০২:২৩ পূর্বাহ্ন, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সবকিছুর দাম বাড়তে থাকলে আমরা চলব কী করে?

কিছুদিন আগে সবজির ভরা মৌসুমেও দাম ছিল চড়া। সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে সবজির দাম। রোজা না আসতেই বাজারে উত্তাপ ছড়াচ্ছে মুরগির দাম। আর পবিত্র শবে বরাতকে সামনে রেখে বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। এছাড়া বাজারে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। তবে, আগের মতোই চড়া দাম দেখা গেছে মাছের বাজারে। কয়েক দফায় দাম বৃদ্ধির পরেও এখনো বেড়েই চলছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। ক্রেতারা বলছেন, এভাবে সবকিছুর দাম বাড়তে থাকলে আমরা চলব কী করে?

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন দেখা গেছে চিত্র। সকাল থেকে রাজধানীতে মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে অন্য শুক্রবারের তুলনায় বাজারে ক্রেতার উপস্থিতিও কিছুটা কম লক্ষ্য করা গেছে।

মোহাম্মদপুর স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব ধরনের মুরগির মাংসের দামই ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩১০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ২৯০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। দামের এই ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, মুরগির দাম বেশ কয়েকদিন ধরেই বেড়েছে। কেনা দাম বেশি পড়ায় বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে বাজারে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। ভোটের আগে প্রতি কেজির গরুর মাংস ৬০০ টাকা পর্যন্ত নামলেও ভোটের পরে তা ৭০০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। কিন্তু গত এক সপ্তাহে দাম আরও বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়।

গরুর মাংসের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা বলেন, রোজা ও কোরবানিকে সামনে রেখে খামারিরা গরু বিক্রি কমিয়েছে। সে জন্য বাজারে সরবরাহ কম, দাম বাড়ছে।

চাকরিজীবী আব্দুল আজিজ বলেন, রোজা না আসতেই মুরগির দাম বেড়ে গেছে। সবকিছুর দামেই ঊর্ধ্বগতি। এভাবে যদি সবকিছুর দাম বাড়তে থাকে, তাহলে আমরা চলব কীভাবে?

স্থানীয় ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, গরুর মাংসের দাম বেশি বিধায় সাধারণ ক্রেতারা মুরগিই কিনে থাকে। এখন সেটাও বেড়ে যাচ্ছে রোজার আগেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন প্রতিটি সবজির কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। তবে গ্রীষ্মকালীন সবজিগুলো ১০০ টাকার নিচে কিনতে পারছেন না ভোক্তারা।

বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, বাঁধা কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, ব্রকলি ৫০ টাকা পিস, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ টাকা, খিরাই ৬০ থেকে ৮০ টাকা এবং গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে আলু কেজিতে ৫ টাকা কমে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যদি এসব বাজারে বগুড়ার লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে।

শুক্রবার এসব বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ১০০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ১৪০ টাকা, ঢেঁড়স ১২০ টাকা, বরবটি ১৪০ টাকায়, শসা ১০০ টাকা, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ধুন্দুল ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, পটল ১৪০ টাকা এবং সাজনা ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে লেবুর হালি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধনে পাতা কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, জালি কুমড়া ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁয়াজের ফুলকলি ৫০ টাকা ও কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বাজারগুলোতে লাল শাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, মূলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, কলমি শাক ১০টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

সালাউদ্দিন আহমেদ নামে এক ক্রেতা বলেন, বিক্রেতারা যেভাবে বলছেন সবজির দাম ১০-১৫ টাকা করে কমেছে আদতে তা ঠিক নয়। কয়েকটা সবজির ক্ষেত্রে ৫-৭ টাকা কম আছে গত সপ্তাহের তুলনায়।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষে একই পেঁয়াজ ১৩০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের দাম নিয়ে কথা হয় পেঁয়াজ বিক্রেতা মোশারফ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা দুইদিন আগের ১০০ টাকায় কেনা পেঁয়াজ ১১০ টাকায় বিক্রি করছি। সেই পেঁয়াজ আজ সকালে ১০৯ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে। ফলে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমাদের কিছুই করার নেই। বাড়তি দামে কিনলে বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

এদিকে, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে তেল ও চিনি। খোলা বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারের এ দোটানা সিদ্ধান্তের পর খোলা বাজারে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে চিনি বিক্রি করছেন কিছু ব্যবসায়ী।

চিনি ব্যবসায়ী বশার মিয়া বলেন, গতকাল যে চিনির দাম ওঠা-নামা করেছে তাতে বাজারে তেমন একটা প্রভাব পড়েনি। আমরা ১৪৫ টাকা করে চিনি বিক্রি করছি। তবে প্রথম দিকে ১৫০ টাকা করে দাম চেয়ে ১৪৫ করে দিয়ে দিচ্ছি। কেউ বেশি নিলে ১৪০ টাকায়ও দিচ্ছি।

