ঢাকা ১২:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘প্রতিশোধনামা’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৪০০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরোধী ও সমালোচকদের অনেকেরই রহস্যময় মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি এই তালিকায় যুক্ত হলো আরেকটি নাম, অ্যালেক্সাই নাভালনি। শুক্রবার কারাগারে মারা গেছেন এই নেতা। এর আগে গত বছরের আগস্টে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন ওয়াগনারের সাবেক প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, পুতিনের বিরোধিতা করার কারণেই এসব ব্যক্তির ওপর নেমে এসেছে খড়্গ।

গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে এভাবে একের পর এক মৃত্যু হয়েছে পুতিনবিরোধীদের। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম সেন্ট্রাল এফএম বলছে, এদের অনেকের মৃত্যু নিয়ে এখনো রহস্য কাটেনি। কারাবন্দি হয়ে, গুলিতে, বিমান বিধ্বস্ত হয়ে কিংবা বিষপ্রয়োগে মারা গেছেন তাঁরা। পুতিনের নির্দেশেই এসব মৃত্যুর ঘটনা হয়েছে বলে দাবি করে আসছেন পশ্চিমা নেতারা।

রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে বেশির ভাগ সময় পুতিনের সমালোচনা করেছেন নাভালনি। ২০২০ সালে সার্বিয়ায় নাভালনিকে বিষাক্ত রাসায়নিক প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করা হয়। অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য তাঁকে জার্মানি নেওয়া হয়। সেখানে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলে বিমানবন্দরেই গ্রেপ্তার করা হয় নাভালনিকে।

নাভালনির সমর্থকেরা বলে আসছেন, পুতিনের নির্দেশে তাঁকে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল। আর জার্মানির চিকিৎসকেরা তখন জানিয়েছিলেন, নাভালনিকে সোভিয়েত যুগের নার্ভ এজেন্ট নোভিচক দেওয়া হয়। এ কারণে কোমায় যেতে হয়েছিল তাঁকে। যদিও সে যাত্রায় বেঁচে যান।

গত ডিসেম্বরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, অ্যালেক্সাই নাভালনি কারাগার থেকে নিখোঁজ হয়েছেন। ছয়দিন ধরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান তাঁর আইনজীবীরা।

নিজের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছেন এই নেতা। নাভালনি ও তাঁর সমর্থকেরা পুতিন প্রশাসনের তোলা সব অভিযোগ ভুয়া বলে দাবি করে আসছেন। এরই মধ্যে নাভালনি ও তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের চরমপন্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে রুশ প্রশাসন।

শুক্রবার দেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, ইয়ামালো-নেনেটস অঞ্চলের কারাগারে মারা গেছেন নাভালনি। তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনো স্পষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি।

নাভালনির এই মৃত্যু মনে করিয়ে দিচ্ছে প্রিগোজিনকে। গত বছরের জুনে রাশিয়ার প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা দেয় দেশটির ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার। সংস্থাটি জানায়, রুশ নেতৃত্ব পতনের জন্য তারা সব ধ্বংস করে দেবে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার অডিও বার্তাও দেন ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন।

কিন্তু তা আর হয় না। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় সেই বিদ্রোহ থামানো হয়। আর গত আগস্টে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন প্রিগোজিন। ধারণা করা হচ্ছে, গত জুনে অভ্যুত্থানচেষ্টার কারণেই তাঁকে হত্যা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে ক্রেমলিন এই অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে আসছে।

১৯৯০–এর দশকে সেন্ট পিটার্সবার্গে একটি রেস্তোরাঁর ব্যবসা শুরু করেন প্রিগোজিন। এর পর তাঁর পরিচয় হয় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। ক্রেমলিনের বিভিন্ন খাবারের চুক্তি পাওয়ার মাধ্যমে ধনকুবের হয়ে ওঠা প্রগোজিন এক সময় ‘পুতিনের শেফ’ হিসেবে পরিচিত পান।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দনবাসে রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের পর প্রিগোজিন গড়ে তোলেন ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনী। আবির্ভূত হন নির্মম সেনাপতি হিসেবে। ওয়াগনার বাহিনী ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে লড়াই করে। বিশ্বজুড়ে রাশিয়ার স্বার্থের পক্ষে কাজ করেছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওয়াগনার যোদ্ধারা সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, সুদান, লিবিয়া, মোজাম্বিক, ইউক্রেন ও সিরিয়াতে রয়েছে।

২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর ফের আলোচনায় আসেন প্রিগোজিন। পূর্ব ইউক্রেনের সলেদার শহর দখলের রুশ অভিযানের নেতৃত্বে ছিল ওয়াগনার যোদ্ধারা।

গত বছরের জুনে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালিয়েছিলেন প্রিগোজিন। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেটি ব্যর্থ হয়। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় ছিলেন তিনি। তবে মরতে হয়েছে বিমান দুর্ঘটনায়।

