০১:৪২ পূর্বাহ্ন, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমার কাছে ক্ষমতা হলো— থাকে লক্ষ্মী যায় বালাই

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার আর চাওয়া-পাওয়ার কিছুই নেই। আমার কাছে ক্ষমতা হলো থাকে লক্ষ্মী যায় বালাই প্রবাদের মতো। আমার কোনো চিন্তা নেই। ক্ষমতায় থাকলে ভালো যে, আমি দেশের জন্য কাজ করতে পারছি। আর না থাকলেও আমার কোনো আফসোস নেই।

জার্মানি সফরের বিষয়ে আজ (শুক্রবার) সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান শেখ হাসিনা। ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখ শহরে অনুষ্ঠিত হয় ৬০তম মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স। সে বিষয়েই আজকের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার লক্ষ্য ছিল— ২০২১ সাল পর্যন্ত থাকতে হবে, বাংলাদেশকে একটা ধাপ ওপরে তুলতে হবে, আমি সেটা করে দিয়েছি। এখন আমার একমাত্র নির্ভরতা হলো আমার দেশের জনগণ। সবসময় চেয়েছি জনগণের সহযোগিতা ও সমর্থন নিয়ে কাজ করার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউরোপিয়ান দেশগুলোর সাথে আমাদের ভালো একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। ফ্রান্স আমাদের এক বিলিয়ন ইউরো দেবে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য। এখন আমরা যেসব প্রজেক্ট করব, সেগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যেন হয়, তাহলে আমরা এসব অর্থায়ন কাজে লাগাতে পারব।

পাকিস্তানের নির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, একটি দেশে নির্বাচনের রেজাল্ট ডিক্লেয়ার করতে ১২/১৪ দিন সময় লাগলেও তাদের ইলেকশন ফ্রি-ফেয়ার। আর বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সাথে সাথে মাত্র ২৪/৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রেজাল্ট এসে গেল, সেটি ফ্রি-ফেয়ার না? সুতরাং এই রোগের কোনো ওষুধ আমাদের হাতে নেই।

তিনি আরও বলেন, দেশটিতে (পাকিস্তান) এখনতো বোধহয় একটা সমঝোতায় এসেছে কে প্রেসিডেন্ট হবে, কে কী হবে। এ রকম যদি আমাদের দেশে হতো, তাহলে বোধহয় সমালোচনাকারীরা খুশি হতো।

শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধের ক্ষতিকর দিক একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকছে না। তার প্রভাব আমাদের উপরও পড়ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমরা সবচেয়ে বেশি ভালো আছি। আমি আমার ক্ষমতা সম্পর্কে যথেষ্ট জানি। মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কোনো প্লাটফর্ম তৈরির পরিকল্পনা নেই। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। এগুলো পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার জন্য হচ্ছে। যুদ্ধ কিভাবে বন্ধ করা যায় সেই প্রশ্ন করেছি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা হলেও একি কথা জানতে চাইবো।

ফিলিস্তিন যুদ্ধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সবসময় স্পষ্ট করে বলি আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা শান্তি চাই। কারণ যুদ্ধকালীন যে কষ্ট, আমরা তার ভুক্তভোগী। আমি নিজেই একজন ভুক্তভোগী। আমার দেশের মানুষ যেভাবে গণহত্যার শিকার হয়েছে, আমরা তা দেখেছি।

মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে বড় শক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং আঞ্চলিক সংঘাত, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, নিউক্লিয়ার নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু নিরাপত্তা, তথ্য নিরাপত্তা, পানি নিরাপত্তা, অভিবাসন, সাপ্লাই চেইন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মহামারি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে মূলত রাষ্ট্র/সরকার প্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিও নেতারা, মিডিয়া, সুশীলসমাজ, সরকারি এবং বেসরকারি খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ করেন। এটি সমকালীন ও ভবিষ্যত নিরাপত্তার স্বার্থে উচ্চ-পর্যায়ের নিয়মিত আলোচনার একটি শীর্ষস্থানীয় ফোরাম হিসেবে বিবেচিত। এ বছরের ফোরামে ৩৫-জনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান অংশগ্রহণ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০২৪-এ যোগ দিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি জার্মানি যান। তিনি দেশে ফিরে আসেন ১৯ ফেব্রুয়ারি। মিউনিখে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দেয়া ছাড়াও বিশ্বনেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।