বাজার করতে আসা আলী আহাদ বলেন, সব জিনিসের যে দাম… তেল-চিনি-পেঁয়াজ কিছুই তো নাগালের মধ্যে নেই। ৪০ টাকার পেঁয়াজ এখন ১৩০ টাকা। মানে কেজিপ্রতি বেড়েছে ১০০ টাকার মতো। এভাবে কীভাবে মানুষ ভালো থাকবে? আমাদের শুধু মেনে নিতে হচ্ছে। ১৩০ টাকার পেঁয়াজকেই এখন সহনশীল করে নিতে হচ্ছে। তেল-চিনিরও একই অবস্থা।

অন্যদিকে নিউমার্কেটের বনলতা মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি বড় রুই মাছ ৪০০-৪৫০ টাকা, মাঝারি রুই মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, ছোট কাতলা মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, বড় কাতলা মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা, বড় পাঙ্গাশ মাছ ২৮০-৩০০ টাকা, আকার ভেদে ইলিশ মাছ ৭০০-১২০০ টাকা, সিলভারকার্ব মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৫০০-৭০০ টাকা, কালিবাউশ ফালি মাছ ৪৫০ টাকা, আইড় মাছ ৬০০ টাকা, বড় কৈ মাছ ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৮৫০ টাকা কেজি দরে দাম চাওয়া হচ্ছে।

এছাড়াও ছোট মাছের মধ্যে চিংড়ি ৩০০ টাকা, কাচকি মাছ ৪৫০ টাকা, মলা মাছ ৩০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি আকারভেদে ৬৫০-৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

রইসুল ইসলাম নামের এক মাছ বিক্রেতা বলেন, ঢাকা শহরে বাজার ভেদে বিভিন্ন জায়গায় একেক রকম দামে মাছ বিক্রি হচ্ছে। তবে সবমিলিয়ে দামের পার্থক্য মোটামুটি কাছাকাছিই থাকে। মাছের দাম গত সপ্তাহে যেমন ছিল এবারও তেমনই আছে। খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি।

কিন্তু জহিরুল ইসলাম রাসেল নামে এক ক্রেতার দাবি, সব ধরনের মাছে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। কিছু কিছু মাছে সেটা আরও বেশি বেড়েছে।

সবকিছুর দাম বাড়তে থাকলে আমরা চলব কী করে?

আপডেট : ০৭:১৪:১৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

কিছুদিন আগে সবজির ভরা মৌসুমেও দাম ছিল চড়া। সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে সবজির দাম। রোজা না আসতেই বাজারে উত্তাপ ছড়াচ্ছে মুরগির দাম। আর পবিত্র শবে বরাতকে সামনে রেখে বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। এছাড়া বাজারে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। তবে, আগের মতোই চড়া দাম দেখা গেছে মাছের বাজারে। কয়েক দফায় দাম বৃদ্ধির পরেও এখনো বেড়েই চলছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। ক্রেতারা বলছেন, এভাবে সবকিছুর দাম বাড়তে থাকলে আমরা চলব কী করে?

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন দেখা গেছে চিত্র। সকাল থেকে রাজধানীতে মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে অন্য শুক্রবারের তুলনায় বাজারে ক্রেতার উপস্থিতিও কিছুটা কম লক্ষ্য করা গেছে।

মোহাম্মদপুর স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব ধরনের মুরগির মাংসের দামই ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩১০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ২৯০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। দামের এই ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, মুরগির দাম বেশ কয়েকদিন ধরেই বেড়েছে। কেনা দাম বেশি পড়ায় বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এদিকে বাজারে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। ভোটের আগে প্রতি কেজির গরুর মাংস ৬০০ টাকা পর্যন্ত নামলেও ভোটের পরে তা ৭০০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। কিন্তু গত এক সপ্তাহে দাম আরও বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়।

গরুর মাংসের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা বলেন, রোজা ও কোরবানিকে সামনে রেখে খামারিরা গরু বিক্রি কমিয়েছে। সে জন্য বাজারে সরবরাহ কম, দাম বাড়ছে।

চাকরিজীবী আব্দুল আজিজ বলেন, রোজা না আসতেই মুরগির দাম বেড়ে গেছে। সবকিছুর দামেই ঊর্ধ্বগতি। এভাবে যদি সবকিছুর দাম বাড়তে থাকে, তাহলে আমরা চলব কীভাবে?

