ঢাকা ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নেতৃত্বের পরিবর্তন ছাড়া বিএনপি আর সচল হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৫:২২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৪১২ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বসে যাওয়া পুরাতন গাড়ির মতো বিএনপিকে দেশি-বিদেশি অনেকে ঠেলেও স্টার্ট দিতে পারেনি। এ দলকে আবার চালু করতে হলে ব্যাটারি চেঞ্জ করতে হবে। কিন্তু তাদের অকেজো হয়ে যাওয়া ব্যাটারিও থাকে লন্ডনে। এটি ফেলে না দিলে বিএনপির রাজনীতি আর কখনো স্টার্ট হবে না। দলটিকে অনুরোধ জানাবো, নেতৃত্বের পরিবর্তন ছাড়া আপনাদের এ দল এবং রাজনীতি আর কখনো সচল হবে না।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। প্রয়াত নেতার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণসভার আয়োজন করে বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ।

ড. হাছান বলেন, এখন পর্যন্ত ৭০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তারা কাজ করতে চাই। এর ক’দিন পরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক চিঠি দিয়েছেন অভিনন্দন জানিয়ে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও চিঠি লিখেছেন। ইউরোপিয়ান কমিশনের সবাই অভিনন্দন জানিয়েছেন। এত বার্তা ইতোমধ্যে কখনো আসেনি। গোটা পৃথিবী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এ সরকারের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে তারা। এগুলো দেখে মাথা খারাপ হয়ে বিএনপি ক’দিন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বসেছিল, কি করবে বুঝতে পারেনি।

তিনি বলেন, এবার নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। প্রথমে ছিল নির্বাচন যাতে না হয়। যখন সেটি ঠেকাতে পারেনি, তখন ছিল নির্বাচনের মধ্যে নাশকতা সৃষ্টি করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা। সেটিও যখন করতে পারেনি, তখন পরিকল্পনা ছিল নির্বাচন যাতে দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য না হয়। পুরো পৃথিবী যখন অভিনন্দন জানালো, তখন বিএনপি বললো এখন আমরা লিফলেট বিতরণ করবো। আপনারা সেটাই করেন, ভুলেও পেট্রোল বোমা বিতরণ করতে যাবেন না। এটা যদি করেন উচিত শিক্ষা আপনাদের দেয়া হবে। দলের তরুণ কর্মীদের বলবো, বিএনপির কারা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করার পরিকল্পনা করে, সেটা খুঁজে বের করুন। আমরা তাদের এই কাজ করতে দেবো না।

প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমেদ একজন কর্মী থেকে নেতা হয়ে ওঠা মানুষ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিছিলের পেছনের সারির কর্মী থেকে নেতৃত্বের আসনে আসীন হয়েছিলেন। একজন কর্মী কিভাবে নেতা হতে পারেন সেটির উদাহরণ উনি। আজকের নতুন প্রজন্ম যাদের ৩০ বছর বয়স, তারা জানে না বিরোধী দল কি, সেই দলে থাকলে যন্ত্রণা কি, সেটি অনেকে বুঝতে পারে না। সব প্রতিকূলতাকে উপড়ে ফেলে মোছলেম উদ্দিনের মতো যারা জননেত্রী শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ডকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, আজকে ধীরে ধীরে তাদের অনেকে প্রয়াত হয়েছেন। পঁচাত্তরের পরে দম্ভ করে অনেকেই বলতো আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতায় যাবে না। সেসময় বুকে পাথর বেঁধে জিয়া এরশাদের সব দমন-নিপীড়ন ও রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে নিজের জীবনকে বিপন্ন করে যারা সংগঠনকে গড়ে তুলেছেন, এই চট্টগ্রামে তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মোছলেম উদ্দিন আহমেদ।

ড. হাছান বলেন, মোছলেম উদ্দিন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের সময় যেই সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানেন না। উনি ও আমাদের প্রয়াত আরেক নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী একসঙ্গে যুদ্ধকালীন পাকিস্তানিদের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তারা পাগলের অভিনয় করা শুরু করলেন। তখন পাকিস্তানিরা মনে করলো এরা পাগল। সেজন্য তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছিল। ছাড়া পাওয়ার পর আবার মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেছিলেন।

তিনি বলেন, এখন অনেকেই রেডিমেইড নেতা হতে চায়, অনেকে টাকা দিয়ে রাজনীতি কিনতে চায়, রাতারাতি নেতা বনে যেতে চান, সেজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নয়, টাকা দিয়ে রাজনীতি কেনা যায় বিএনপি-জাতীয় পার্টিতে। অর্থ আর বিত্তকে আমাদের দল মূল্যায়ন করে না, কর্মীর করে।

কর্ণফুলি নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর ডিজাইন এপ্রুভ হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি, ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী এ ডিজাইনে সম্মতি দিয়েছেন। এটি একনেকে গিয়ে এপ্রুভ হলে কাজ শুরু হবে ইনশাল্লাহ। প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও মাইনুদ্দিন খান বাদল কর্ণফুলী সেতুর জন্য অনেক দৌড়াদৌড়ি করেছেন। আমিও তাদের এ কাজে সবসময় সহযোগিতা করেছি। সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা কথা বলেছি। একটু অপেক্ষা করুন এটি হয়ে যাবে।

বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজার সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস ছালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দাশ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুল কাদের সুজন প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