আমার কাছে ক্ষমতা হলো— থাকে লক্ষ্মী যায় বালাই

আপডেট : ০৭:৪৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার আর চাওয়া-পাওয়ার কিছুই নেই। আমার কাছে ক্ষমতা হলো থাকে লক্ষ্মী যায় বালাই প্রবাদের মতো। আমার কোনো চিন্তা নেই। ক্ষমতায় থাকলে ভালো যে, আমি দেশের জন্য কাজ করতে পারছি। আর না থাকলেও আমার কোনো আফসোস নেই।

জার্মানি সফরের বিষয়ে আজ (শুক্রবার) সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান শেখ হাসিনা। ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখ শহরে অনুষ্ঠিত হয় ৬০তম মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স। সে বিষয়েই আজকের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার লক্ষ্য ছিল— ২০২১ সাল পর্যন্ত থাকতে হবে, বাংলাদেশকে একটা ধাপ ওপরে তুলতে হবে, আমি সেটা করে দিয়েছি। এখন আমার একমাত্র নির্ভরতা হলো আমার দেশের জনগণ। সবসময় চেয়েছি জনগণের সহযোগিতা ও সমর্থন নিয়ে কাজ করার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউরোপিয়ান দেশগুলোর সাথে আমাদের ভালো একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। ফ্রান্স আমাদের এক বিলিয়ন ইউরো দেবে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য। এখন আমরা যেসব প্রজেক্ট করব, সেগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যেন হয়, তাহলে আমরা এসব অর্থায়ন কাজে লাগাতে পারব।

পাকিস্তানের নির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, একটি দেশে নির্বাচনের রেজাল্ট ডিক্লেয়ার করতে ১২/১৪ দিন সময় লাগলেও তাদের ইলেকশন ফ্রি-ফেয়ার। আর বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সাথে সাথে মাত্র ২৪/৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রেজাল্ট এসে গেল, সেটি ফ্রি-ফেয়ার না? সুতরাং এই রোগের কোনো ওষুধ আমাদের হাতে নেই।

তিনি আরও বলেন, দেশটিতে (পাকিস্তান) এখনতো বোধহয় একটা সমঝোতায় এসেছে কে প্রেসিডেন্ট হবে, কে কী হবে। এ রকম যদি আমাদের দেশে হতো, তাহলে বোধহয় সমালোচনাকারীরা খুশি হতো।

শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধের ক্ষতিকর দিক একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকছে না। তার প্রভাব আমাদের উপরও পড়ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমরা সবচেয়ে বেশি ভালো আছি। আমি আমার ক্ষমতা সম্পর্কে যথেষ্ট জানি। মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কোনো প্লাটফর্ম তৈরির পরিকল্পনা নেই। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। এগুলো পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার জন্য হচ্ছে। যুদ্ধ কিভাবে বন্ধ করা যায় সেই প্রশ্ন করেছি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা হলেও একি কথা জানতে চাইবো।

ফিলিস্তিন যুদ্ধ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সবসময় স্পষ্ট করে বলি আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা শান্তি চাই। কারণ যুদ্ধকালীন যে কষ্ট, আমরা তার ভুক্তভোগী। আমি নিজেই একজন ভুক্তভোগী। আমার দেশের মানুষ যেভাবে গণহত্যার শিকার হয়েছে, আমরা তা দেখেছি।

মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে বড় শক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং আঞ্চলিক সংঘাত, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, নিউক্লিয়ার নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু নিরাপত্তা, তথ্য নিরাপত্তা, পানি নিরাপত্তা, অভিবাসন, সাপ্লাই চেইন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মহামারি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে মূলত রাষ্ট্র/সরকার প্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিও নেতারা, মিডিয়া, সুশীলসমাজ, সরকারি এবং বেসরকারি খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ করেন। এটি সমকালীন ও ভবিষ্যত নিরাপত্তার স্বার্থে উচ্চ-পর্যায়ের নিয়মিত আলোচনার একটি শীর্ষস্থানীয় ফোরাম হিসেবে বিবেচিত। এ বছরের ফোরামে ৩৫-জনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান অংশগ্রহণ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০২৪-এ যোগ দিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি জার্মানি যান। তিনি দেশে ফিরে আসেন ১৯ ফেব্রুয়ারি। মিউনিখে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দেয়া ছাড়াও বিশ্বনেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।