Dhaka ০৩:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেঞ্চুরী করে এগিয়ে চলেছে পেঁয়াজের দাম

আবারও অস্থির হয়ে উঠছে পেঁয়াজের বাজার। কয়েকদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ২০ টাকা। গত সপ্তাহে ১০০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকার বেশি। গত মাসের মাঝামাঝি প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। বাজার পরিস্থিতি মোকাবিলায় এরইমধ্যে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।

আজ (শনিবার) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ একেবারেই শেষের দিকে হওয়ায় সরবরাহ কমে গেছে বাজারে। তাই এই দাম বাড়ার প্রবণতা আরও কয়েক দিন থাকবে। এরপর হালি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলে দাম অনেক কমে যাবে।

প্রতি বছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ টন। দেশে পেঁয়াজের উৎপাদনের পরও ১০ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। ভারত পেয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকেই পেয়াজের বাজার অস্থির হয়ে পড়ে। তবে দেশীয় পেয়াজ বাজারে সরবরাহ বাড়ায় দাম ছিল স্থিতিশীল। বর্তমানে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকা ও মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুড়ি কাটা পেঁয়াজের মৌসুম শেষ। বেশিরভাগ এলাকার কৃষকরা ওই পেঁয়াজ তুলে ফেলেছেন। আর হালি পেঁয়াজের ভরপুর মৌসুম শুরু হতে কিছুদিন বাকি রয়েছে। মাঝখানের এ সময়ে চলছে সরবরাহ ঘাটতি। যে কারণে বাজারে দাম বাড়ছে। তবে নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। আর সরবরাহ না থাকাকে মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে দাম নিয়েন্ত্রণে অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি পবিত্র রমজানের আগে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতে সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সীমান্তবর্তী এলাকা বেনাপোলে এক লাফে পেয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০–৪০ টাকা। পেঁয়াজশূন্য হয়ে পড়েছে বাজার। আর এতেই নাভিশ্বাস অবস্থা ক্রেতাদের। নেই কোনো বাজার মনিটরিং। স্থানীয়রা বলছেন, এক শ্রেনীর অসাধু ব্যাবসায়ীদের কারসাজিতে হঠাৎ করেই বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।

বেনাপোল নাভারণ শার্শাসহ স্থানীয় বাজারগুলোতে গতকাল ৭০–৭৫ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হলেও শনিবার সকালে দাম গেছে বেড়ে। প্রতি কেজি দেশি পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০–১১০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ না আসাসহ বাজারে দেশীয় পেয়াজের সরবরাহ ঘটতি থাকায় দাম বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা।

ফলে মোকাম থেকে বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে পেঁয়াজ। সরবরাহ বাড়লে ও আমদানি হলে দাম কমে আসবে বলে জানান বিক্রেতারা। তবে বিক্রেতাদের দাবি বাজার মনিটরিং না করায় বাড়ছে দাম। এতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে। প্রশাসনের নজরদারি চান তারা।

আমদানি না থাকা ও বগুড়ার বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। সাত দিনের ব্যবধানে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।

রাজাবাজার আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক দুলার প্রসাদ বলেন, ‘মজুতদাররা বিভিন্ন জায়গা থেকে পেঁয়াজ কিনে স্টক করে রেখে দাম বাড়াচ্ছে।’

কুষ্টিয়ার বাজারে দুই দিনে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৩০-৪০ টাকা বেড়ে গেছে। এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে। যা গত বৃহস্পতিবার ছিল ৯০ টাকা। হঠাৎ করে এত বেশি দাম বাড়ার ঘটনাকে খুবই অস্বাভাবিক বলছেন ক্রেতারা।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) কুষ্টিয়া পৌর কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। অকারণে ভরা মৌসুমে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ঠেকাতে বাজারে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ভোক্তারা।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ৩ মাসের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার।

সেঞ্চুরী করে এগিয়ে চলেছে পেঁয়াজের দাম

আপডেট : ০২:২৯:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আবারও অস্থির হয়ে উঠছে পেঁয়াজের বাজার। কয়েকদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে অন্তত ২০ টাকা। গত সপ্তাহে ১০০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকার বেশি। গত মাসের মাঝামাঝি প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। বাজার পরিস্থিতি মোকাবিলায় এরইমধ্যে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।

আজ (শনিবার) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ একেবারেই শেষের দিকে হওয়ায় সরবরাহ কমে গেছে বাজারে। তাই এই দাম বাড়ার প্রবণতা আরও কয়েক দিন থাকবে। এরপর হালি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলে দাম অনেক কমে যাবে।

প্রতি বছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ টন। দেশে পেঁয়াজের উৎপাদনের পরও ১০ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। ভারত পেয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকেই পেয়াজের বাজার অস্থির হয়ে পড়ে। তবে দেশীয় পেয়াজ বাজারে সরবরাহ বাড়ায় দাম ছিল স্থিতিশীল। বর্তমানে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকা ও মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়ায় সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুড়ি কাটা পেঁয়াজের মৌসুম শেষ। বেশিরভাগ এলাকার কৃষকরা ওই পেঁয়াজ তুলে ফেলেছেন। আর হালি পেঁয়াজের ভরপুর মৌসুম শুরু হতে কিছুদিন বাকি রয়েছে। মাঝখানের এ সময়ে চলছে সরবরাহ ঘাটতি। যে কারণে বাজারে দাম বাড়ছে। তবে নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। আর সরবরাহ না থাকাকে মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে দাম নিয়েন্ত্রণে অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি পবিত্র রমজানের আগে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতে সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সীমান্তবর্তী এলাকা বেনাপোলে এক লাফে পেয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০–৪০ টাকা। পেঁয়াজশূন্য হয়ে পড়েছে বাজার। আর এতেই নাভিশ্বাস অবস্থা ক্রেতাদের। নেই কোনো বাজার মনিটরিং। স্থানীয়রা বলছেন, এক শ্রেনীর অসাধু ব্যাবসায়ীদের কারসাজিতে হঠাৎ করেই বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।

বেনাপোল নাভারণ শার্শাসহ স্থানীয় বাজারগুলোতে গতকাল ৭০–৭৫ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হলেও শনিবার সকালে দাম গেছে বেড়ে। প্রতি কেজি দেশি পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০–১১০ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজ না আসাসহ বাজারে দেশীয় পেয়াজের সরবরাহ ঘটতি থাকায় দাম বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা।

ফলে মোকাম থেকে বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে পেঁয়াজ। সরবরাহ বাড়লে ও আমদানি হলে দাম কমে আসবে বলে জানান বিক্রেতারা। তবে বিক্রেতাদের দাবি বাজার মনিটরিং না করায় বাড়ছে দাম। এতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে। প্রশাসনের নজরদারি চান তারা।

আমদানি না থাকা ও বগুড়ার বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। সাত দিনের ব্যবধানে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।

রাজাবাজার আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক দুলার প্রসাদ বলেন, ‘মজুতদাররা বিভিন্ন জায়গা থেকে পেঁয়াজ কিনে স্টক করে রেখে দাম বাড়াচ্ছে।’

কুষ্টিয়ার বাজারে দুই দিনে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৩০-৪০ টাকা বেড়ে গেছে। এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে। যা গত বৃহস্পতিবার ছিল ৯০ টাকা। হঠাৎ করে এত বেশি দাম বাড়ার ঘটনাকে খুবই অস্বাভাবিক বলছেন ক্রেতারা।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) কুষ্টিয়া পৌর কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। অকারণে ভরা মৌসুমে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ঠেকাতে বাজারে নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ভোক্তারা।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ৩ মাসের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার।