১১:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানের কয়েকটি কেন্দ্রে আবারও হবে ভোট

শেষ থেকেই যেন নতুন শুরুর দিকে মোড় নিচ্ছে পাকিস্তানের রাজনীতি। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে বেশ কয়েকটি আসনের একাধিক ভোটকেন্দ্রে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার জেড়ে সেই আসনগুলোতে আবারও ভোট গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, বেশ কয়েকটি আসনে নতুন করে আবার ভোট গ্রহণ করা হবে। দেশটির নির্বাচন কমিশন ইসিপি সূত্র জানিয়েছে, ওই কেন্দ্রগুলোতে নতুন করে আগামী ১৫ ফ্রেব্রুয়ারি ভোট নেয়া হবে। এনএ-৮৮, পিএস-১৮ ও পিকে-৯০ আসনের কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে এই পুনর্নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এনএ-৮৮ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ২৬টি ভোটকেন্দ্রের নির্বাচনী সামগ্রীতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর ইসিপি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে পিএস-১৮ এ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যাক্তিরা দুটি ভোটকেন্দ্র থেকে ভোটগ্রহণ সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়েছে। আর পিকে-৯০-তে জঙ্গিরা অন্তত ১৫টি ভোটকেন্দ্রের নির্বাচনী সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত করে।

পুরো দেশজুড়ে প্রায় ৫২টি বুথে এই ভোট নেওয়া হবে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। নির্বাচন শেষ হলেও ক্ষমতার মসনদে কে বসবে তা নিয়ে এখোনো রয়ে গেছে ধোঁয়াশা। এরই মধ্যে দেশটির নির্বাচন কমিশনের এমন ঘোষণা পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন ভাবনার জন্ম দিয়েছে।

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের মোট আসন সংখ্যা ২৬৬টি। এর মাঝে ২৫৬টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন।সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯৩টি আসনে জয়ী হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।

আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৩টি আসনে জয় পেয়েছে। এছাড়া প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টিও ৫৪টি আসনে জয় পেয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বাকিগুলোতে জিতেছে ছোট কিছু দল। মূলত ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) দল হিসাবে বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাদের নির্বাচনী প্রতীকও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আর তাই ইমরানের দলের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

ইমরান খান এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ উভয়ই শুক্রবার বিজয় ঘোষণা করেছেন। এই অবস্থায় কে পরবর্তী সরকার গঠন করবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে। এরই মধ্যে জোট সরকার গঠন নিয়ে নেতারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নওয়াজ ও বিলওয়ালের দল জোট গঠন করলে পিটিআই-এর আবির্ভাব হবে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে।

তবে এখনই হাল ছাড়তে নারাজ ইমারানের অনুসারীরা। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের ফল দেরিতে প্রকাশ করায় আজ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআই। বিভিন্ন রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের বাইরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবে দলটি। পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার গহর আলী খান দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের নির্বাচনী এলাকাগুলোতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের বাইরে এ বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছেন। সামাজিক যোগযোগমাধ্যম এক্সের এক পোস্টে পিটিআই নেতা এই আহবান জানান। আর এর পরপরই বন্ধ করে দেয়া হয় সামাজিক মাধ্যমের মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিষয়টিকে লজ্জাজনক আখ্যা দিয়েছেন পিটিআই নেতারা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের দিন সহিংসতা ছড়িয়ে যেতে পারে এমন আশংকায় মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়।

পাকিস্তানের কয়েকটি কেন্দ্রে আবারও হবে ভোট

আপডেট : ০৭:১১:০২ পূর্বাহ্ন, রোববার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

শেষ থেকেই যেন নতুন শুরুর দিকে মোড় নিচ্ছে পাকিস্তানের রাজনীতি। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে বেশ কয়েকটি আসনের একাধিক ভোটকেন্দ্রে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার জেড়ে সেই আসনগুলোতে আবারও ভোট গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, বেশ কয়েকটি আসনে নতুন করে আবার ভোট গ্রহণ করা হবে। দেশটির নির্বাচন কমিশন ইসিপি সূত্র জানিয়েছে, ওই কেন্দ্রগুলোতে নতুন করে আগামী ১৫ ফ্রেব্রুয়ারি ভোট নেয়া হবে। এনএ-৮৮, পিএস-১৮ ও পিকে-৯০ আসনের কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে এই পুনর্নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এনএ-৮৮ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ২৬টি ভোটকেন্দ্রের নির্বাচনী সামগ্রীতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর ইসিপি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে পিএস-১৮ এ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যাক্তিরা দুটি ভোটকেন্দ্র থেকে ভোটগ্রহণ সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়েছে। আর পিকে-৯০-তে জঙ্গিরা অন্তত ১৫টি ভোটকেন্দ্রের নির্বাচনী সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত করে।

পুরো দেশজুড়ে প্রায় ৫২টি বুথে এই ভোট নেওয়া হবে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। নির্বাচন শেষ হলেও ক্ষমতার মসনদে কে বসবে তা নিয়ে এখোনো রয়ে গেছে ধোঁয়াশা। এরই মধ্যে দেশটির নির্বাচন কমিশনের এমন ঘোষণা পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন ভাবনার জন্ম দিয়েছে।

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের মোট আসন সংখ্যা ২৬৬টি। এর মাঝে ২৫৬টি আসনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন।সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯৩টি আসনে জয়ী হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।

আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৩টি আসনে জয় পেয়েছে। এছাড়া প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টিও ৫৪টি আসনে জয় পেয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বাকিগুলোতে জিতেছে ছোট কিছু দল। মূলত ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) দল হিসাবে বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাদের নির্বাচনী প্রতীকও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। আর তাই ইমরানের দলের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

ইমরান খান এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ উভয়ই শুক্রবার বিজয় ঘোষণা করেছেন। এই অবস্থায় কে পরবর্তী সরকার গঠন করবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে। এরই মধ্যে জোট সরকার গঠন নিয়ে নেতারা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নওয়াজ ও বিলওয়ালের দল জোট গঠন করলে পিটিআই-এর আবির্ভাব হবে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে।

তবে এখনই হাল ছাড়তে নারাজ ইমারানের অনুসারীরা। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের ফল দেরিতে প্রকাশ করায় আজ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআই। বিভিন্ন রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের বাইরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবে দলটি। পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার গহর আলী খান দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের নির্বাচনী এলাকাগুলোতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের বাইরে এ বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছেন। সামাজিক যোগযোগমাধ্যম এক্সের এক পোস্টে পিটিআই নেতা এই আহবান জানান। আর এর পরপরই বন্ধ করে দেয়া হয় সামাজিক মাধ্যমের মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিষয়টিকে লজ্জাজনক আখ্যা দিয়েছেন পিটিআই নেতারা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের দিন সহিংসতা ছড়িয়ে যেতে পারে এমন আশংকায় মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়।