এর আগে রুশ সাংবাদিক আনা পলিটকভস্কায়াকে ২০০৬ সালে ৭ অক্টোবর গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি সুপারমার্কেট থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। দুই সন্তানের মা ৪৮ বছর বয়সী পলিটকভস্কায়া রাশিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের বিপদ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

রুশ গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির সাবেক সদস্য পুতিনবিরোধী লিটভিনেঙ্কো ২০০৬ সালে গ্রিন টি খেয়ে মারা যান। যুক্তরাজ্যের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, পুতিনের অনুমতিতেই তাঁর চায়ে বিষ মেশানো হয়েছিল। পরে এ ঘটনার দায় অস্বীকার করে ক্রেমলিন। লিটভিনেঙ্কো রাশিয়া থেকে পালিয়ে ছয় বছর যুক্তরাজ্যে ছিলেন।

রুশ ব্যবসায়ী আলেক্সান্ডার পেরেপিলিচনি সে দেশের একাধিক দুর্নীতি ও মৃত্যুর ঘটনার ব্যাপারে সাক্ষ্য ও তথ্য দিয়েছিলেন। তিনি নিজেও অর্থপাচারের ঘটনায় সন্দেহভাজন ছিলেন। মৃত্যুর কিছুদিন আগে পেরেপিলিচনি রাশিয়া থেকে সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লক্ষ লক্ষ ইউরো স্থানান্তরের এক মামলার ব্যাপারে সুইস কৌঁসুলিদের সহায়তা করছিলেন।

পেরেপিলিচনির মৃতদেহ পাওয়া যায় ২০১২ সালের নভেম্বরে ব্রিটেনের সারে-তে, তাঁর ভাড়া করা বাড়ির কাছে। জগিং করতে বেরিয়ে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন এবং মারা যান তিনি। প্রথম দিকে স্বাভাবিক মৃত্যু মনে হলেও ২০১৭ সালে বিশেষজ্ঞরা আরেক তদন্তের সময় বলেন, হয়তো তাঁকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা বলেন, তাঁরা মৃতের দেহে জেলেসেমিয়াম এলিজেন্স নামের এক ধরনের গাছ থেকে তৈরি বিরল বিষের আভাস পান, যা চীন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় জন্মায়। এ মৃত্যুর ঘটনাতেও দায় স্বীকার করেনি রাশিয়া।

নিউজটি শেয়ার করুন

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘প্রতিশোধনামা’

আপডেট সময় : ০৫:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরোধী ও সমালোচকদের অনেকেরই রহস্যময় মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি এই তালিকায় যুক্ত হলো আরেকটি নাম, অ্যালেক্সাই নাভালনি। শুক্রবার কারাগারে মারা গেছেন এই নেতা। এর আগে গত বছরের আগস্টে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন ওয়াগনারের সাবেক প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, পুতিনের বিরোধিতা করার কারণেই এসব ব্যক্তির ওপর নেমে এসেছে খড়্গ।

গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে এভাবে একের পর এক মৃত্যু হয়েছে পুতিনবিরোধীদের। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম সেন্ট্রাল এফএম বলছে, এদের অনেকের মৃত্যু নিয়ে এখনো রহস্য কাটেনি। কারাবন্দি হয়ে, গুলিতে, বিমান বিধ্বস্ত হয়ে কিংবা বিষপ্রয়োগে মারা গেছেন তাঁরা। পুতিনের নির্দেশেই এসব মৃত্যুর ঘটনা হয়েছে বলে দাবি করে আসছেন পশ্চিমা নেতারা।

রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে বেশির ভাগ সময় পুতিনের সমালোচনা করেছেন নাভালনি। ২০২০ সালে সার্বিয়ায় নাভালনিকে বিষাক্ত রাসায়নিক প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করা হয়। অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য তাঁকে জার্মানি নেওয়া হয়। সেখানে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলে বিমানবন্দরেই গ্রেপ্তার করা হয় নাভালনিকে।

নাভালনির সমর্থকেরা বলে আসছেন, পুতিনের নির্দেশে তাঁকে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছিল। আর জার্মানির চিকিৎসকেরা তখন জানিয়েছিলেন, নাভালনিকে সোভিয়েত যুগের নার্ভ এজেন্ট নোভিচক দেওয়া হয়। এ কারণে কোমায় যেতে হয়েছিল তাঁকে। যদিও সে যাত্রায় বেঁচে যান।

গত ডিসেম্বরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, অ্যালেক্সাই নাভালনি কারাগার থেকে নিখোঁজ হয়েছেন। ছয়দিন ধরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান তাঁর আইনজীবীরা।

নিজের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছেন এই নেতা। নাভালনি ও তাঁর সমর্থকেরা পুতিন প্রশাসনের তোলা সব অভিযোগ ভুয়া বলে দাবি করে আসছেন। এরই মধ্যে নাভালনি ও তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের চরমপন্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে রুশ প্রশাসন।

