ঢাকা ১০:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত: বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু করেছে দুতাবাস। ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের + ৯৮৯908577368 ও + ৯৮৯১22065745 নম্বরে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) যোগাযোগ করতে বলেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

ফের গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলের বোমা হামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৪৭৩ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চালু থাকা সবচেয়ে বড় হাসপাতালে বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল শুক্রবার এ হামলা হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইসরায়েলি বাহিনীর অবিরাম বোমাবর্ষণ থেকে বাঁচতে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে আশ্রয় নিয়েছিল হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। সেখানেও সম্প্রতি বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে অনেক ফিলিস্তিনি নাসের হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু সেই শেষ আশ্রয়স্থলেও গতকাল শুক্রবার বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি সেনারা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালের রোগী, চিকিৎসক, নার্স ও আশ্রয় নেওয়া সাধারণ মানুষেরা ভীষণ অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন পার করছেন।

এ হামলায় কতজন হতাহত হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে আগের দিন বৃহস্পতিবারে খান ইউনিস শহরের এই নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় পাঁচজন রোগী মারা গেছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নাসের হাসপাতালে হামলার কারণে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকা পাঁচজন রোগী মারা গেছেন। ইসরায়েলি সেনারা এখনো হাসপাতালটি দখল করে রেখেছেন।

ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হাসপাতালগুলোতে হামাসের জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে, তাদের সেখানে অভিযান চালানো হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার হাসপাতাল থেকে ২০ জনেরও বেশি হামাসের জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে ইসরায়েল।

হামাস বলেছে, ইসরায়েলে দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। হাসপাতালে হামাসের কোনো যোদ্ধা থাকে না। তারা হাসপাতালকে ধ্বংস করার জন্যই এসব মিথ্যা অজুহাত দাঁড় করাচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কিদরা বলেন, ‘হাসপাতালে পানি নেই, খাবার নেই। অসহনীয় শীতের মধ্যে গতকাল শুক্রবার দুই অন্তঃসত্ত্বা নারী সন্তান প্রসব করেছেন। ইসরায়েলি বাহিনী জোর করে নারী, শিশু ও প্রসূতি বিভাগ দখল করে নিয়েছে। হাসপাতালটি কার্যত একটি সামরিক এলাকায় পরিণত করেছে তারা।’

এসব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র তারিক জাসারেভিক। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালটির ভেতরে অনেক আহত ও গুরুতর অসুস্থ রোগী রয়েছেন। অথচ সেখানে জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম, ওষুধপত্র ও ত্রাণ পৌছাতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা অন্যায়।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, চলতি সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজার ফিলিস্তিনি এই হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিল।

এদিকে ইসরায়েলে দাবি করেছে, হাসপাতালে তারা অস্ত্র ও গোলাবারুদ খুঁজে পেয়েছে। এ ছাড়া মুক্তি পাওয়া দুই ইসরায়েলি জিম্মি বলেছেন, তাঁদের নাসের হাসপাতালে আটকে রাখা হয়েছিল। তবে হামাস এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এর জেরে গাজায় প্রায় টানা চার মাস ধরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ফের গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলের বোমা হামলা

আপডেট সময় : ০৭:০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চালু থাকা সবচেয়ে বড় হাসপাতালে বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল শুক্রবার এ হামলা হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইসরায়েলি বাহিনীর অবিরাম বোমাবর্ষণ থেকে বাঁচতে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে আশ্রয় নিয়েছিল হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। সেখানেও সম্প্রতি বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে অনেক ফিলিস্তিনি নাসের হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু সেই শেষ আশ্রয়স্থলেও গতকাল শুক্রবার বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি সেনারা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালের রোগী, চিকিৎসক, নার্স ও আশ্রয় নেওয়া সাধারণ মানুষেরা ভীষণ অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন পার করছেন।

এ হামলায় কতজন হতাহত হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে আগের দিন বৃহস্পতিবারে খান ইউনিস শহরের এই নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় পাঁচজন রোগী মারা গেছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নাসের হাসপাতালে হামলার কারণে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকা পাঁচজন রোগী মারা গেছেন। ইসরায়েলি সেনারা এখনো হাসপাতালটি দখল করে রেখেছেন।

ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হাসপাতালগুলোতে হামাসের জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে, তাদের সেখানে অভিযান চালানো হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার হাসপাতাল থেকে ২০ জনেরও বেশি হামাসের জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে ইসরায়েল।

হামাস বলেছে, ইসরায়েলে দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। হাসপাতালে হামাসের কোনো যোদ্ধা থাকে না। তারা হাসপাতালকে ধ্বংস করার জন্যই এসব মিথ্যা অজুহাত দাঁড় করাচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কিদরা বলেন, ‘হাসপাতালে পানি নেই, খাবার নেই। অসহনীয় শীতের মধ্যে গতকাল শুক্রবার দুই অন্তঃসত্ত্বা নারী সন্তান প্রসব করেছেন। ইসরায়েলি বাহিনী জোর করে নারী, শিশু ও প্রসূতি বিভাগ দখল করে নিয়েছে। হাসপাতালটি কার্যত একটি সামরিক এলাকায় পরিণত করেছে তারা।’

এসব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র তারিক জাসারেভিক। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালটির ভেতরে অনেক আহত ও গুরুতর অসুস্থ রোগী রয়েছেন। অথচ সেখানে জীবনরক্ষাকারী সরঞ্জাম, ওষুধপত্র ও ত্রাণ পৌছাতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা অন্যায়।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, চলতি সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজার ফিলিস্তিনি এই হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিল।

এদিকে ইসরায়েলে দাবি করেছে, হাসপাতালে তারা অস্ত্র ও গোলাবারুদ খুঁজে পেয়েছে। এ ছাড়া মুক্তি পাওয়া দুই ইসরায়েলি জিম্মি বলেছেন, তাঁদের নাসের হাসপাতালে আটকে রাখা হয়েছিল। তবে হামাস এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এর জেরে গাজায় প্রায় টানা চার মাস ধরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।