এলসি খোলার জন্য রুপিও দুর্লভ, অভিযোগ ব্যবসায়ীদের
- আপডেট সময় : ০৭:৩৭:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ৪১৫ বার পড়া হয়েছে
ডলারের ওপর চাপ কমাতে ভারতের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য করছে বাংলাদেশ। কিন্তু এলসি খোলার জন্য ব্যাংকে রুপিও দুর্লভ, এমন অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
আমদানির ১২ বিলিয়নের বিপরীতে ২ বিলিয়নের সুবিধা পাওয়া যেন সমুদ্রে সুই খোঁজার মতো। বলছি ১১ জুলাই থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রুপিতে আমদানি-রপ্তানির গত সাত মাসের হিসেবের কথা।
একের পর এক এলসির আবেদন প্রত্যাখ্যান হচ্ছে ব্যাংকে। বাধ্য হয়েই ডলারে বিনিয়ম হারে উচ্চ মূল্যের টাকার অবমূল্যায়নের ভার মাথায় নিতে হচ্ছে বেসরকারি খাতের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো।
এফবিসিসিআই-এর সাবেক পরিচালক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম ইন্ডিয়ান কারেন্সি ব্যবহার করলে ফরেন কারেন্সির সংকট কাটবে কিন্তু সেটা আসলে হচ্ছে না।’
বাংলাদেশ ও ভারতের পণ্য বিনিময়ের হার বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানী ব্যয় বাবদ ১ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা পরিশোধ করে ভারতে। তার বিনিময়ে দেশটি থেকে রপ্তানি আয়ে যোগ হয় ১৯৯ কোটি ডলার।
২০২৩ সালের ১১ জুলাইয়ে শুরু হয় নিজেদের মুদ্রায় বিনিময়। হিসেব ছিল, রুপিতে আমদানি করলে ১ টাকা সাশ্রয়ের সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। কিন্তু ২০২৪ সালের জানুয়ারির তিনটি ব্যাংকের নস্ট্র অ্যাকাউন্টের হিসাব বলছে- গত সাত মাসে মোট রুপিতে আমদানি ২ কোটি ১০ লাখ ২৬ হাজার রুপি। অন্যদিকে রপ্তানি ১ কোটি ৭৪ লাখ ১১ হাজার রুপি।
ইস্টার্ন ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংককে রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেনের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে গত সাত মাসে দুটি ব্যাংকের লেনদেনের খাতা শূন্য। অন্যদিকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিদেশি ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড এলসি খুললেও সেটি অনেকটা একতরফাভাবে আমদানি করেছে ৪৮ লাখ ১৪ হাজার রুপির পণ্য, রপ্তানির ঘর শূন্য।
এদিকে ইস্টার্ন ব্যাংক লেনদেনের নিস্পত্তি করেছে আমদানিতে ১১ লাখ ৩০ হাজার ও রপ্তানিতে ১৩ লাখ ১১ হাজার রুপির। বিপরীতে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানির ১ কোটি ৫০ লাখ ও ১ কোটি ৬১ লাখ রুপির বাণিজ্য নিস্পত্তি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ‘মূল বিষয়টি ছিল, আমরা যতটুকু রপ্তানি করবো, ততটুকু আমদানি করবো। সুতরাং এখানে রপ্তানির মূল্যের ওপর নির্ভর করবে আমদানি বাণিজ্য কতটুকু হবে।’
ব্যাংকিং খাত বিশ্লেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সোয়াপ কারেন্সির সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী, তবে তার সফলতা প্রাতিষ্ঠানিক কার্যকারিতার ওপর নির্ভর করবে।
বিআইবিএম-এর অধ্যাপক শাহ মো. আহসান হাবিব বলেন, ‘এখানে পার্টির এগ্রিমেন্টের বিষয় ও ঝুঁকি আছে। যেমন, রুপিতে এক্সপোর্ট করে রুপিতে পেমেন্ট নেয়া হলো। কিন্তু ধরেন, ৭ মাস পরে আমদানির ক্ষেত্রে কী হবে, সেখানেও চ্যালেঞ্জ আছে।
এরই মধ্যে চীন তাদের নিজেদের মুদ্রা ইউয়ানে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও আমদানি-রপ্তানির নিস্পত্তির আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আমদানি নির্ভরতা কমাতে নিজস্ব উৎপাদনের দিকে আরো নজর ও আর্থিক বাজারে সুশাসন ফেরানোর দিকে নজর দেয়ার পরামর্শ আর্থিক খাত সংশ্লিষ্টদের।