শুক্রবার দেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, ইয়ামালো-নেনেটস অঞ্চলের কারাগারে মারা গেছেন নাভালনি। তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনো স্পষ্টভাবে কিছু জানা যায়নি।

নাভালনির এই মৃত্যু মনে করিয়ে দিচ্ছে প্রিগোজিনকে। গত বছরের জুনে রাশিয়ার প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা দেয় দেশটির ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার। সংস্থাটি জানায়, রুশ নেতৃত্ব পতনের জন্য তারা সব ধ্বংস করে দেবে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার অডিও বার্তাও দেন ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন।

কিন্তু তা আর হয় না। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় সেই বিদ্রোহ থামানো হয়। আর গত আগস্টে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন প্রিগোজিন। ধারণা করা হচ্ছে, গত জুনে অভ্যুত্থানচেষ্টার কারণেই তাঁকে হত্যা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে ক্রেমলিন এই অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে আসছে।

১৯৯০–এর দশকে সেন্ট পিটার্সবার্গে একটি রেস্তোরাঁর ব্যবসা শুরু করেন প্রিগোজিন। এর পর তাঁর পরিচয় হয় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। ক্রেমলিনের বিভিন্ন খাবারের চুক্তি পাওয়ার মাধ্যমে ধনকুবের হয়ে ওঠা প্রগোজিন এক সময় ‘পুতিনের শেফ’ হিসেবে পরিচিত পান।

২০১৪ সালে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দনবাসে রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের পর প্রিগোজিন গড়ে তোলেন ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনী। আবির্ভূত হন নির্মম সেনাপতি হিসেবে। ওয়াগনার বাহিনী ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে লড়াই করে। বিশ্বজুড়ে রাশিয়ার স্বার্থের পক্ষে কাজ করেছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওয়াগনার যোদ্ধারা সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, সুদান, লিবিয়া, মোজাম্বিক, ইউক্রেন ও সিরিয়াতে রয়েছে।

২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর ফের আলোচনায় আসেন প্রিগোজিন। পূর্ব ইউক্রেনের সলেদার শহর দখলের রুশ অভিযানের নেতৃত্বে ছিল ওয়াগনার যোদ্ধারা।

গত বছরের জুনে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালিয়েছিলেন প্রিগোজিন। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেটি ব্যর্থ হয়। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় ছিলেন তিনি। তবে মরতে হয়েছে বিমান দুর্ঘটনায়।

এর আগে রুশ সাংবাদিক আনা পলিটকভস্কায়াকে ২০০৬ সালে ৭ অক্টোবর গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি সুপারমার্কেট থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। দুই সন্তানের মা ৪৮ বছর বয়সী পলিটকভস্কায়া রাশিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের বিপদ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

রুশ গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির সাবেক সদস্য পুতিনবিরোধী লিটভিনেঙ্কো ২০০৬ সালে গ্রিন টি খেয়ে মারা যান। যুক্তরাজ্যের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, পুতিনের অনুমতিতেই তাঁর চায়ে বিষ মেশানো হয়েছিল। পরে এ ঘটনার দায় অস্বীকার করে ক্রেমলিন। লিটভিনেঙ্কো রাশিয়া থেকে পালিয়ে ছয় বছর যুক্তরাজ্যে ছিলেন।

রুশ ব্যবসায়ী আলেক্সান্ডার পেরেপিলিচনি সে দেশের একাধিক দুর্নীতি ও মৃত্যুর ঘটনার ব্যাপারে সাক্ষ্য ও তথ্য দিয়েছিলেন। তিনি নিজেও অর্থপাচারের ঘটনায় সন্দেহভাজন ছিলেন। মৃত্যুর কিছুদিন আগে পেরেপিলিচনি রাশিয়া থেকে সুইস ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লক্ষ লক্ষ ইউরো স্থানান্তরের এক মামলার ব্যাপারে সুইস কৌঁসুলিদের সহায়তা করছিলেন।

পেরেপিলিচনির মৃতদেহ পাওয়া যায় ২০১২ সালের নভেম্বরে ব্রিটেনের সারে-তে, তাঁর ভাড়া করা বাড়ির কাছে। জগিং করতে বেরিয়ে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন এবং মারা যান তিনি। প্রথম দিকে স্বাভাবিক মৃত্যু মনে হলেও ২০১৭ সালে বিশেষজ্ঞরা আরেক তদন্তের সময় বলেন, হয়তো তাঁকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা বলেন, তাঁরা মৃতের দেহে জেলেসেমিয়াম এলিজেন্স নামের এক ধরনের গাছ থেকে তৈরি বিরল বিষের আভাস পান, যা চীন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় জন্মায়। এ মৃত্যুর ঘটনাতেও দায় স্বীকার করেনি রাশিয়া।