নেতৃত্বের পরিবর্তন ছাড়া বিএনপি আর সচল হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৫:২২:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বসে যাওয়া পুরাতন গাড়ির মতো বিএনপিকে দেশি-বিদেশি অনেকে ঠেলেও স্টার্ট দিতে পারেনি। এ দলকে আবার চালু করতে হলে ব্যাটারি চেঞ্জ করতে হবে। কিন্তু তাদের অকেজো হয়ে যাওয়া ব্যাটারিও থাকে লন্ডনে। এটি ফেলে না দিলে বিএনপির রাজনীতি আর কখনো স্টার্ট হবে না। দলটিকে অনুরোধ জানাবো, নেতৃত্বের পরিবর্তন ছাড়া আপনাদের এ দল এবং রাজনীতি আর কখনো সচল হবে না।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। প্রয়াত নেতার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণসভার আয়োজন করে বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ।

ড. হাছান বলেন, এখন পর্যন্ত ৭০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তারা কাজ করতে চাই। এর ক’দিন পরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক চিঠি দিয়েছেন অভিনন্দন জানিয়ে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও চিঠি লিখেছেন। ইউরোপিয়ান কমিশনের সবাই অভিনন্দন জানিয়েছেন। এত বার্তা ইতোমধ্যে কখনো আসেনি। গোটা পৃথিবী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এ সরকারের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে তারা। এগুলো দেখে মাথা খারাপ হয়ে বিএনপি ক’দিন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বসেছিল, কি করবে বুঝতে পারেনি।

তিনি বলেন, এবার নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। প্রথমে ছিল নির্বাচন যাতে না হয়। যখন সেটি ঠেকাতে পারেনি, তখন ছিল নির্বাচনের মধ্যে নাশকতা সৃষ্টি করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা। সেটিও যখন করতে পারেনি, তখন পরিকল্পনা ছিল নির্বাচন যাতে দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্য না হয়। পুরো পৃথিবী যখন অভিনন্দন জানালো, তখন বিএনপি বললো এখন আমরা লিফলেট বিতরণ করবো। আপনারা সেটাই করেন, ভুলেও পেট্রোল বোমা বিতরণ করতে যাবেন না। এটা যদি করেন উচিত শিক্ষা আপনাদের দেয়া হবে। দলের তরুণ কর্মীদের বলবো, বিএনপির কারা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করার পরিকল্পনা করে, সেটা খুঁজে বের করুন। আমরা তাদের এই কাজ করতে দেবো না।

প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমেদ একজন কর্মী থেকে নেতা হয়ে ওঠা মানুষ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিছিলের পেছনের সারির কর্মী থেকে নেতৃত্বের আসনে আসীন হয়েছিলেন। একজন কর্মী কিভাবে নেতা হতে পারেন সেটির উদাহরণ উনি। আজকের নতুন প্রজন্ম যাদের ৩০ বছর বয়স, তারা জানে না বিরোধী দল কি, সেই দলে থাকলে যন্ত্রণা কি, সেটি অনেকে বুঝতে পারে না। সব প্রতিকূলতাকে উপড়ে ফেলে মোছলেম উদ্দিনের মতো যারা জননেত্রী শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ডকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, আজকে ধীরে ধীরে তাদের অনেকে প্রয়াত হয়েছেন। পঁচাত্তরের পরে দম্ভ করে অনেকেই বলতো আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতায় যাবে না। সেসময় বুকে পাথর বেঁধে জিয়া এরশাদের সব দমন-নিপীড়ন ও রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে নিজের জীবনকে বিপন্ন করে যারা সংগঠনকে গড়ে তুলেছেন, এই চট্টগ্রামে তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মোছলেম উদ্দিন আহমেদ।

ড. হাছান বলেন, মোছলেম উদ্দিন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের সময় যেই সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা নতুন প্রজন্মের অনেকেই জানেন না। উনি ও আমাদের প্রয়াত আরেক নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী একসঙ্গে যুদ্ধকালীন পাকিস্তানিদের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তারা পাগলের অভিনয় করা শুরু করলেন। তখন পাকিস্তানিরা মনে করলো এরা পাগল। সেজন্য তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছিল। ছাড়া পাওয়ার পর আবার মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেছিলেন।

তিনি বলেন, এখন অনেকেই রেডিমেইড নেতা হতে চায়, অনেকে টাকা দিয়ে রাজনীতি কিনতে চায়, রাতারাতি নেতা বনে যেতে চান, সেজন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নয়, টাকা দিয়ে রাজনীতি কেনা যায় বিএনপি-জাতীয় পার্টিতে। অর্থ আর বিত্তকে আমাদের দল মূল্যায়ন করে না, কর্মীর করে।

কর্ণফুলি নদীর ওপর কালুরঘাট সেতুর ডিজাইন এপ্রুভ হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি, ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী এ ডিজাইনে সম্মতি দিয়েছেন। এটি একনেকে গিয়ে এপ্রুভ হলে কাজ শুরু হবে ইনশাল্লাহ। প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও মাইনুদ্দিন খান বাদল কর্ণফুলী সেতুর জন্য অনেক দৌড়াদৌড়ি করেছেন। আমিও তাদের এ কাজে সবসময় সহযোগিতা করেছি। সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা কথা বলেছি। একটু অপেক্ষা করুন এটি হয়ে যাবে।

বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজার সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস ছালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দাশ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আব্দুল কাদের সুজন প্রমুখ।