০৫:২৬ পূর্বাহ্ন, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাজারের নিয়ন্ত্রকরাই সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে : রিজভী

‘বাজারের নিয়ন্ত্রকরাই এখন সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে’ দাবি করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সরকার ও মুনাফাখোর বাজার সিন্ডিকেট এখন একাকার। এদের দুইয়ের অশুভ আঁতাত দেশের মানুষকে নিঃস্ব করে ফেলছে।’

আজ শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন রিজভী।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লুটেরা সিন্ডিকেট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় এখন বাজারের ওপর নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রতিদিন মানুষের পকেট থেকে তারা শত শত কোটি টাকা বাড়তি হাতিয়ে নিচ্ছে। মানুষের এখন জান বাঁচানো দায়। ডামি সরকার লোক দেখানো হাঁকডাক দিলেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। বাজারের নিয়ন্ত্রকরাই এখন সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিটি পণ্যের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এ অবস্থায় নিম্ন আয়ের শুধু নয়, মধ্যবিত্তরাও চরমভাবে অসহায় হয়ে পড়েছেন।’

রিজভী বলেন, ‘পূর্ব নির্ধারিত ফলাফলের নির্বাচনি প্রহসনের মাধ্যমে একদলীয় রাজ্যাভিষেকের পর নতুন করে দেশের নিত্যপণ্যের বাজার, জ্বালানি, ব্যাংক, অর্থনীতি, আইন-আদালত, শাসন-প্রশাসন, বিচার-আচার, টাকা-পয়সা, ব্যবসা-বাণিজ্য সর্বত্রই চলছে বেপরোয়া অরাজকতা ও নিয়ন্ত্রণহীন বিশৃঙ্খলা। সরকার ও মুনাফাখোর বাজার সিন্ডিকেট এখন একাকার। এদের দুইয়ের অশুভ আঁতাত দেশের মানুষকে নিঃস্ব করে ফেলছে।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, “গতকাল গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সরকার উৎখাতে আন্দোলনকারীদেরও কিছু কারসাজি আছে।’ তার (শেখ হাসিনা) এ ধরনের কথা বলার অর্থ—তার স্বেচ্ছাতন্ত্র পচে-গলে বিকৃত হয়ে গেছে। এসব বক্তব্য বিকারগ্রস্ত মনেরই বহিঃপ্রকাশ। এ কারণে হাস্যকর মিথ্যাচার করছেন। তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন দ্রব্যমূল্য বেড়েছে সীমাহীন। নিজেদের ব্যর্থতা, লুটপাট-চুরি করে সেই অপকর্মের দায় নির্লজ্জের মতো বিএনপির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার অভ্যাস তাদের পুরনো। বিএনপি যদি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে, তবে বিএনপির শীর্ষ নেতারাসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে বন্দি কেন? এরপরেও বিএনপি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করছে? সরকারপ্রধান হয়ে যখন অসাধু ব্যবসায়ীদের কন্ট্রোল করতে পারছেন না, তখন অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে ব্যর্থতার দায় বিএনপির ওপর চাপানোর অপপ্রচার চালাচ্ছেন আপনি।’

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছেন, ‘ভাতের জন্য হাহাকার ছিল। একটু নুন-ভাত, একটু ফেন চাইত।’ শেখ হাসিনা অসংখ্য মিথ্যা কথা বলেন, কিন্তু তার এই কথাটা সত্য। গত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার বিনাভোটের সরকারের দুর্নীতি, দুঃশাসন, টাকাপাচার, আর আওয়ামী বাজার সিন্ডিকেটের কারণে দেশে আবারও ১৯৭৪ এর অবস্থা বিরাজমান। দেশে এখন নীরব দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পেটের ক্ষুধার জ্বালায় শুরু হয়েছে মা তার সন্তান বিক্রি করার হিড়িক। ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের পূর্বে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির আন্তর্জাতিক চক্রান্ত চলছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন। গতকালও এ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলে তিনি আশঙ্কা উড়িয়ে দেননি, বরং ষড়যন্ত্র চলছে বলে জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘যারা সরকার উৎখাতের আন্দোলন করছে তারা এর জন্য দায়ী, এখানে তাদেরও কিছু কারসাজি আছে।’ ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের পর আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পুনরায় নতুন পৈশাচিকতায় আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য সেটিরই আলামত। এহেন বক্তব্য কাণ্ডজ্ঞানহীন, সুপরিকল্পিত ও মনোরোগের বর্ধিত প্রকাশ।’