স্থানীয় ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, গরুর মাংসের দাম বেশি বিধায় সাধারণ ক্রেতারা মুরগিই কিনে থাকে। এখন সেটাও বেড়ে যাচ্ছে রোজার আগেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন প্রতিটি সবজির কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। তবে গ্রীষ্মকালীন সবজিগুলো ১০০ টাকার নিচে কিনতে পারছেন না ভোক্তারা।

বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, বাঁধা কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস, ব্রকলি ৫০ টাকা পিস, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ টাকা, খিরাই ৬০ থেকে ৮০ টাকা এবং গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে আলু কেজিতে ৫ টাকা কমে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যদি এসব বাজারে বগুড়ার লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে।

শুক্রবার এসব বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ১০০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ১৪০ টাকা, ঢেঁড়স ১২০ টাকা, বরবটি ১৪০ টাকায়, শসা ১০০ টাকা, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ধুন্দুল ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, পটল ১৪০ টাকা এবং সাজনা ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে লেবুর হালি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধনে পাতা কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, জালি কুমড়া ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁয়াজের ফুলকলি ৫০ টাকা ও কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া বাজারগুলোতে লাল শাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৪০ টাকা, মূলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, কলমি শাক ১০টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

সালাউদ্দিন আহমেদ নামে এক ক্রেতা বলেন, বিক্রেতারা যেভাবে বলছেন সবজির দাম ১০-১৫ টাকা করে কমেছে আদতে তা ঠিক নয়। কয়েকটা সবজির ক্ষেত্রে ৫-৭ টাকা কম আছে গত সপ্তাহের তুলনায়।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষে একই পেঁয়াজ ১৩০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজের দাম নিয়ে কথা হয় পেঁয়াজ বিক্রেতা মোশারফ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা দুইদিন আগের ১০০ টাকায় কেনা পেঁয়াজ ১১০ টাকায় বিক্রি করছি। সেই পেঁয়াজ আজ সকালে ১০৯ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে। ফলে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমাদের কিছুই করার নেই। বাড়তি দামে কিনলে বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

এদিকে, আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে তেল ও চিনি। খোলা বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরকারের এ দোটানা সিদ্ধান্তের পর খোলা বাজারে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা কেজিতে চিনি বিক্রি করছেন কিছু ব্যবসায়ী।

চিনি ব্যবসায়ী বশার মিয়া বলেন, গতকাল যে চিনির দাম ওঠা-নামা করেছে তাতে বাজারে তেমন একটা প্রভাব পড়েনি। আমরা ১৪৫ টাকা করে চিনি বিক্রি করছি। তবে প্রথম দিকে ১৫০ টাকা করে দাম চেয়ে ১৪৫ করে দিয়ে দিচ্ছি। কেউ বেশি নিলে ১৪০ টাকায়ও দিচ্ছি।

বাজার করতে আসা আলী আহাদ বলেন, সব জিনিসের যে দাম… তেল-চিনি-পেঁয়াজ কিছুই তো নাগালের মধ্যে নেই। ৪০ টাকার পেঁয়াজ এখন ১৩০ টাকা। মানে কেজিপ্রতি বেড়েছে ১০০ টাকার মতো। এভাবে কীভাবে মানুষ ভালো থাকবে? আমাদের শুধু মেনে নিতে হচ্ছে। ১৩০ টাকার পেঁয়াজকেই এখন সহনশীল করে নিতে হচ্ছে। তেল-চিনিরও একই অবস্থা।

অন্যদিকে নিউমার্কেটের বনলতা মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি বড় রুই মাছ ৪০০-৪৫০ টাকা, মাঝারি রুই মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, ছোট কাতলা মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, বড় কাতলা মাছ ৪৫০-৫০০ টাকা, বড় পাঙ্গাশ মাছ ২৮০-৩০০ টাকা, আকার ভেদে ইলিশ মাছ ৭০০-১২০০ টাকা, সিলভারকার্ব মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৫০০-৭০০ টাকা, কালিবাউশ ফালি মাছ ৪৫০ টাকা, আইড় মাছ ৬০০ টাকা, বড় কৈ মাছ ৬০০ টাকা, শিং মাছ ৮৫০ টাকা কেজি দরে দাম চাওয়া হচ্ছে।

এছাড়াও ছোট মাছের মধ্যে চিংড়ি ৩০০ টাকা, কাচকি মাছ ৪৫০ টাকা, মলা মাছ ৩০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি আকারভেদে ৬৫০-৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

রইসুল ইসলাম নামের এক মাছ বিক্রেতা বলেন, ঢাকা শহরে বাজার ভেদে বিভিন্ন জায়গায় একেক রকম দামে মাছ বিক্রি হচ্ছে। তবে সবমিলিয়ে দামের পার্থক্য মোটামুটি কাছাকাছিই থাকে। মাছের দাম গত সপ্তাহে যেমন ছিল এবারও তেমনই আছে। খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি।

কিন্তু জহিরুল ইসলাম রাসেল নামে এক ক্রেতার দাবি, সব ধরনের মাছে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। কিছু কিছু মাছে সেটা আরও বেশি বেড়েছে।