শীতের শেষে প্রকৃতিতে এখন বসন্ত আমেজ চলছে। উত্তরের হিমেল বাতাস ও রাতের ঘন কুয়াশা জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে শীতের বিদায়ী বার্তা। ভোরে কুয়াশার চাঁদরে ঢাকা পড়ে সবুজ ঘাস। অনুভুত হয় হালকা শীত। কুয়াশার দাপট কমে দিনে সূর্য উঁকি দেয়ার গত ক’দিনে বেড়েছে তাপমাত্রা। রাতেও তেমন শীতের অনুভূতি নেই। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী তিন দিনে রাতের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। তবে আগামী পাঁচ দিনে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
কিন্তু হঠাৎই ঘন কুয়াশার চাঁদরে ঢেকে গেছে পঞ্চগড় শহরসহ জেলার বিভিন্নস্থান। পঞ্চগড় হচ্ছে উত্তরের হিমালয়ের পাদদেশের জেলা। এ বছর শীতের শেষভাগে বসন্তের ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে জেলার বিভিন্নস্থান। সড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। কুয়াশা ও শীতের কারণে সাধারণ মানুষসহ রিকশা, ভ্যান শ্রমিকরা কিছুটা হলেও কষ্টের মধ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
জেলার তেঁতুলিয়া ১ম শ্রেণির আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভোরে তাপমাত্রা নেমেছে ১০ ডিগ্রির ঘরে যদিও সূর্যের দেখা মিলেছে। গতকাল একই সময়ে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকাল থেকে তাপমাত্রা কমেছে ৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর রোববার সকালে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকালে প্রতিটি যানবাহনের হেড লাইট জ্বালানো, বিশ গজ দূর থেকেও দেখা যাচ্ছে না রাস্তার ওপর চলতে থাকা ট্রাকের হেড লাইট, চালকরাও দেখতে পাচ্ছেন না দূরের কিছু, ফাঁকা হাইওয়েতে হাইস্পিড যানগুলোতেও রীতিমতো ধীর গতি।
আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এ জেলায় শীতের পরিধি অনেক বেশি। তবে চলমান শীতের অঞ্চলে বিকেল থেকেই শুরু হয় হিমেল বাতাস। বাতাসের ঠান্ডা পরিবেশ চলতে থাকে আর রাতের বেলা কুয়াশায় ঢেকে যায় সবকিছু। ভোর থেকে সকাল দশটা পর্যন্ত কুয়াশা ঘিরে রাখে কয়েক ঘণ্টা।
স্থানীয়রা জানান, দিনের বেলা বেশ গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ১ম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যেবক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেল শাহ্ জানান, সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে সামনের দিকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। গত কয়েকদিন ধরে পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা ৯ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। গত কয়েকদিন ধরে পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা ৯ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। রয়েছে বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার (তিন দিন) পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এই অবস্থায় আগামী দুই দিন অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। পাশাপাশি তৃতীয় দিনে ঝরবে বৃষ্টি। তবে এই তিন দিনে শেষ রাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদ খোন্দকার হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে সোমবার ও মঙ্গলবার সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
তবে মঙ্গলবার সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া আগামী ৫ দিনে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
উল্লেখ্য, রোববার সকালে ঢাকায় পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছিল। এই সময়ে রাজধানীর বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৯ শতাংশ।