বাজারের নিয়ন্ত্রকরাই সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে : রিজভী

আপডেট : ০৯:৪৫:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

‘বাজারের নিয়ন্ত্রকরাই এখন সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে’ দাবি করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সরকার ও মুনাফাখোর বাজার সিন্ডিকেট এখন একাকার। এদের দুইয়ের অশুভ আঁতাত দেশের মানুষকে নিঃস্ব করে ফেলছে।’

আজ শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন রিজভী।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লুটেরা সিন্ডিকেট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় এখন বাজারের ওপর নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রতিদিন মানুষের পকেট থেকে তারা শত শত কোটি টাকা বাড়তি হাতিয়ে নিচ্ছে। মানুষের এখন জান বাঁচানো দায়। ডামি সরকার লোক দেখানো হাঁকডাক দিলেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। বাজারের নিয়ন্ত্রকরাই এখন সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিটি পণ্যের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এ অবস্থায় নিম্ন আয়ের শুধু নয়, মধ্যবিত্তরাও চরমভাবে অসহায় হয়ে পড়েছেন।’

রিজভী বলেন, ‘পূর্ব নির্ধারিত ফলাফলের নির্বাচনি প্রহসনের মাধ্যমে একদলীয় রাজ্যাভিষেকের পর নতুন করে দেশের নিত্যপণ্যের বাজার, জ্বালানি, ব্যাংক, অর্থনীতি, আইন-আদালত, শাসন-প্রশাসন, বিচার-আচার, টাকা-পয়সা, ব্যবসা-বাণিজ্য সর্বত্রই চলছে বেপরোয়া অরাজকতা ও নিয়ন্ত্রণহীন বিশৃঙ্খলা। সরকার ও মুনাফাখোর বাজার সিন্ডিকেট এখন একাকার। এদের দুইয়ের অশুভ আঁতাত দেশের মানুষকে নিঃস্ব করে ফেলছে।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, “গতকাল গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সরকার উৎখাতে আন্দোলনকারীদেরও কিছু কারসাজি আছে।’ তার (শেখ হাসিনা) এ ধরনের কথা বলার অর্থ—তার স্বেচ্ছাতন্ত্র পচে-গলে বিকৃত হয়ে গেছে। এসব বক্তব্য বিকারগ্রস্ত মনেরই বহিঃপ্রকাশ। এ কারণে হাস্যকর মিথ্যাচার করছেন। তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন দ্রব্যমূল্য বেড়েছে সীমাহীন। নিজেদের ব্যর্থতা, লুটপাট-চুরি করে সেই অপকর্মের দায় নির্লজ্জের মতো বিএনপির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার অভ্যাস তাদের পুরনো। বিএনপি যদি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে, তবে বিএনপির শীর্ষ নেতারাসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারে বন্দি কেন? এরপরেও বিএনপি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করছে? সরকারপ্রধান হয়ে যখন অসাধু ব্যবসায়ীদের কন্ট্রোল করতে পারছেন না, তখন অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে ব্যর্থতার দায় বিএনপির ওপর চাপানোর অপপ্রচার চালাচ্ছেন আপনি।’

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী গতকাল বলেছেন, ‘ভাতের জন্য হাহাকার ছিল। একটু নুন-ভাত, একটু ফেন চাইত।’ শেখ হাসিনা অসংখ্য মিথ্যা কথা বলেন, কিন্তু তার এই কথাটা সত্য। গত ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার বিনাভোটের সরকারের দুর্নীতি, দুঃশাসন, টাকাপাচার, আর আওয়ামী বাজার সিন্ডিকেটের কারণে দেশে আবারও ১৯৭৪ এর অবস্থা বিরাজমান। দেশে এখন নীরব দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পেটের ক্ষুধার জ্বালায় শুরু হয়েছে মা তার সন্তান বিক্রি করার হিড়িক। ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের পূর্বে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির আন্তর্জাতিক চক্রান্ত চলছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন। গতকালও এ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলে তিনি আশঙ্কা উড়িয়ে দেননি, বরং ষড়যন্ত্র চলছে বলে জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘যারা সরকার উৎখাতের আন্দোলন করছে তারা এর জন্য দায়ী, এখানে তাদেরও কিছু কারসাজি আছে।’ ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের পর আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পুনরায় নতুন পৈশাচিকতায় আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য সেটিরই আলামত। এহেন বক্তব্য কাণ্ডজ্ঞানহীন, সুপরিকল্পিত ও মনোরোগের বর্ধিত প্রকাশ।’