মার্চে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র ছিল এখনও আছে: প্রধানমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০৭:৪৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ৪৩০ বার পড়া হয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মার্চে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র ছিল এখনও আছে। মানুষের ভোটের অধিকার আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে ফিরিয়ে এনেছি। নির্বাচন বানচালের অনেক ষড়যন্ত্র ছিল। নির্বাচন আটকাতে পারবে না বুঝতে পেরে জিনিসের দাম বাড়ানোর চক্রান্ত করেছে। দ্রব্যমূল্যে বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার উৎখাতের যারা আন্দোলন করে তাদেরও হাত আছে।
জার্মানি সফরের বিষয়ে আজ (শুক্রবার) সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান শেখ হাসিনা। ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখ শহরে অনুষ্ঠিত হয় ৬০তম মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স। সে বিষয়েই আজকের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ১৫ বছর আগে ভাতের জন্য হাহাকার ছিল। ভিক্ষুকরা তখন ভাতের ফেন চাইতো। এখন তা নেই। দেশের আকার নয় বরং নীতির শক্তিতেই রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক মুক্তি, বিশ্বের দরবারে এই বার্তা তুলে ধরেছি। বন্ধুপ্রতিম দেশের সাথে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। উন্মোচিত হয়েছে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, নির্বাচনের বিষয়ে কেউ প্রশ্ন করেনি। তারা জানতো আমি জিতে আসবো। সফরকালীন সময়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশে এসে বিনিয়োগ করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ব্যক্তির উপর কৃষকদের নির্ভরশীল না থাকার উদ্যোগ নিচ্ছি আমরা। প্রথমবার সরকারে আসার পর কৃষি গবেষণার উপর গুরুত্ব দেয়ায় বর্তমানে প্রায় সবক্ষেত্রে আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রত্যেকটা সবজি এখন বারো মাস পাওয়া যায়।
এ সময় প্রত্যেকের জমিতে চাষ করার জন্য উৎসাহিত করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কৃষিতে ৪৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি যুদ্ধ চাই না। যুদ্ধকালীন যে কষ্ট আমরা তো ভুক্তভোগী। ফিলিস্তিনিতে যা হচ্ছে তা মানবতাবিরোধী। বিশ্বনেতারা দুমুখো নীতিতে বিশ্বাসী। আমার ক্ষমতায় থাকা না থাকার কোনো বিষয় নেই। আমার হারানোর কিছু নেই। থাকলে মানুষের সেবা করবো।
তিনি বলেন, যুদ্ধের ক্ষতিকর দিক একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকছে না। তার প্রভাব আমাদের উপরও পড়ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমরা সবচেয়ে বেশি ভালো আছি। আমি আমার ক্ষমতা সম্পর্কে যথেষ্ট জানি। মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কোনো প্লাটফর্ম তৈরির পরিকল্পনা নেই। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। এগুলো পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার জন্য হচ্ছে। যুদ্ধ কিভাবে বন্ধ করা যায় সেই প্রশ্ন করেছি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা হলেও একি কথা জানতে চাইবো।
শেখ হাসিনা বলেন, মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেস হওয়াতে অনেক যানজট কমে গেছে। একটা দল আছে তাদের কিছুই ভালো লাগে না। মেট্রোরেল হবার আগেও টিভির টকশোতে অনেক আলোচনা হয়েছে। ট্রাফিক লাইট সচল করার জন্য আইজিপিকে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, রমজানে কোনো জিনিসের অভাব হবে না। ইতিমধ্যে সব ব্যবস্থা করা আছে। রমজানে সাধারণত মানুষ কম খায়, আর আমাদের খাওয়া বেড়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে বিশ্বনেতারা সবাই সহানুভূতি দেখায়, কিন্তু তাদের ফিরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে কার্যকর কিছু হচ্ছে না।
শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে একটা দেশের উন্নয়ন হয়। আগামী পাঁচ বছর উন্নয়নশীল দেশ হবার জন্য আমরা কাজ করে যাবো। এছাড়া বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলের অভাব। আওয়ামী লীগের সাথে মাটি ও মানুষের সম্পর্ক। গণতান্ত্রিক ধারাটা আমরা স্থায়ী করেছি। যার ফল মানুষ পাচ্ছে। প্রতিপক্ষ জ্বালাও পোড়াও করে যাচ্ছে। রাজনীতি যদি ক্ষমতা দখলের জন্য হয় তাহলে মানুষ কিছু পাবে না।
প্রধানমন্ত্রী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০২৪-এ যোগ দিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি জার্মানি যান। তিনি দেশে ফিরে আসেন ১৯ ফেব্রুয়ারি। মিউনিখে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দেয়া ছাড়াও বিশ্বনেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।