোটেলের কক্ষ পছন্দ করে কিনছেন।’
কর্মকর্তারা বলেন, ‘আমরা ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। অনেকেই আগ্রহী হয়ে বিনিয়োগ করছেন। কেউ কেউ পছন্দমতো এক বা একাধিক কক্ষ কিনছেন।’
এমন ক্ষুদ্র বিনিয়োগের পাশাপাশি দেশে গড়ে উঠেছে এমন কিছু প্রতিষ্ঠান যারা বিনিয়োগ করা সম্পদের পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। এমনই প্রতিষ্ঠানের দুই তরুণ উদ্যোক্তা জানান, সাধারণ চাকুরিজীবীরাও এখন পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করছেন।
ভয়েজ বাংলাদেশ-এর পরিচালক নাইমুল হাসান বলেন, ‘যারা হোটেল বা রিসোর্ট কিনেন তাদের এই প্রতিষ্ঠানগুলো আমরা বিক্রয় কমিশনের মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক পরিচালনা করি।’
আগামী কয়েক দশকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয়কারী খাত হবে পর্যটন। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সন্তোষ কুমার দেব বলেন, ‘বিনিয়োগই পর্যটন খাতের অর্থনীতিকে বড় করে তুলবে। তবে বিনিয়োগের ঝুঁকি নিয়েও সতর্ক থাকতে হবে।’
পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে দেশের অর্থনীতিতে যেমন বহুমুখী আয়ের সুযোগ তৈরি হবে, তেমন বহু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।